একটি বড় পদক্ষেপ হল ইন্ট্রুশন ডিটেকশন সিস্টেম (আইডিএস) স্থাপন করা, যা ডিস্ট্রিবিউটেড অ্যাকোস্টিক সিস্টেম (ডিএএস) নীতি ব্যবহার করা একটি উন্নত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-ভিত্তিক প্রযুক্তি। এই সিস্টেমটি রেললাইনের কাছাকাছি হাতির চলাচল শনাক্ত করে এবং তাৎক্ষণিকভাবে লোকো পাইলট ও কন্ট্রোল রুমকে রিয়েল-টাইম সতর্কতা প্রদান করে, যার ফলে সময়মতো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় এবং কর্মক্ষম নিরাপত্তা উন্নত হয়।
advertisement
আইডিএস সিস্টেমটি উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের সেই সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ সেকশনে ইতিমধ্যেই সফলভাবে চালু করা হয়েছে যেখানে রেলপথ হাতির করিডোর দিয়ে যায়। বর্তমানে, সিস্টেমটি চারটি গুরুত্বপূর্ণ ডিভিশনে কাজ করছে: রঙিয়া ডিভিশনের অধীনে ২৪ কিমি কামাখ্যা-আজারা-মির্জা সেকশন, আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের অধীনে ৫২ কিমি মাদারিহাট-নাগরাকাটা সেকশন, লামডিং ডিভিশনের অধীনে ৩২ কিমিঃ হাওয়াইপুর-লামসাখাং-পাথরখোলা-লামডিং সেকশন এবং তিনসুকীয়া ডিভিশনের অধীনে ২৩ কিমিঃ তিতাবর-মরিয়ানি-নকাছারি সেকশন। সর্বমোট, এই ইন্টলেশন মোট ৬২.৭ কিলোমিটার হাতির করিডোর এবং ১৩১ কিলোমিটার ব্লক সেকশনকে অন্তর্ভুক্ত করেছে, যার ফলে বন্যপ্রাণী অধ্যুষিত সংবেদনশীল এলাকাগুলিতে সুরক্ষা উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হয়েছে।
এছাড়াও, উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে ট্রেন ও হাতির মধ্যে সংঘর্ষ কমাতে উদ্ভাবনী প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। অনিরাপদ লেভেল ক্রসিং গেটগুলোতে স্থাপন করা ‘প্ল্যান বি’ সিস্টেমে মৌমাছির জোরাল শব্দ ব্যবহার করা হয়, যা ৪০০ মিটার দূর পর্যন্ত শোনা যায়। এর মাধ্যমে হাতিদের রেললাইনের কাছে আসা থেকে বিরত রাখা হয়। বন বিভাগের সহযোগিতায়, উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে হাতি চলাচলের রিয়েল-টাইম তথ্য আদান-প্রদান করে, হাতির করিডোরে রাতে গতিবেগ নিয়ন্ত্রণ করে, হাতি দেখার সঙ্গে সঙ্গে সাময়িক গতিবেগ কমিয়ে, ট্রেনের ক্রুদের সতর্ক করে, সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড স্থাপন করে এবং দৃশ্যমানতা বৃদ্ধির জন্য গাছপালা কেটে সুরক্ষা বাড়ানো হয়েছে।
জাতীয় পর্যায়ে ভারতীয় রেলওয়ে রেললাইনের কাছাকাছি হাতি এবং অন্য বন্যপ্রাণীদের শনাক্ত করার জন্য ডিস্ট্রিবিউটেড অ্যাকোস্টিক সিস্টেম (ডিএএস) প্রযুক্তি ব্যবহার করে একটি এই ইন্ট্রুশন ডিটেকশন সিস্টেম (আইডিএস) স্থাপন করে বন্যপ্রাণী সুরক্ষা মজবুত করেছে। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়েতে সফলতাপূর্বস পাইলট প্রোজেক্টের পর এই সিস্টেমটি এখন দেশের অন্যান্য অংশেও সম্প্রসারিত করা হচ্ছে। এই সম্প্রসারণের ফলে অতিরিক্ত ৯৮১ রুট কিলোমিটার এলাকা এর আওতায় আসবে, যার ফলে ভারতীয় রেলওয়ের মোট কভারেজ ১,১২২ রুট কিলোমিটার হয়ে যাবে, যা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও সুরক্ষিত ট্রেন চলাচলের প্রতি তাঁর অঙ্গীকারকে আরও মজবুত করবে।
