গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাঁর পছন্দের প্রার্থীদের দল টিকিট দেয়নি বলে ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন হুমায়ুন কবীর৷ দলের নিষেধ অগ্রাহ্য করেই একাধিক আসনে নির্দল প্রার্থী দেন তিনি৷ হুমায়ুনের সঙ্গে একই পথে হেঁটেছিলেন জেলার আরও কয়েকজিন বিধায়ক৷ পরে অবশ্য মুর্শিদাবাদে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারে যোগ দেন তিনি৷
কিন্তু হুমায়ুুনের উপরে অসন্তুষ্ট ছিল দলের শীর্ষ নেতৃত্ব৷ এ দিন দুপুরে শো কজ লেটার পৌঁছয় হুমায়ুনের বাড়িতে৷ সাত দিনের মধ্যে সেই িচঠির জবাব দিতে বলা হয়েছে৷ তৃণমূল রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি তখনও ওই পদে ছিলেন৷
advertisement
আরও পড়ুন: কেমন আছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য? জানিয়ে গেলেন সিপিআইএম নেতা রবিন দেব
চিঠি পেয়েই অবশ্য পাল্টা বিস্ফোরণ ঘটান হুমায়ুন৷ এর আগে ২০১৫ সালেও তাঁকে বহিষ্কার করেছিল তৃণমূল৷ সেই প্রসঙ্গ তুলে এবার রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে হুমায়ুন বলেন,’আগের মতোই যদি চক্রান্তকারীদের কথায় যদি আমাকে বহিষ্কার করে তখন আমাকে অন্য কিছুই ভাবতে হবে৷ মুর্শিদাবাদের বহু কর্মী আগে তৃণমূল কংগ্রেস জিন্দাবাদ বলত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ বলত৷ কিন্তু আজকের তৃণমূলে তাঁদের কোনও গুরুত্ব নেই৷ মুর্শিদাবাদ জেলায় আমার ব্যক্তিগত অনুগামী তিরিশ শতাংশ৷ বিধায়ক হতে পারি না পারি আমি অন্যায়টাকে অন্যায় বলব৷’
তিনি যে প্রয়োজনে নতুন দল গড়তেও তৈরি, তাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন ভরতপুরের বিধায়ক৷ হুমায়ুন বলেন, ‘যদি তৃণমূল বিধায়ক হিসেবে আমার ভোটে লড়ার অধিকার কেড়ে নেয়, তাহলে আগামী বছর লোকসভা নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পর ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে আমি পশ্চিমবঙ্গ ব্যাপী একটি নতুন রাজনৈিতক দল গড়ে তুলব৷ যখনই মানুষের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যায় তখন শেষ ঝাঁকুনি দেয়৷ যাঁরা চক্রান্তকারী তাঁদের জয়জয়কার, তাঁরা যেটা বলছে তাদের কথাই নেতৃত্ব শুনছে।’ যদিও এর পাল্টা তৃণমূলের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি৷
হুমায়ুন কবীরকে নিয়ে অতীতেও অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে তৃণমূলকে৷ নিজের অনুগামীদের নিয়ে থানায় চড়াও হওয়া, দলের নেতাদেরই হঁশিয়ারি দেওয়ার ঘটনা ঘটিয়েছেন তিনি৷ এবার সরাসরি তাঁকে শো কজ করে হুমায়ুনকে তৃণমূল নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে কি না, সেটাই দেখার৷
ইতিমধ্যেই দলের আর এক সংখ্যালঘু বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরীর সঙ্গে তৃণমূল নেতৃত্বের সংঘাত চরমে পৌঁছেছে৷ হুমায়ুনের ক্ষেত্রে তাই তৃণমূল শেষ পর্যন্ত কতটা কঠোর হয়, সেটাই এখন দেখার৷ কারণ মুর্শিদাবাদ জেলা সংখ্যালঘু অধ্যুষিত। সেখানে ভোট বিভাজন হলে তা তৃণমূলেরই বিপক্ষে যাবে৷