মাধব দাস, বীরভূম : ২ এপ্রিল অর্থাৎ উচ্চ মাধ্যমিক শুরু হওয়ার প্রথম দিনেই আমরা প্রথম দেখিয়েছিলাম বীরভূমের সিউড়ি এক নম্বর ব্লকের অন্তর্গত কড়িধ্যা গ্রাম পঞ্চায়েতের কালিপুর গ্রামের কড়িধ্যা যদুরায় মেমোরিয়াল এন্ড পাবলিক ইনস্টিটিউশনের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী দেবাশীষ দাসের অদম্য লড়াই। এই পরীক্ষার্থীর বাবা-মা না থাকা এবং দিদার বয়স বেড়ে যাওয়ার কারণে লকডাউন সময় কাল থেকে সে মাছ বিক্রির পেশায় নামে। তবে স্কুলের সহযোগিতা এবং তার অদম্য লড়াইয়ের পরিপ্রেক্ষিতেই সে মাছ বিক্রি এবং রাতে ক্যাটারিংয়ের কাজ করেও পরীক্ষায় বসে। তার এমন অদম্য লড়াই অনুপ্রাণিত করেছে সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষকে। আর এবার এই পরীক্ষার্থীর পাশে দাঁড়াল বীরভূম জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। দেবাশীষ দাসের সম্পর্কে জানতে পেরে বৃহস্পতিবার বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভানেত্রী মীনাক্ষী ভট্টাচার্য এবং বীরভূম জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি বিক্রমজিত সাউ তাদের সঙ্গীদের নিয়ে দেবাশীষের বাড়িতে আসেন। সেখানে তারা দীর্ঘক্ষণ ধরে দেবাশীষ এবং তার দিদার সঙ্গে কথা বলেন। এর সঙ্গে সঙ্গেই তারা পড়াশোনার দিক দিয়ে সমস্ত রকম ভাবে দেবাশীষকে সাহায্য করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। মীনাক্ষী ভট্টাচার্য্যের কথা অনুযায়ী, দেবাশীষ উচ্চতর পঠন-পাঠনের জন্য যদি কোন অসুবিধার সম্মুখীন হয় তাহলে তাকে সমস্ত রকম সহযোগিতা করা হবে। সে যদি সিউড়িতে থেকেই পড়াশোনা করতে চায় তাহলেও তার বন্দোবস্ত করে দেওয়া হবে এবং যদি বিশ্বভারতীতে কোন কোর্স করতে চায় সে ক্ষেত্রে যতটা সম্ভব সহযোগিতা করা হবে। এছাড়াও পরীক্ষা চলাকালীন যাতে তাকে মাছ বিক্রি করতে না হয় তার জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক ও খাদ্য সামগ্রী দিয়ে সাহায্য করা হবে বলেও জানানো হয়েছে। অন্যদিকে দেবাশীষের বাড়িতে আলোর সমস্যা রয়েছে বলে জানা যায়। সেই সমস্যা দ্রুত মিটিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। একসময় দেবাশীষ দাস রোজগারের তাগিদে নিজের পড়াশোনার পাট চুকিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। যদিও তার স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা তার বাড়ি গিয়ে তাকে এবং তার পরিবারের সদস্যদের বোঝান এবং পুনরায় স্কুলে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হন। আর এবার দেবাশীষ তার পাশে অন্যান্যদের পেয়ে আগামী দিনে নিজের পড়াশুনা চালিয়ে যাবে বলেই জানিয়েছে।