সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় নেটিজেনরা প্রশ্ন তুলেছেন ‘পৃথিবীর সবচেয়ে বিশুদ্ধ খাবার কী?’
বিবিসি-র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের সবচেয়ে বিশুদ্ধতম খাবার হল ঘি। এই ঘি তৈরি করা হয় দুধ থেকে। যদিও বহু মানুষ মনে করেন এই ঘি অস্বাস্থ্যকর। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানও ঘি সেবনের পক্ষে মত দেয় না।
আরও পড়ুন: চিচিঙ্গা চেনেন? চিনে অবশ্যই সবজিটি খাওয়া শুরু করুন! ডায়াবেটিস থেকে দেহের চর্বি; সব কমবে
advertisement
তবু, দীর্ঘকাল ধরে ঘি ভারতীয় রান্নার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। লেখক ও খাদ্য বিশেষজ্ঞ কল্যাণ কর্মকার ঘি-কে খাদ্যের সবচেয়ে বিশুদ্ধ রূপ বলে মনে করেন। কল্যাণ বলেছিলেন, ‘আমি এমন মানুষেরই দলে যাঁরা এই ধারণার মধ্যেই বেড়ে উঠেছি, যে ঘি অস্বাস্থ্যকর। কিন্তু এখন আমি মনে করি এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বিশুদ্ধ খাবার।’
বিবিসি-র রিপোর্ট বলছে, মনে করা হয় ঘিয়ের উৎপাদন হয়েছিল মাখন সংরক্ষণ করার জন্য। গ্রীষ্মকালে মাখন যাতে নষ্ট না হয়, সেই জন্যই ঘিয়ের উৎপাদন। ঘি-কে দুধের সবচেয়ে বিশুদ্ধ রূপ হিসাবে বিবেচনা করা হয়। সেই কারণে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা দেবতাদের ভোগ্য হিসেবে ঘিয়ের ব্যবহার করেন। খাদ্য ইতিহাসবিদ এবং শিকাগোর লেখক, কলিন টেলরসন বলেছেন, যে ঋগ্বেদে ঘি উল্লেখ করা রয়েছে। ‘ঘিয়ের উল্লেখ ঋগ্বেদে পাওয়া যায়, প্রায় ৪,০০০ বছর আগের প্রাচীন স্তোত্র এবং প্রার্থনায় এর উল্লেখ রয়েছে।’
আরও পড়ুন: খেজুরের নামে চিনা জুজুবি ফল খাচ্ছেন না তো? কীভাবে বুঝবেন? আসল খেজুর চেনার উপায় জানুন
ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, সৃষ্টিকর্তা প্রজাপতি ব্রহ্মা, স্বয়ং হাত ঘষে প্রথম ঘি তৈরি করেছিলেন। তিনি সেই ঘি আগুনে ঢেলে দিয়েছিলেন, তা থেকেই উদ্ভব হয়েছিল তাঁর সন্তানদের।
ভারতীয় সংস্কৃতিতেও ঘিয়ের গুরুত্ব অপরিসীম। এটি একটি শুভ নৈবেদ্য হিসেবে গণ্য করেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। তাই ওই ধর্মের বিবাহ অনুষ্ঠান বা যেকোনও পূজা অর্চনা যাগ-যজ্ঞের সময় আগুনে ঘি ঢেলে দেওয়া হয়। এমনকী মৃত্যুর পর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানেও ঘি ব্যবহৃত হয়। তার আর একটি কারণ ঘিয়ের দাহিকা শক্তি প্রবল।
তবে সব ভারতীয়ই প্রচুর পরিমাণে ঘি খান, এমন নয়। তবে সামান্য একটু ঘিয়ের ছোঁয়াতেই খাবারের স্বাদ বেড়ে যায় অনেকখানি।