TRENDING:

শীতকালে নবজাতকের যত্ন, থাকল কিছু টিপস

Last Updated:

শীতের সময় নবজাতক শিশুদের অতিরিক্ত যত্নের প্রয়োজন হয় কারণ তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় শরীরের বিভিন্ন প্রক্রিয়া শুরু হয় যাতে নিজেকে নিরাপদ রাখা যায় এবং গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো ভালোভাবে কাজ করে।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
বাইরে ঠান্ডা বাতাস জানান দিচ্ছে যে শীতের মরসুম দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে। আমরা বড়োরা তো যে কোনো ভাবে বাইরের ঠান্ডা বাতাস আর কঠোর আবহাওয়ার সাথে লড়াই করতে পারি কিন্তু নবজাতকদের পক্ষে তাদের অনুন্নুত ইমমুনিটির জন্য এই সময়টা খুব বেশি চ্যালেন্জিং হয়ে ওঠে। খুব সহজেই শিশুটি সর্দি , কাশি বা কোনো ভাইরাল দ্বারা সংক্রমিত হতে পারে এবং মা হিসাবে আপনাকে চিন্তায় ফেলতে পারে।  তাই শিশুকে বাইরের কনকনে ঠান্ডা থেকে রক্ষা করতে কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে যা আপনার ছোট্ট সোনাকে উষ্ণ এবং নিরাপদ রাখতে পারে।
advertisement

আপনি কি নতুন মা হয়েছেন ? এটি কি আপনার শিশুর প্রথম শীত ? তবে এই শীতের মরসুমে নবজাতক শিশুর যত্ন সম্পর্কে আসুন কিছু তথ্য জানা যাক।

শীতকালে শিশুর যত্ন নেওয়া কেন গুরুত্বপূর্ণ?

শীতের সময় নবজাতক শিশুদের অতিরিক্ত যত্নের প্রয়োজন হয় কারণ তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় শরীরের বিভিন্ন প্রক্রিয়া শুরু হয় যাতে নিজেকে নিরাপদ রাখা যায় এবং গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো ভালোভাবে কাজ করে। শরীরের অন্যান্য অংশ থেকে আসা বেশিরভাগ শক্তি শরীরের তাপমাত্রাকে যথাযথভাবে বজায় রাখতে ব্যবহৃত হয়। এখানেই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অনাক্রম্যতা কম থাকার জন্য  শিশুদের রোগে আক্রান্ত হওয়ার এবং অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।

advertisement

শীতকালে আপনার শিশুর যত্ন নেওয়ার জন্য দরকারী টিপস

একটি হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করুন :

আপনি যদি ঠান্ডা অঞ্চলে বাস করেন, তাহলে আপনার শিশুর ঘরে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করা জরুরি হয়ে পড়ে। আপনার শিশুর ঘরে হিটিং সিস্টেম বা বহনযোগ্য হিটার ব্যবহার ঘরের জলীয় বাস্প টেনে নেয় , যেটা ঘরের বাতাসকে শুষ্ক করে দেয়। অতএব, ঘরে একটি হিউমিডিফায়ার ইনস্টল করুন যাতে আর্দ্রতার মাত্রা সর্বোত্তমভাবে বজায় থাকে।

advertisement

একটি ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন :

আপনার ছোট্টটির ত্বক অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং শীতের কঠোর পরিবেশ তা শুষ্ক করে তুলতে পারে। আপনি যদি আপনার ছোট্টটির ত্বক নরম এবং কোমল রাখতে চান তবে তার ত্বকে একটি ভাল ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। শিশুর ত্বকের জন্য তৈরি ত্বকের ক্রিম বা ময়েশ্চারাইজার বেছে নিন। আপনি দুধের ক্রিম এবং মাখন সমৃদ্ধ ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করতে পারেন, কারণ এটি আপনার শিশুর ত্বকের উজ্জ্বলতা এবং গঠন বজায় রাখতে সাহায্য করবে।

advertisement

প্রচুর প্রোডাক্টস ব্যবহার করবেন না :

একজন নতুন অভিভাবক হিসাবে, দোকানে উপলব্ধ প্রতিটি নতুন এবং প্রতিশ্রুতিশীল বেবিকেয়ার প্রোডাক্ট না কিনে বরং সফ্ট বা ভালো  লোশন এবং ক্রিম প্রয়োগ করুন।  তবে আপনি যদি তাকে প্রায়ই স্নান করান এবং তার উপর বিভিন্ন প্রোডাক্ট ব্যবহার করেন তবে এটি কেবল তার ত্বককে শুষ্ক করে তুলবে। এছাড়াও, প্রতিদিন বা প্রায়ই সাবান এবং শ্যাম্পু ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন কারণ এগুলো তার ত্বকের আর্দ্রতা কেড়ে নেবে এবং এটিকে শুষ্ক করে তুলবে।

advertisement

আপনার শিশুকে ভালোভাবে ম্যাসাজ করুন :

আপনার সন্তানের সঠিক বৃদ্ধি এবং বিকাশের জন্য, তাকে প্রতিদিন ম্যাসেজ করাটা খুবই গুরুত্ববপূর্ণ । ম্যাসাজ শরীরের মধ্যে রক্ত ​​​​প্রবাহকে উদ্দীপিত করে এবং সুস্থতার অনুভূতি বাড়ায়, যা পরোক্ষভাবে শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ম্যাসাজ করার জন্য একটি ভালো ম্যাসাজ অয়েল ব্যবহার করুন এবং তাকে আলতো করে ম্যাসাজ করুন। আর তা করার সময় খেয়াল রাখবেন যে ঘরে আপনি তাকে ম্যাসাজ করবেন সেটি যেন গরম থাকে, বিশেষ করে শীতের সময়।

ভারী কম্বল ব্যবহার করবেন না :

আপনার ছোট্টটিকে উষ্ণ রাখতে ভারী কম্বল ব্যবহার করবেন না কারণ সে তার হাত অবাধে নাড়াতে পারবে না এবং এটি করতে গিয়ে সে নিজের  মুখের উপরে কম্বলটা টেনে আনতে পারে যা SIDS এর ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলবে। সুতরাং এটি পরামর্শ দেওয়া হয় যে আপনি একটি হালকা কম্বল ব্যবহার করুন এবং ঘরের তাপমাত্রা সর্বোত্তম রাখুন।

শিশুকে আরামদায়ক পোশাক পরান :

আপনার শিশুকে ক্রমাগত মোটা সোয়েটার, গ্লাভস, মোজা এবং একটি টুপি দিয়ে মুড়িয়ে রাখলে তার মুভমেন্ট করতে অসুবিধা হবে। তাই তাকে ঘরের তাপমাত্রার উপর নির্ভর করে পোশাক পরান এবং এমন পোশাক বেছে নিন যা তার শরীরকে পুরোপুরি ঢেকে রাখে কিন্তু সংকুচিত হয় না। আপনি তাকে গ্লাভস এবং মোজা পরিয়ে দিতে পারেন যা আপনার ছোট্টটিকে উষ্ণ রাখবে এবং তাকে সারা রাত শান্তিতে ঘুমাতে দেবে।

আপনার শিশুর ঘরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করুন :

আপনার শিশুর ঘর আরামদায়ক এবং উষ্ণ থাকলে তা আপনার শিশুকে নিরাপদ রাখবে এবং কঠোর শীতের বাতাস থেকে সুরক্ষিত রাখবে। আপনার বাড়ির জানালা বন্ধ রাখুন এবং দরজা ভালভাবে লক করুন। তবে এটা খেয়াল রাখবেন যে আপনার শিশুর ঘরে এবং বসার ঘরে  ঠিকমতো বাতাস চলাচল করছে।  শিশুকে আরামদায়ক অনুভব করতে একটি হিটার ব্যবহার করুন।

শিশুকে সঠিক সময়ে টিকা লাগান :

শীতকালে, আপনার শিশু সংক্রমণের জন্য বেশি সংবেদনশীল হয় এবং তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কম হয়ে যায় । তাই আপনার শিশুকে সঠিক সময়ে টিকা দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনার শিশুকে টিকা দিলে ভবিষ্যতে সে সুস্থ থাকবে। যদি কোনো কারণে টিকা মিস হয় তাহলে  আপনার ডাক্তারের কাছ থেকে পরবর্তী তারিখ নিশ্চিত করুন এবং টিকা লাগিয়ে দিন ।

আপনার শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ান :

বুকের দুধে অ্যান্টিবডি এবং পুষ্টি থাকে যা শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে এবং তাকে স্বাভাবিক রোগ থেকে রক্ষা করে। শিশুকে সলিড ফুড দিতে শুরু করলেও তাকে বুকের দুধ খাওয়ানো চালিয়ে যান। বুকের দুধ তাকে সুস্থ থাকার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত পুষ্টি সরবরাহ করবে। আর বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় আপনার শরীরের উষ্ণতাও তার জন্য আরামদায়ক হবে।

আপনার নিজের স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখুন :

নবজাতকের সাথে মায়ের সম্পর্ক সবচেয়ে বেশি কাছের। তাই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও সুস্থ থাকা আপনার জন্য একান্ত প্রয়োজন। যখনই আপনি আপনার সন্তানের কাছে যান তখন আপনার হাত ধুয়ে নিন এবং স্যানিটাইজার দিয়ে জীবাণুমুক্ত করুন। কোনো অতিথি শিশুকে দেখতে এলে শিশুর কাছে যাওয়ার আগে বিনয়ের সাথে তাদের হাত ধুতে বা স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে বলুন।

বাইরের যত্ন নিন :

বাইরে খুব বেশি ঠাণ্ডা না হলে, তাজা বাতাস পাওয়ার জন্য একবারে ঘর থেকে বের হওয়া ভালো। কিন্তু নিশ্চিত করুন যে আপনার শিশুকে বাইরে নিয়ে গেলে মাথা থেকে পা পর্যন্ত সুরক্ষিত আছে। ঠাণ্ডা বাতাসে ত্বকের যে কোনো এক্সপোজার তাকে দ্রুত অস্বস্তিতে ফেলতে পারে। খেয়াল করবেন যে আপনার শিশুর পায়ের আঙ্গুলগুলি হালকা ঠান্ডা এবং পেট উষ্ণ রয়েছে। এটি শিশুর শরীরের সঠিক তাপমাত্রার আদর্শ লক্ষণ।

আপনার শিশুর ডায়েটে স্যুপ অন্তর্ভুক্ত করুন :

আপনার শিশুটি যদি সেমি-সলিড খেতে শুরু করে থাকে , তাহলে এই শীতকালে তাকে স্যুপ দেওয়া শুরু করুন । ঠান্ডা আবহাওয়ায় একটি স্বাস্থ্যকর স্যুপ তাকে উষ্ণ রাখবে। শিশুর জন্য স্যুপ তৈরি করার সময় এতে মুরগির টুকরো বা সবজি যোগ করতে পারেন। এছাড়াও, স্যুপে গুঁড়ো রসুন যোগ করুন, এটি আপনার শিশুকে শীতকালে উষ্ণ রাখবে এবং তাকে শীতের বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করবে।

সূর্যের মধ্যে কিছু সময় কাটান :

সূর্যালোক হল ভিটামিন ডি এর সবচেয়ে বড় উৎস, শক্তিশালী হাড়ের জন্য এটি অপরিহার্য পুষ্টি  প্রদান করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। জামাকাপড় বদলানোর পর বা আপনার শিশুকে স্নান করানোর পর তার সাথে কিছু সময় রোদে কাটান। সূর্যালোক জীবাণুকে নষ্ট করে এবং শিশুর শরীরে উষ্ণতা প্রদান করে।

শিশুকে স্নান করান :

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার জন্য স্নান করানোটা গুরুত্বপূর্ণ। শীতকালে একদিন অন্তর আপনার শিশুকে হালকা গরম জল দিয়ে স্নান  করান। অন্যান্য দিনে শুধু একটি ভেজা তোয়ালে নিন এবং ড্রেস চেঞ্জ করার আগে তাদের শরীর মুছে দিন । এতে অসুস্থতার ঝুঁকি কমবে এবং ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করবে।

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
লালগোলাতে রাজরাজেশ্বরী রূপে পূজিতা হন মা কালী! দেওয়া হয় ইলিশের ভোগ
আরও দেখুন

(Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি কেবলমাত্র সাধারণ তথ্যের জন্য, তাই বিস্তারিত জানতে হলে সর্বদা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।)

বাংলা খবর/ খবর/লাইফস্টাইল/
শীতকালে নবজাতকের যত্ন, থাকল কিছু টিপস
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল