ব্রিটিশ শাসক লর্ড কর্নওয়ালিসের সময়ে জমিদারির পত্তন হয় রায়চৌধুরীদের। সেই থেকেই শুরু হওয়া দুর্গাপুজো নিজস্ব জৌলুস নিয়ে আজও অমলিন। সরকারিভাবে নীলকণ্ঠ পাখি ধরা ও দুর্গা ঠাকুর বিসর্জনের পর তা উড়ানোর উপর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও, এটাই প্রধান বিশেষত্ব এই বনেদি বাড়ির পুজোর। দশমীতে বিসর্জনের পর নিলকণ্ঠ পাখি ওড়ালে, সে গিয়ে কৈলাসে ভগবান শিবকে খবর দেবে মা দুর্গা মর্ত ছেড়ে কৈলাসের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। এই বিশ্বাস থেকে আজও বিসর্জনের পর বারুইপুরের আদি গঙ্গার সদাব্রত ঘাট থেকে নীলকণ্ঠ পাখি উড়িয়ে আসছেন বারুইপুরের আদি জমিদার রায়চৌধুরীরা। তবে গতবছর পাখি পাওয়া যায়নি বলে ওড়ানো হয়নি। কিন্তু এবার পাখি পাওয়া গেলে সেই পুরানো রীতি মেনেই ওড়ানো হবে নীলকণ্ঠ, দাবি রায়চৌধুরীদের।
advertisement
এই পুজোর অন্যতম বিশেষত্ব হল, মহালয়ার পরদিন অর্থাৎ প্রতিপদ থেকেই শুরু হয়ে যায় দেবীর আরাধনা। এখনও সপ্তমি ও অষ্টমীতে পাঁঠাবলি হয়। নবমীতে হয় আঁখ ও চালকুমড়ো বলি। ১৯৫৪ সালে সরকার জমিদারি নিয়ে নিলেও এখনও বারুইপুর এলাকার জমিদার বাড়ির পুজো বলতে সবাই রায়চৌধুরীদের পুজোকেই বোঝে। পুজোর কটাদিন সমস্ত আত্মীয় স্বজনরা আসেন জমিদার বাড়িতে। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখনও বহু মানুষ আসেন এই বাড়ির পুজো দেখতে।
প্রতিবছর দশমীতেই প্রতিমা বিসর্জনের রেওয়াজ রয়েছে। এলাকার মধ্যে রায়চৌধুরীদের বাড়ির ঠাকুর প্রথম বিসর্জন দেওয়া হয়। রুপোর পাখা দিয়ে দুর্গাকে হাওয়া দিতে দিতে, রুপোর ঝাড়ু দিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করতে করতে বিসর্জন দিতে নিয়ে যাওয়া হয় দেবী প্রতিমা। পুজো শুরুর দিন থেকেই সমস্ত নিয়ম নীতি ও নির্ঘণ্ট মেনে চলে পুজো।