বাঘ দেখে আতঙ্কে গাছে উঠে পড়েন বৃদ্ধ। আর গণেশ লাঠি নিয়ে বাঘকে আটকাতে যান। প্রায় বিদ্যুতের গতিতে বিশাল প্রাণীটি এক লাফে গণেশের উপর ঝাঁপায়। মুখের ডানদিকে থাবা মারে। তারপর আবার থাবা। অন্যান্য বনকর্মী তখন লাঠি নিয়ে তেড়ে আসেন। একটানা লাঠির আঘাতে প্রাণীটি শিকার ছেড়ে পিছু হটে। মৈপীঠের নগেনাবাদের শ্মশান ঘাট এলাকা সেদিন কার্যত যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল।
advertisement
সম্প্রতি হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন গণেশ। তাঁর তিন মেয়ে। একজন দশম শ্রেণিতে পড়ছে। কী করে তার পড়াশোনা বা সংসারের খরচ চালাবেন এখন সেই চিন্তায় তাঁরা দিশাহারা। বলেন, ‘ক্ষতিপূরণ এখনও পাইনি। শরীরের যা অবস্থা কাজও করতে পারছি না। জানি না কি করে সংসার চলবে?’ তিনি মৈপীঠের মধ্য গুড়গুড়িয়া এলাকার বাসিন্দা। বাঘ লোকালয়ে ঢুকলে ডাক পড়ে টাইগার কুইক রেসপন্স টিমের। সেই টিমেরই সদস্য তিনি।
আরও পড়ুন : ৩০ কিমি পথ পেরিয়ে মোষের গাড়িতে চেপে বর এলেন বিয়ে করতে! বরযাত্রীরাও সওয়ার মহিষ শকটেই! উপচে পড়ল ভিড়
তিনিই একমাত্র পরিবারের রোজগেরে সদস্য। বললেন, ‘‘লোকালয়ে বাঘ ঢুকলে দিন-রাত ডিউটি করলে বনদফতর এক হাজার টাকা দেয়। এছাড়া মাছ-কাঁকড়া ধরে কিছু টাকা আয় হয়। সে সামান্য টাকা থেকে জমিয়ে বড় মেয়ের বিয়ে দিয়েছি। এখন মাছ-কাঁকড়া ধরতেও যেতে পারব না। কবে সুস্থ হব জানি না। হাঁটাহাঁটি বেশি হলে শরীর খারাপ হয়। পরিবারের কেউ সরকারি চাকরি পেলে তবেই সংসার বাঁচবে। মেয়ে পড়াশোনা করতে পারবে।’’ তাঁর স্ত্রী বলেন, ‘‘স্বামী বেঁচে ফিরেছে কপালজোরে। ছোট মেয়েকে সবে স্কুলে ভর্তি করেছি। আর এক মেয়েও পড়াশোনা করছে। স্বামীর এই অবস্থায় কী করে কী হবে জানি না।’’