শোনা যায়, মুর্শিদকুলি খাঁ ঢাকা থেকে রাজধানী মুর্শিদাবাদে স্থানান্তর করার সময় এই কামানটি এখানে নিয়ে আসেন। তাই ইতিহাসের সাক্ষী এই কামান। যা আজও ইতিহাস বহন করছে এই কামান। জাহান কোষা কামান এই কামানটি তৈরিও করেন জনার্দন কর্মকার। কামানটির দৈর্ঘ ৫.৫০ মিটার, প্রস্থ ১.৭০ মিটার ও ওজন আনুমানিক ৭৯০০ কেজি। কামানের গায়ের লেখা থেকে জানা যায়, ১৬৩৭ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবর মাসে এটি তৈরি করা হয়। দিল্লির মসনদে তখন সম্রাট শাহজাহান।
advertisement
আরও পড়ুন-নভেম্বরেই লাগবে ‘জ্যাকপট’…! বিরল কাকতালীয় যোগে ৩ রাশির ধন-সম্পদের ফোয়ারা, খুলবে পোড়া কপাল
ঢাকার সুবেদার তখন ইসলাম খাঁ। ঢাকার দারোগা শের মহম্মদ ও হরবল্লভ দাসের তত্ত্বাবধানে মিস্ত্রি জনার্দন কর্মকার এই কামানটি নির্মাণ করেন। এই কামানটি দাগার জন্য ১৭ কেজি বারুদ ব্যবহৃত হতো।কামানটি কোনও কারণে ক্রুদ্ধ হয়ে নদীপথে চলে যাওয়ার সময় একটি অশ্বত্থ গাছ এটিকে জড়িয়ে ধরেছিল। বহুকালই নাকি কামানটি সেই অবস্থায় ছিল। তারপর সরকার কামানটিকে ওই অশ্বত্থগাছ থেকে আলিঙ্গনমুক্ত করে এই উঁচু বেদিটির ওপর স্থাপন করে। বর্তমানে কামানটি যে গ্রামে আছে তার নামও তোপগ্রাম। যদিও নাম গ্রাম, তবে আসলে এটি গ্রাম নয়। মুর্শিদাবাদ শহরের পাশেই এটি। কাটরা মসজিদে যাওয়ার পথেই এই গ্রামের অবস্থান। কামানটি নবাবী আমলে লোহার একটি চাকার ওপর স্থাপিত ছিল, যা বর্তমানে আর নাই। জাহান কোষা কামান দীর্ঘদিন এটি মাটির নিচেই পড়ে ছিল।
কালক্রমে একটি গাছের কাণ্ডে আটকা পড়ে এটি জেগে উঠেছিল। তারপর এটিকে উঁচু বেদির ওপর স্থাপন করেছে। কামানটি তৈরিতে অষ্টধাতু ব্যবহার করা হয়েছে। এর মধ্যে আছে সোনা, রূপা, দস্তা, তামা, জিঙ্ক, টিন, লোহা ও পারদ আছে বলে জানা যায়।মুর্শিদাবাদ হাজারদুয়ারী দর্শনে এলেও অনেকের কাছে অজানা এই ইতিহাসের দর্শনীয় স্হান। তবে নতুন করে সংরক্ষণ করে আবার জানুক ইতিহাস, আসুক পর্যটকরা চাইছেন সকলেই। শীতের ছুটিতে একবার দেখে আসুন অষ্টধাতুর ব্যবহার করা এই কামানটিকে।