সামগ্রিক ভাবেই, ত্বকের চেহারা আরও প্রাণবন্ত, তারুণ্যময় এবং স্বাস্থ্যকর করে তোলা প্রয়োজন। নিজের ত্বককে নরম এবং ঝলমলে করে তোলা প্রাথমিক ভাবে কঠিন বলে মনে হতে পারে। কিন্তু খুব সহজ কিছু পদ্ধতিতে সামান্য চেষ্টা করলেই তা পাওয়া সম্ভব হতে পারে। তবে এ জন্য তেমন কোনও দামি ট্রিটমেন্টের প্রয়োজন হবে না। প্রায় নিখরচায় ঝকঝকে পরিষ্কার ত্বক অর্জন করা সম্ভব।
advertisement
পরিষ্কার, স্বাস্থ্যকর ত্বক পাওয়ার জন্য কিছু কাজ অবশ্য করতে হবে। বিশেষত এই শীত শীত আবহাওয়ায়, যখন ত্বকের আর্দ্রতা কমে যাচ্ছে, কিছু বিশেষ যত্নের প্রয়োজন। এই স্কিনকেয়ার হ্যাকগুলি এক নিমেষে বদলে দিতে পারে সৌন্দর্যের মাপকাঠি।
তেলের ব্যবহার—
শীতকালে সার শরীরে আমরা অনেকেই তেল মাখি। কিন্তু বাদ পড়ে যায় মুখ। অনেকেই ভয় পাই, তেল মাখলে বুঝি ত্বকে আরও সমস্যা বেড়ে যাবে। কিন্তু এই সবের সমাধান রয়েছে ‘ফেস অয়েল’-এ। নিজের নিয়মিত ময়েশ্চারাইজারের সঙ্গে ফেস অয়েল মিশিয়ে নেওয়া যেতে পারে। ময়েশ্চারাইজারের সঙ্গে দুই ফোঁটা ফেস অয়েল মেশালে এই শীতে ত্বক পরিচর্যার মাত্রা বেড়ে যাবেই।
আরও পড়ুন: বিয়ে বাড়িতে শাড়ির সঙ্গে জমিয়ে দিন শীতপোশাকের সঙ্গত, এই ফ্যাশন সম্পর্কে অবশ্যই জানুন
মেকআপ রিমুভারে বদল—
দিনের শেষে মুখ থেকে যাবতীয় মেক-আপ তুলে ফেলা খুবই প্রয়োজন। কিন্তু রাসায়নিক মিশ্রিত মেক-আপ নিজেও খানিকটা ক্ষতি করতে পারে। তাই মেক-আপ তুলে ফেলতে তেল ব্যবহার করা যেতে পারে। ত্বকের ধরন অনুযায়ী যে কোনও কোল্ড কম্প্রেসড তেল বেছে নেওয়া যেতে পারে। যেমন শুষ্ক ত্বকের জন্য নারকেল বা বাদাম তেল এবং তৈলাক্ত ত্বকের জন্য মরিঙ্গা বা সজনে পাতার তেল ব্যবহার করা যেতে পারে। ফেস ক্লিনজার দিয়ে ধুয়ে ফেলার আগে মুখে তেল মালিশ করে নিলেই ভাল ফল মিলবে।
গোলাপ জল—
মুখের ত্বকের যত্নে টোনিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সাধারণত টোনারেও অ্যালকোহল এবং পারফিউম থাকে, যা ত্বককে শুষ্ক করে দেয়। তাই টোনার সরিয়ে গোলাপ জল বেছে নেওয়া যেতে পারে।
এক্সফোলিয়েশন—
সব ঋতুতে এবং সব ধরনের ত্বকের জন্য সপ্তাহে অন্তত একবার এক্সফোলিয়েশন খুব জরুরি। এতে নতুন কোষের উৎপাদনকে ত্বরান্বিত হয়। ফলে ত্বকের রঙ সর্বত্র সমান দেখায়, ত্বক স্বাস্থ্যকর এবং উজ্জ্বল হয়।
এক্সফোলিয়েট করতে কফি স্ক্রাব ব্যবহার করা যেতে পারে। স্ক্রাব হিসেবে কফি খুবই কোমল। গ্রাউন্ড কফি, ব্রাউন সুগার এবং অলিভ অয়েল মিশিয়ে মুখে গলায়, ঘাড়ে লাগিয়ে নেওয়া যেতে পারে। ত্বকের মৃত কোষ দূর করতে খুব হালকা হাতে গোল গোল করে মাসাজ করতে হবে।
আরও পড়ুন: প্যান্টিতে কেন থাকে ছোট পকেটের মত অংশ? কারণ জানলে চমকে উঠবেন
ফেসপ্যাক—
স্ক্রাব করার পরই ফেসপ্যাক লাগানো দরকার। এটি অত্যাবশ্যক। কারণ স্ক্রাবিংয়ের ফলে রোমকূপের মুখ বড় হয়ে যেতে পারে, তখন উপযুক্ত একটি প্যাক তা হ্রাস করে। পাশাপাশি ত্বককে পুষ্টি দেওয়ার আদর্শ সুযোগ মেলে এ সময়ই।
এক্সফোলিয়েশনের পরে অ্যালোভেরা এবং গোলাপের ফেসপ্যাক ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে ত্বকে আর্দ্রতা ফিরে আসে, একটা স্বাস্থ্যকর দীপ্তি তৈরি হয়। আসলে অ্যালোভেরা নিজেই একটি প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার। অ্যালোভেরার নির্যাস টেক্সচার উন্নত করে এবং ত্বককে শক্ত করে। এই প্যাকের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্যগুলি ব্রণ, ফুসকুড়ির চিকিৎসায় চমৎকার প্রাকৃতিক ঘরোয়া প্রতিকার।
দুটি তাজা গোলাপের পাপড়ির সঙ্গে চা চামচ অ্যালোভেরা জেল মসৃণ ভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। খুব ঘন হয়ে গেলে গোলাপ জল মিশিয়ে নেওয়া যেতে পারে। মুখ, গলা এবং ঘাড়ে লাগিয়ে মিনিট কুড়ি অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলতে হবে।
সানস্ক্রিন অপরিহার্য—
সূর্যের ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মি সরাসরি ত্বকে এসে পড়লে পিগমেন্টেশন, অকাল বার্ধক্য, কালো দাগ এবং শুষ্কতার মতো সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাই সানস্ক্রিন ব্যবহার করা জরুরি। তবে যে কোনও সানস্ক্রিন নয়। কেনার সময় লেবেলে জিঙ্ক অক্সাইড-ভিত্তিক খনিজ সানস্ক্রিন বেছে নিতে হবে। এটি ত্বকের উপর মৃদু প্রভাব ফেলে।
হাইড্রেশন—
বাইরে থেকে ময়েশ্চারাইজার প্রয়োগ করে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখাই যায়। কিন্তু শরীর ভিতর থেকে ডি-হাইড্রেটেড হয়ে গেলে খুব মুশকিল। শরীর বিগড়োতে পারে, ত্বকও। প্রতিদিন অন্তত ২ লিটার জল পান করা প্রয়োজন। প্রয়োজনে জলের মধ্যে দারচিনি মিশিয়ে নেওয়া যেতে পারে। লেবু এবং মধুর মিশিয়ে ঈষৎ উষ্ণ জল পান করলে হজমে সহায়তা করতে পারে, আবার তা ত্বকের পিগমেন্টেশনও হালকা করতে পারে।
(Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি কেবলমাত্র সাধারণ তথ্যের জন্য, তাই বিস্তারিত জানতে হলে সর্বদা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।)