হাতের ক্ষেত্রেও এমন বিষয় নজরে আসে। সমাজে প্রচলিত আছে, ডান হাত দিয়েই খেতে হবে, ডান হাত দিয়েই খেলাধুলো করতে হবে। কিন্তু যাদের ডানের বদলে বাঁ হাত বেশি শক্তিশালী, তারা কী করবে? একাধিক শিশু ছোটবেলা থেকে বাঁ হাতে বেশি দক্ষ। ডান-হাতিরা যেমন মস্তিষ্কের বাঁ দিকের অংশটি বেশি ব্যবহার করে। বাঁ-হাতিদের ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের ডান দিক ব্যবহৃত হয়।
advertisement
আরও পড়ুন: ৯০ শতাংশ মানুষই ভুল ভাবে জল পান করেন, কীভাবে তেষ্টা মেটাবেন? জেনে নিন বিশেষজ্ঞের মতামত
কিন্তু তাদের মূল স্রোতে ফেরাতে বাবা-মায়েরা জোর করে ডান হাতের কার্যক্ষম বাড়ানোর চেষ্টা করেন৷ অনেকের ধারণা, যারা ডান-হাতিদের তুলনায় বাঁ-হাতিরা দুর্বল চিত্তের মানুষ হয়। কিন্তু সেটা একেবারেই বিজ্ঞানসম্মত নয়। এই ভাবনার ফলে বাচ্চাদের বাঁ হাতের ক্ষমতা কমিয়ে ডান হাতের ক্ষমতা বাড়ানোর পরিকল্পনা মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। কেউ কেউ আবার ছেলেমেয়েদের বাঁ হাত বেঁধে রেখে ডান হাত দিয়ে কাজ করান। যাতে হাতের ক্ষমতার বদল হয়। এতে বাঁ-হাতিরা ডান-হাতি হয়ে যায় হয়তো, কিন্তু এর ফলে শিশুদের শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায়।
আরও পড়ুন: ৯০ শতাংশ মানুষই ভুল ভাবে থার্মোমিটার ব্যবহার করেন! জেনে নিন জ্বর মাপার সঠিক নিয়ম
সবাই যে সমস্যার সম্মুখীন হন, তা নয়। কিন্তু অনেক শিশুর মধ্যে এই বদলের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়। কারও কথা বলার সমস্যা শুরু হয়, কারও স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে যায়, কারও মানসিক সমস্যা দেখা দেয়, কারও আবার মেলামেশা করতে অসুবিধা হয়। জোর করে হাতের বদলে মস্তিষ্কে চাপ পড়ে। কোনও কোনও শিশুর ডিসলেক্সিয়া দেখা যায়। ফলে পড়াশোনা করতে অসুবিধা হয়। মস্তিষ্ক দুর্বল হয়ে পড়ে। হাতের লেখা খারাপ হয়ে যায়। কোনও শিশু বয়স বাড়ার পরেও বিছানায় প্রস্রাব করে দেয়। নখ কামড়ানোর মতো বদ অভ্যাস দেখা যায়। তা ছাড়া ক্লান্তি বেড়ে যায় শরীরে। বিভিন্ন স্নায়ুজনিত রোগাক্রান্ত হয় শরীর।
তাই স্বাভাবিকত্বের বাইরে গিয়ে অকারণে জোর করবেন না নিজেদের শিশুকে। বাঁ-হাতি মানুষেরা এই দেশে রাজত্ব করে চলেছে। অমিতাভ বচ্চন, অ্যালবার্ট আইনস্টাইন, অ্যারিস্টটল, লিওনার্দো দা ভিঞ্চি, মেরি কুরি, বিল গেটস, মার্ক জাকারবার্গের মতো একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও বাঁ-হাতি।