বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বোলপুর শান্তিনিকেতন গেলেই আপনি দেখতে পাবেন এই বাড়ি।প্রকৃতিবিদ তেজেশ চন্দ্র সেন ঢাকা শহরে বড় হয়েছিলেন। সহজপাঠে তাঁর লেখার সঙ্গে পরিচিত আমরা সবাই। সেখান থেকেই আমাদের অনেকের প্রকৃতিপাঠের হাতেখড়ি। শান্তিনিকেতনের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ পঞ্চাশ বছরের। প্রথমে ব্রহ্মচর্যাশ্রমের শিক্ষক ও পরে পাঠভবনে পড়াতেন। গোটা আশ্রম-চত্বর ঘুরে ঘুরে চলত তেজেশচন্দ্রের ক্লাস।কখন কোথায় ফুল ফোটে, কোন গাছে ফল ধরবে কখন, কার পাতা খসানোর সময় শুরু হল- এইসব শেখাতেন ছাত্রদের। একেবারে হাতেকলমে। শুধু কী তাই, পিঁপড়ে থেকে মৌমাছি, প্রজাপতির প্রতিটি সাজবদল, কোন পাখির কী নাম, কেমন তার ডাক– ছাত্রদের দেখিয়ে চমক লাগিয়ে দিতেন।
advertisement
প্রকৃতি তার সমগ্র জীবন নিয়ে হাজির হত তেজেশচন্দ্রের ক্লাসে। রবীন্দ্রনাথ তাঁর এই বন্ধুটির নাম রেখেছিলেন ‘তরুবিলাসী’।মন্দিরের পাশে পুকুরধারে চৌকি নিয়ে বসেও ক্লাস নিতেন তেজেশচন্দ্র। তবে মন্দিরে নাকি প্রবেশ করতেন না কখনও। সুপ্রিয় ঠাকুর তেমনই লিখছেন, ‘ছেলেবেলার শান্তিনিকেতন’ বইতে। বৈতালিকেও যোগ দিতেন না নাকি। সে কারণেই হয়ত এত নিবিড়ভাবে প্রকৃতিচর্চা চালিয়েও যেতে পেরেছিলেন তিনি। প্রকৃতির ওপর তাঁর অসংখ্য লেখার সাক্ষী তালধ্বজ বাড়িটি। কবে কার তালগাছ আজও সেইসব দিনের আশ্বাস নিয়ে দাঁড়িয়ে।
আরও পড়ুন : জলে ভাসতে ভাসতে ওটা কী করছেন ৭০ বছরের বৃদ্ধ? পড়েছে তোলপাড়! সকলের চোখ গোল গোল
এই বাড়িতেই এক সময় প্রবীণ নাগরিকেরা বাটিক প্রিন্ট এর কাজ করতেন, কিন্তু এখন সেটা বন্ধ রয়েছে। তবে বর্তমানে সেটি ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তকমা পাওয়ার পর এখন একটা ঐতিহ্যবাহী বাড়ি হিসেবে পরিচিতি রয়েছে।বর্তমানে বোলপুর গেলে এই বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করতে পারবেন না, চারদিকে কাঁটাতার দিয়ে ঘেরা রয়েছে, তবে বাইরে থেকে প্রিয়জনদের সঙ্গে নিয়ে ছবি ক্যামেরা বন্দি করতে পারবেন।