এবার প্রশ্ন ওঠে সাবেকি বঙ্কিমী ছন্দে। তিনি জানতে চেয়েছিলেন- এই জীবন লইয়া কী করিতে হয়! আমরা ঘুরিয়ে বলি এই বাঙালির ভ্যালেন্টাইনস ডে লইয়া কী করিতে হয়? কেন না, এই দিনে যে বীণা বেজে ওঠে হৃদয় কমল বন মাঝে। এই তিথির প্রহরে প্রহরে জেগে থাকে বিশালাক্ষী বিশ্বরূপার দুই নয়ন। এরই মাঝে প্রেম কী ভাবে উদযাপন করলে তার আবেশ থেকে যায় জীবনভর?
advertisement
আমরা নিয়ে এসেছি ৫ উপায়। যা বসন্ত পঞ্চমীর সঙ্গে একেবারে জুতসই!
বিদ্যাস্থানেভ্য এবচ:
এই কায়দা বয়ঃসন্ধিক্ষণে যাঁরা দাঁড়িয়ে আছেন, তাঁদের জন্য। এই দিনে খুব সহজেই চলে যাওয়া তার স্কুলে। সেখানে দেখা হোক, কথা হোক। বাকিটা অবশ্যই ব্যক্তিগত- শুধু আচরণ হতে হবে সপ্রতিভ। যাঁকে ভাল লাগছে, তিনি এগিয়ে এসে কথা না বললে যে সবটাই মাটি!
আরও পড়ুন - কাড়ি কাড়ি ওষুধ ফেল! হাজার চেষ্টাতেও ব্লাড সুগার কন্ট্রোল হয় না, চমকপ্রদ 'ফল' দেবে এই 'ফুল'!
পলাশপথে পায়ে পায়ে:
এই দিন সব ছেড়ে নামা যাক পথে, তার হাত ধরে। এই কায়দায় বসন্ত পঞ্চমীর প্রেম উদযাপন অবশ্য তাঁদের জন্য নয়, যাঁদের ধরা পড়ে যাওয়ার ভয় আছে। যাঁরা নির্ভয়, যাঁদের গল্প সবার জানা, তাঁরা এই ভালোবাসার মরশুমে বেছে নিন একটা গন্তব্য। সেই পথে পায়চারির ছন্দে মিশে যাবে আঁচল আর পাঞ্জাবি ভাঁজের জ্যাম। মনের মানুষকে নিবিড় করে সবার মধ্যেও পাওয়া আর সঙ্গে পথচলতি পুজোর দেবীদর্শন- এর বেশি আর কী বা চাওয়ার থাকতে পারে!
সরস প্রেমের ধারায়:
দেবী তো আদতে নদীরূপা, সরস্ শব্দে স্রোতধারারই ইঙ্গিত। অতএব, মনের কথার স্রোত এবারের বসন্ত পঞ্চমী তিথিতে মিশে যাক নদীর স্রোতের কাছে। যাঁরা কলকাতায় থাকেন, তাঁরা শুরুটা করতে পারেন কুমোরটুলি থেকে। উঁহু, সব প্রতিমা বিক্রি হয় না। সেই সৌন্দর্য দুই চোখে ভরে গলি ধরে সোজা চলে আসা যাক গঙ্গার ঘাটে- চা আর আনুষঙ্গিকে বাউন্ডুলে মন লিখুক ভালোবাসার গল্প। চাইলে বাবুঘাটে নৌবিহারও করা যায়, তবে তা উত্তর কলকাতার ডেটিংয়ের মতো পকেটসই হবে না।
আরও পড়ুন - ব্লাড সুগার থেকে বাঁচতে চান? মেনে চলুন এই কয়েকটি টোটকা, রক্তে চিনি কমবেই
শুধু কবিতার জন্য:
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় লিখেছিলেন- শুধু কবিতার জন্য, আরো দীর্ঘদিন বেঁচে থাকতে লোভ হয়। এই কবিতার জন্যই কিন্তু বার বার বসন্ত পঞ্চমীর ডেটিংয়ে যাওয়ার লোভও জাগিয়ে তোলা যায়। বেছে নেওয়া যায় একটা কাফে, যেমন শ্যামবাজারের কাফে ও কবিতা। পছন্দসই টেবিল বেছে নিয়ে খুলে ফেলা যাক কাফেতে রাখা কবিতার খাতা, এক লাইন একজন লিখলে পরেরটা লিখুক অন্যজনে। এভাবেই জীবন সেজে উঠুক কবিতার পংক্তিতে। শুধু লেখার ছবি তুলে নেওয়া চলবে না, পরে আবার ফিরে গিয়ে যদি সেই খাতা খোলা যায়, তখনই মাধুর্য নতুন রূপ পাবে। কবিতা লেখা নিয়ে দ্বিধা? ও আবার বাঙালিকে শেখাতে হয় না কি!
এসো আমার ঘরে:
যাঁদের বাড়িতে পুজো হয়, তাঁদের আবার ভাবনা কী! বন্ধুদের সঙ্গে মনের মানুষকেও আমন্ত্রণ জানানো যাক? মনে হচ্ছে যথেষ্ট ব্যক্তিগত সময় পাওয়া যাবে না? জীবনের ব্যস্ততার মাঝে ভালোবাসা ঠিকই নিজের জায়গা করে নেয়। শুধু তা বোঝাতে হয়। এখানে তো ভোগ থাকবেই, তা নিজে হাতে পরিবেশন করে খাওয়ানো যায়, বিশেষ মানুষটির পাতে টুক করে তুলে দেওয়া যায় একটা বাড়তি লুচি। বা সবার পাতে একটা করে হলেও তাঁর জন্য দুটো মিষ্টি- ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠবেই। খাওয়ানোর মধ্যে যে যত্ন থাকে, তা আর কোথায়! পুজো আর প্রেম দুই এক খাতে মিলবে- নিজে হাতে ভোগ রাঁধলে তো সোনায় সোহাগা!
তাহলে কোনটা জুতসই বলে মনে হল?