কিন্তু না, এই বছর সব ওলটপালট করে দিল এক মারণ ভাইরাস। শ্মশানের স্তব্ধতা গড়িয়াহাট শ্যামবাজারে। আজ কতগুলো সপ্তাহ কেটে গেল ব্যবসা বন্ধ। পয়লা বৈশাখ টার্গেট করে প্রচুর টাকার জিনিস কিনেও দোকান খোলার উপায় নেই। সবটাই লস। চোখে জল পেটে খিদে নিয়ে বেঁচে দোকানি থেকে হকার ব্যবসায়ীরা। আর যাদের বাঙালি রেস্তোরাঁ রয়েছে?
advertisement
তাঁদের জন্য আজকের দিনটা যেন মেয়ের বিয়ের মতন ব্যাপার। গোটা রেস্তোরাঁ থাকে সাদা লাল শাড়ির থিম লুকে সাজানো। কাতারে কাতারে মানুষ আসে বাঙালি খাবার খেতে। বাঙালি হলেও আজ বাইরেই হবে ভাত, ডাল, আলুভাজা, ফিশফ্রাই,পোলাও, গলদাচিংড়ি মালাইকারি, আর পাঠার মাংস।শেষ পাতে আমের চাটনি আার মিষ্টি দই তো মাস্ট।
কথা হচ্ছিল কলকাতার নামজাদা বাঙালি খাবারের রেস্তোরাঁর মালিক রঞ্জন বিশ্বাসের সঙ্গে..... কতটা আলাদা এই নববর্ষ? তিনি জানালেন"মনটা খুবই খারাপ সকাল থেকে। প্রতি বছর এই দিনটার জন্য প্রায় এক সপ্তাহ আগে থেকে কেনাকাটা শুরু হয়ে যায়। প্রায় ৬-৭ লক্ষ টাকার জিনিস কেনা হয়।সেখানে আজ কিছুই নেই। গতকাল গড়িয়াহাট বাজার থেকে সাত হাজার টাকারও বাজার করেছি কিনা সন্দেহ "। কথা বলতে বলতেই গলাটা বুজে আসছিল তাঁর। রঞ্জনের রেস্তোরাতে কাজ করে ২৫ জন কর্মচারী।আজ তারা সবাই বাড়িতে। লকডাউন যেদিন থেকে চালু হয়েছে রঞ্জন সঙ্গে এক সহকারী কে নিয়েই চালাচ্ছেন রেস্তোরা।নিজে শেফ হওয়ায় একাই সামলাচ্ছেন রান্নার দিকটা। বিক্রি কমে গিয়েছে ৯৫%। টিমটিম করে চলছে আরকি। সবটাই অনলাইন।
বাড়িতে ৬ মাসের শিশু কন্যার কথা ভেবে আর বাড়িতেও ঢোকেন না। রেস্তোরাই এখন তার ঘরবাড়ি। কিন্তু এতো স্টাফ তাদের কিভাবে চলছে? রঞ্জন জানান"আমি এইটুকু চেষ্টা করছি যাতে প্রতি সপ্তাহে তাদের বাড়িতে অল্প কিছু পৌঁছে দেওয়া যায়। ডাল ভাত না পারি নুন ভাত যেন মুখে তুলে দিতে পারি।"
