যাইহোক, আমরা এই বিষয় নিয়ে এত কেয়ার করবো কেন? অনেক মানুষই আছেন যারা ভাবেন, গর্ভপাত এমন কোনও বিষয় নয় যা নিয়ে আলোচনা করতে হবে। যেমন উত্তরপ্রদেশের ২৫ বছরের যুবক মানস বলছে, "আমি একজন পুরুষ। আমি কখনও প্রেগন্যান্ট হব না। তাই গর্ভপাত নিয়ে আমার ভাবার কিছু নেই।" কিন্তু গর্ভপাত সম্পর্কে তার ধারণা পুরো বদলে যায় ২০১৭ সালে। যখন তার প্রেমিকা হটাৎ করেই প্রেগন্যান্ট হয়ে পড়ে। মানস বলছে এটা এমন একটা বিষয় যা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে দিতে পারে। 'আমরা সব সময় সতর্ক থেকেছি। তাও জানিনা কি করে এটা হল ! আমরা কখনও কন্ডোম ছাড়া সেক্স করিনি।' যদিও সঠিক চেতনা থাকার জন্য তারা কন্ডোম ব্যবহার করেছে। কিন্তু শুধু কন্ডোম ব্যবহার করলেই সেফ সেক্স হবে এমন কোনও সিওরিটি নেই। আর এই জন্যই কন্ডোম কোম্পানি গুলো তাদের বিজ্ঞাপনে সব সময় উল্ল্যেখ করে যে ৯৯ শতাংশ সেফ সেক্স। ১০০ শতাংশ গ্যারান্টি তারাও দিতে পারে না। আর মানস হল সেই ১ শতাংশের মধ্যে পড়ে গিয়েছে যাদের কপাল খারাপ।
advertisement
মানস জানায়, "যখন সে আমায় জানায় তার পিরিয়ডস হচ্ছে না। আমি বুঝতে পারিনি কি করা উচিত। আমরা জানতাম না কোথায় যাব? কার সঙ্গে কথা বলবো? অনেকটা ভয় নিয়ে আমরা প্রেগন্যান্সি টেস্ট করাই। আর আমরা যা ভাবছিলাম সেটা সত্যি হয়।" মানস আর তার প্রেমিকার কোনও ধারণাই ছিল না গর্ভপাত সম্পর্কে। তারা একজন ডাক্তারের কাছে যায় গর্ভপাতের জন্য। কিন্তু সেই ডাক্তার তাদের বিয়ের পরামর্শ দেন। এবং যা তা অপমান করে তাড়িয়ে দেন। এর পর তারা আরো একজন ডাক্তারের কাছে যায়। তবে সেখানে গিয়ে তারা মিথ্যে বলে যে তারা বিবাহিত। এবং ডাক্তার রাজি হয় গর্ভপাত করাতে। অনেক মানসিক ও শারীরিক যন্ত্রণা পেরিয়ে তারা সফল হয় গর্ভপাত করাতে ! মুক্তি পায় ট্রমা থেকে। তবে এধরণের ঘটনা যে কোনও কারও সঙ্গে হতে পারে। তবে শুধু মাত্র খুল্লামখু্ল্লা সেক্সেই যে প্রগন্যান্সি হতে পারে তা নয়। আর গর্ভপাতও অনেক সময়ই দরকার হয়। অনেক সময় মায়ের শরীরের দিকে খেয়াল রেখেও গর্ভপাত করাতে হতে পারে। আবার কখনও কেউ বাচ্চা না চাইতেই পারেন। তবে কারণ যাই হোক না কেন? গর্ভপাত সবার অধিকার। আর প্রেগন্যান্সি শুধু শরীরের নয়, মনেরও একটা পার্ট। তাই কাউকে জোর করে বাধ্য করানো যেতে পারে না, মা হওয়ার জন্য।
আর সঠিক পদ্ধতিতে গর্ভপাত জীবন বাঁচাতেও সক্ষম। আমাদের দেশে ২১ থেকে ৪০ শতাংশ প্রেগন্যান্সির ফল গর্ভপাত। যেসব দেশে গর্ভপাত লিগাল নয়। সেখানে লুকিয়ে গর্ভপাত করাতে গিয়ে অনেক মেয়েদের মৃত্যু হয়। রোগ হয়। তাই আমাদের দেশে যখন গর্ভপাত লিগাল তাই সমাজ কি ভাববে না ভেবে, সঠিক পদ্ধতিতে গর্ভপাত করান। সুস্থ থাকুন।
আর যদি কখনও কারও গর্ভপাত করার প্রয়োজন হয়। তাহলে সঠিক ডাক্তারের কাছে যান। লাইসেন্স থাকা ডাক্তারকেই দেখান। গর্ভপাত করান। আর মনে রাখতে হবে আপনার বয়ফ্রেন্ডের বয়স ১৮ হলেই হবে। তার ও আপনার মিলিত অনুমতিতেই গর্ভপাত করাতে আপনি সক্ষম। কাউকে ভয় পাওয়ার দরকার নেই। অবাঞ্ছিত মানসিক ট্রমাতে না গিয়ে গর্ভপাতের পথ বেছে নেওয়াই ভাল। তবে প্রোটেকশন নিয়ে সেফ সেক্স করাই ভাল। কি দরকার অহেতুক মানসিক ঝামেলাতে পড়ার। তবে গর্ভপাত নিয়েও ভাবার বা ভয় পাওয়ার কিছু নেই। প্রয়োজন হলে করাতে হবে বৈকি !