এখন তো বাঙালি কসমোপলিটন ৷ সে কালের পূর্ব পশ্চিমের সংজ্ঞাও গিয়েছে বদলে ৷ মাছের বাজারে চিতলের এখন দর্পিত উপস্থিতি ৷ বাজারের ব্যাগ বা নিমন্ত্রণের থালায় চিতল পেটির হাজিরা আসলে গৃহকর্তার স্টেটাস ৷ কিন্তু কিছুটা হলেও চিতলের গায়ে এখনও কেমন যেন জড়িয়ে আছে ‘বাঙাল’ গন্ধ ৷ মৎস্যবিলাসীরা সহমত না হলেও নামের দিক ভেবে দেখুন, এখনও চিতলের পাশে বসে ‘মুইঠ্যা’ শব্দ (Chital Macher Muitha) ৷ কোন সুদূর অতীতে মা ঠাকুমার ‘মুঠো’-তে তৈরি পদ এখনও পছন্দের শীর্ষে ৷
advertisement
হাতের মুঠির মধ্যে চেপ্টে চেপ্টে চপের আকারে করা হয় বলেই ‘মুইঠ্যা’ ৷ তার পর ঝোল রান্না করা হয় ৷ একটু বেশি তেলমশলা না দিলে চিতল মাছের স্বাদ ঠিক খোলে না ৷ তবে মাছের চপের মতো মুইঠ্যা কিন্তু অত কড়া করে ভাজা হবে না ৷
আরও পড়ুন : স্বাদে ও গুণে টেক্কা লঙ্কাকে, দুয়োরানি চুই ঝাল দিয়ে ভিল ফুড-এর রেসিপিতে রাঁধুন খাসির মাংস
সাধারণত চিতল মাছের গাদার অংশ দিয়েই মুইঠ্যা রান্না করা হয় ৷ রান্নার আগে খুব ধৈর্য ধরে সব কাঁটা বার করে নিতে হয় ৷ ভাতে মেখে খাওয়ার সময় মুখে কাঁটা পড়লেই সব মাটি! বেশ সময়সাপেক্ষ বলে অনেকেই চিতলের মুইঠ্যা রান্না এড়িয়ে যান ৷ কিন্তু উৎসবের (DurgaPuja 2021) মুহূর্তে মাঝে মাঝে আপনার হেঁসেলেও কড়াইয়েও সোনালি হয়ে উঠতে পারে এই পদ ৷
আরও পড়ুন : ক্ষেতের তাজা পটলে পুর ভরে সু্স্বাদু নিরামিষ দোরমা ঠাকুমার রান্নাঘরে, বিশ্ব নারকেল দিবসে দেখে নিন রেসিপি
এই প্রজন্মের জন্যই ধাপে ধাপে চিতলমাছের মুইঠ্যা শেখানো হয়েছে ‘ভিল ফুড’ ইউটিউব চ্যানেলে ৷ ইউটিউবার ঠাকুমা পুষ্পরানি সরকারকে পাশে বসিয়ে তাঁর পুত্রবধূ কবিতা রাঁধলেন চিতল মাছের মুইঠ্যা ৷ সঙ্গে দিলেন টিপস-ও৷ রান্নার আগে খুব ভাল করে মাছের অংশটিকে খুব ভাল করে নরম করে নিতে হবে ৷ তবেই মণ্ড নরম হবে ৷ মুইঠ্যার স্বাদ জমবে ৷ শুধু স্বাদ নয় ৷ চিতল মাছের গুণও অনেক ৷ তৈলাক্ত এই মাছে আছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, প্রোটিন, আয়োডিন, ভিটামিন ডি, ফসফরাস-সহ প্রয়োজনী বহু উপাদান ৷ চড়া দামের জন্য এই মাছ হেঁসেলের নিত্য অংশ হতে পারবে না ৷ কিন্তু শারদোৎসবে একদিন আপনার থালায় জুঁইফুলের মতো বাসমতি চালের ভাতের পাশে থাকতেই পারে চিতলের মুইঠ্যা বা পেটি ৷