কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের (Cambridge University) কংক্রিট স্ট্রাকচার বিষয়ের লেকচারার ড. জন অর (Dr John Orr) বলছেন যে ব্যাপারটা আমাদের ভাবতে ভালো লাগুক আর না-ই লাগুক, এর হাত ধরেই পরিবেশ এবং প্রাকৃতিক সম্পদ, স্পষ্ট ভাবে বললে বালি রক্ষা করা সম্ভব। সেই সঙ্গে এক নয়া যুগের সূচনা হবে নির্মাণশিল্পেও। এমন প্রযুক্তি তিনি উদ্ভাবন করেছেন যার হাত ধরে পরিবেশ এবং মানুষের বাসস্থান নির্মাণে এক ভারসাম্য আসবে।
advertisement
ড. অর এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করেছেন প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবহারের কথা। তিনি জানিয়েছেন যে প্লাস্টিক বর্জ্যকে ভেঙে বালির মতো দানায় পরিণত করা সম্ভব এবং তা নির্মাণশিল্পে ব্যবহার করাও সম্ভব। আসলে এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে নির্মাণশিল্পে বালির জোগান অব্যাহত রাখতে গিয়ে নদীখাত খোঁড়া হচ্ছে, জন্ম নিচ্ছে বালিকে কেন্দ্র করে অপরাধ জগৎ! স্যান্ড মাফিয়া শব্দটার সঙ্গে যেমন এখন আমরা সবাই পরিচিত!
আসলে মরুভূমি বা সৈকতের বালি নির্মাণশিল্পে ব্যবহার করা যায় না। মরুভূমির বালি হয় অতীব মিহি, অন্য দিকে সৈকতের বালিতে নোনা ভাব বেশি থাকে। ফলে, পরিসংখ্যান বলছে যে ভারত, চিন, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনামের মতো দেশগুলো, যেখানে বর্তমানে নির্মাণশিল্পের রমরমা, তারা বালির অভাবে বিপদে পড়েছে।
ড. অর জানিয়েছেন যে নির্মাণশিল্পে সারা বিশ্বে বার্ষিক ৪০৫০ বিলিয়ন টন বালি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। অন্য দিকে, এই দেশে দৈনিক ১৫ হাজার টন প্লাস্টিক বর্জ্য জড়ো হওয়ার হিসাব পাওয়া যাচ্ছে। তাহলে কি বলা যায় যে এই বর্জ্য থেকে কৃত্রিম বালি তৈরি করলে নির্মাণশিল্পে জোগানের অভাব মিটবে?
সেটা কিন্তু হবে না! কেন না, এই কৃত্রিম বালি সিমেন্টের গায়ে প্রাকৃতিক বালির মতো লেগে থাকবে না মসৃণতার জন্য, ফলে প্রাকৃতিক বালি ব্যবহার করতেই হবে। কিন্তু তার সঙ্গেই যদি কৃত্রিম বালি মিশিয়ে দেওয়া যায়, তাহলে অন্তত প্রয়োজনীয় ১০ শতাংশ বালির জোগান দিতে হবে না। শতাংশের দিক থেকে দেখলে হিসাব সামান্য, কিন্তু এই ভাবে প্রতি বছরে ৮২০ মিলিয়ন টন বালির অপচয় রোধ করা সম্ভব বলে জানাচ্ছেন ড. অর! এখন দেখার কবে এই প্রযুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ণ হয় আর নির্মাণশিল্পই বা তা কতটা সাদরে গ্রহণ করে!