চেন্নাইয়ের এমজিএম ক্যানসার ইনস্টিটিউটের ক্লিনিক্যাল লিড এবং সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. সৈয়দ ইসমাইল নবাব জৈন বলেন যে, স্মার্টফোন এবং WhatsApp, Facebook ও YouTube-এর মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের যথেচ্ছ ব্যবহার হচ্ছে। যার ফলে একাধিক মানুষই স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্যের জন্য এই সমস্ত চ্যানেলের উপর নির্ভর করেন। শুধু তা-ই নয়, দুর্ভাগ্যজনক ভাবে এই প্ল্যাটফর্মগুলি ক্যানসারের বিষয়ে ভুল এবং আনভেরিফায়েড তথ্যের হটস্পট হিসেবে কাজ করে।
advertisement
বিপজ্জনক মিথ বা ভুল ধারণা এবং বাস্তব জীবনের পরিস্থিতি
অ্যালকালাইন ডায়েটের মাধ্যমে ক্যানসার সারানো যায় অথবা কেমোথেরাপি বেশি ক্ষতি করে- এই ধরনের একাধিক ভুল ধারণা ছড়িয়ে পড়ছে। তবে এগুলি তো ভুল পথে চালিত করে আর বিপজ্জনকও বটে! এমনই সতর্কতা জারি করছেন চেন্নাইয়ের এসআইএমএস হাসপাতালের সার্জিক্যাল অঙ্কোলজির সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. সর্বানন পেরিয়াসামি। তাঁর কথায়, আমি এমন পরিস্থিতিও দেখেছি যে, চিকিৎসায় দেরি করে ফেলছেন রোগীরা। আবার কোনও ব্লগ বা ফরওয়ার্ড পড়ে থেরাপি করতে অস্বীকার করছেন, এমনও দেখি। তবে এটা কিন্তু প্রাণঘাতী হতে পারে। ডা. নবাব জন এমন কিছু মিথ তুলে ধরে কিছু দাবি করলেন। সেগুলি নিম্নলিখিত:
১. গোমূত্র ক্যানসার সারিয়ে দিতে পারে — এর পিছনে কোনও বিজ্ঞান নেই। তা সত্ত্বেও এই মিথ বিপজ্জনক ভাবে জনপ্রিয়।
২. হলুদ অনায়াসে কেমোথেরাপির জায়গা নিতে পারে — হলুদের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান থাকে। তবে এটা একাই ক্যানসার সারিয়ে ফেলতে পারে, এমন নয়।
৩. শুধুমাত্র চিনির জন্যই ক্যানসার হতে পারে — অতিরিক্ত চিনি সেবন অস্বাস্থ্যকর। কিন্তু এটা ক্যানসারের জন্য দায়ী, এমন নয়।
৪. ঘরোয়া টোটকার মাধ্যমে সম্পূর্ণ রূপে ক্যানসার সারানো সম্ভব — হার্ব বা ভেষজ ভাল রাখতে পারে। কিন্তু এটা সার্জারি বা রেডিয়েশনের পরিপূরক হতে পারে না।
ডা. নবাব জনের বক্তব্য, বিশেষ করে গ্রাম্য এবং শহরতলি এলাকায় রোগীরা প্রচলিত চিকিৎসা থামিয়ে দেন কিংবা অনেকে সেই চিকিৎসা ছেড়েও দেন। কিন্তু যখন আবার চিকিৎসায় ফেরেন, তখন তাঁদের রোগ অনেকটাই ছড়িয়ে পড়ে। যার জেরে বেঁচে থাকার আশাও কমে যায়। কিন্তু এই মিথে বিশ্বাসের কারণ কী। এই প্রসঙ্গে ডা. নবাব জন বলেন যে, কারণগুলির মধ্যে অন্যতম হল – প্রচলিত চিকিৎসা ব্যবস্থার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ভয়, স্বাস্থ্য বিষয়ক জ্ঞানের অভাব, ঘরোয়া টোটকার প্রতি গভীর সাংস্কৃতিক বা ধর্মীয় বিশ্বাস এবং নির্ভরযোগ্য চিকিৎসার জন্য বিশেষজ্ঞদের কাছে পৌঁছতে না পারা।