কেন ফ্রিজে রাখলে পেঁয়াজের গঠন নরম হয়ে যায়?
পেঁয়াজ কিন্তু মৃত নয়। এর মধ্যে থাকা কোষ কিন্তু অবিরাম শ্বাস নেয়। জীবিত থাকার জন্য শর্করা এবং অক্সিজেন পুড়িয়ে চলে। কিন্তু ঠান্ডার মরশুমে পেঁয়াজ তাদের স্টার্চ ভান্ডারকে শর্করায় পরিণত করে বেঁচে থাকার কৌশল হিসেবে প্রতিক্রিয়া জাহির করে। এক স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পেঁয়াজের টেক্সচার এবং স্বাদে মারাত্মক পরিবর্তন আসে। এর ফলে একসময় শক্ত থাকা বাল্বটি নরম, ভেজা-স্যাঁতস্যাঁতে এবং পচে ওঠে।
advertisement
পেঁয়াজ নষ্ট হওয়ার ক্ষেত্রে আর্দ্রতার ভূমিকা:
শুধুমাত্র ঠান্ডাই নয়, রেফ্রিজারেটর আর্দ্র পরিবেশ প্রদান করে। রেফ্রিজারেটরের অতিরিক্ত আর্দ্রতা ব্যাকটেরিয়ার জন্ম দেয়। যার জেরে পেঁয়াজে পচন ধরে। আসলে ভিজে-স্যাঁতস্যাঁতে জায়গায় পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা উচিত নয়। তাই বেসিনের নীচে অথবা বেসমেন্টে এটি কখনও মজুত রাখা উচিত নয়।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, পেঁয়াজ সব সময় অন্ধকার, শুকনো জায়গায় রাখা উচিত। অতিরিক্ত ময়শ্চার থেকে দূরে রাখাই আবশ্যক। ভাল বায়ু চলাচল রয়েছে, এমন জায়গায় পেঁয়াজ রাখতে হবে। ময়শ্চার না থাকলে পেঁয়াজকে পচনের হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব।
কাটা পেঁয়াজ সংরক্ষণ সম্পর্কে যা জানা আবশ্যক:
রেফ্রিজারেটরের মধ্যে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা উচিত নয়। তবে যদি পেঁয়াজ কেটে সংরক্ষণ করা হয়, তাহলে সেটা আলাদা ব্যাপার! কারণ কাটাকুটি কিংবা রান্নার কারণে পেঁয়াজের খোসা ফেলে দেওয়া হয়। কারণ খোসায় ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ ঘটে। তাই ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে হলে পেঁয়াজকে অর্ধেক করে আঁটোসাঁটো করে একটি ক্লিং ফিল্মে মুড়িয়ে এয়ারটাইট পাত্রে রাখা উচিত। আর কুচিয়ে নেওয়া পেঁয়াজ সিল করা জিপার ব্যাগে স্টোর করতে হবে। কেটে রাখা পেঁয়াজ ২ সপ্তাহ পর্যন্ত ব্যবহার করা সম্ভব।
কিন্তু অন্যান্য শাকসবজি ও ফল থেকে পেঁয়াজ আলাদা রাখার আরও একটি কারণ রয়েছে। আসলে পেঁয়াজ থেকে ইথিলিন গ্যাস নির্গত হয়। ইথিলিন আসলে একটি প্রাকৃতিক গ্যাস। যা জুকিনি এবং পিচের মতো ইথিলিন-সেনসিটিভ ফলকে পাকিয়ে দেয়। রেফ্রিজারেটরের ড্রয়ারে এই গ্যাস ফল এবং শাকসবজিকে পচিয়ে দেয়। তাই রুম টেম্পারেচার সেটিংয়ে পেঁয়াজ রাখা আবশ্যক।