সেটা কীরকম? কিংবা এমন নামের কারণ কী? সেই বিষয়েই আজ গল্প করব আমরা। প্রথমে আসা যাক এমন নামের কারণ কী, সেই বিষয়ে। ‘যজ্ঞি’ শব্দটি এসেছে ‘যজ্ঞ’ থেকেই। সাধারণত বাঙালি বাড়ির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যজ্ঞ করা হয়। আবার সেই সব অনুষ্ঠানেই পাঁঠার মাংস রাঁধেন রান্নার ঠাকুররা। তাঁদের হাতের জাদুতেই যেন খুলে যায় মাংসের স্বাদ। ফলে এই অনুষ্ঠান বাড়ির এই মাংসের পদটিকেই বলা হয় ‘যজ্ঞি বাড়ির মাংস’।
advertisement
কিন্তু এর বিশেষত্ব কী? আসলে এটা বাঙালির সবথেকে প্রিয় আলু দেওয়া পাঁঠার মাংসের পাতলা ঝোলের তুলনায় একটু বেশি মশালাদার। তবে এটা কিন্তু কষা মাংসের মতো ততটাও মশলাদার নয়। ফলে পাঁঠার মাংসের সুঘ্রাণ আর পরিমিত মশলার এক অপূর্ব মেলবন্ধন তৈরি হয় এই পদের মধ্যে। তা-হলে দেখে নেওয়া যাক, যজ্ঞি বাড়ির মাংসের রেসিপিটা।
আরও পড়ুন : আজ রাতে কালীপুজো, কত ক্ষণ থাকবে অমাবস্যা, জানুন পঞ্জিকা কী বলছে
উপকরণ (৪-৫ জনের জন্য):
১ কেজি পাঁঠার মাংস (একটু বড় বড় টুকরোয় কাটতে হবে)
১০০ গ্রাম পাঁঠার মাংসের চর্বি
৪০০ গ্রাম পিঁয়াজ (কুচিয়ে নিতে হবে)
২ টেবিল-চামচ রসুন বাটা
২ টেবিল-চামচ আদা বাটা
২০০ গ্রাম জলঝরানো টক দই
ম্যারিনেট করার জন্য প্রয়োজনীয় মশলা:
১ চা-চামচ ধনে গুঁড়ো
১ চা-চামচ জিরে গুঁড়ো
১ চা-চামচ গরম মশলা গুঁড়ো
১ চা-চামচ লাল লঙ্কা গুঁড়ো
১ চা-চামচ চিনি
১ চা-চামচ নুন
২ চা-চামচ সরষের তেল
ফোড়নের জন্য প্রয়োজনীয় মশলা:
৬টা শুকনো লঙ্কা
৪টে তেজ পাতা
৩টে বড় এলাচ
৩টে ছোট এলাচ
২ ইঞ্চির দারচিনির টুকরো
রান্না করার জন্য প্রয়োজনীয় মশলা:
২ টেবিল-চামচ পোস্ত (রান্নার আগে উষ্ণ গরম জল ১৫ মিনিট মতো ভিজিয়ে বেটে নিতে হবে)
১ টেবিল-চামচ চারমগজ (রান্নার আগে উষ্ণ গরম জল ১৫ মিনিট মতো ভিজিয়ে বেটে নিতে হবে)
১ চা-চামচ হলুদ গুঁড়ো
১ চা-চামচ ধনে গুঁড়ো
১ চা-চামচ জিরে গুঁড়ো
১ চা-চামচ গরম মশলা গুঁড়ো
১ চা-চামচ লাল লঙ্কা গুঁড়ো
১ চা-চামচ চিনি
স্বাদ মতো নুন
২ টেবিল-চামচ সরষের তেল
২ টেবিল-চামচ ঘি
প্রণালী:
পাঁঠার মাংস এবং মাংসের চর্বি ভাল করে ধুয়ে নিয়ে তার থেকে জল ঝরিয়ে নিতে হবে।
ম্যারিনেশনের মশলা দিয়ে মাংস আর চর্বিটা ভাল করে ম্যারিনেট করে নিতে হবে। তবে এই রেসিপির জন্য যে বিষয়টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেটা হল - ম্যারিনেশনের সময়টা। এই রান্নার ক্ষেত্রে মাংসটা বেশি ক্ষণ ধরে ম্যারিনেট করা উচিত নয়। রান্নার আগে শুধু ৩০ মিনিট মতো ম্যারিনেট করলেই হয়ে যাবে।
ম্যারিনেট করা মাংসের মধ্যে দইটাও ভাল করে মেখে নিতে হবে।
এ-বার একটি বড় কড়াইয়ে তেল গরম করে নিতে হবে।
তার মধ্যে এক চিমটে করে হলুদ গুঁড়ো, লঙ্কা গুঁড়ো আর নুন ছিটিয়ে দিতে হবে।
এর পর গরম তেলে ফোড়নের মশলাগুলো ফোড়ন দিতে হবে।
ফোড়ন থেকে ঘ্রাণ বেরোলে কুচোনো পিঁয়াজ তেলে ছাড়তে হবে। পিঁয়াজের রঙ সাদাটে হওয়া পর্যন্ত ভাজতে হবে।
এর পর এর মধ্যে আদা-রসুন বাটা দিয়ে ভাল করে ভেজে নিতে হবে।
মশলা ভাজার থেকে তেল ছাড়তে শুরু করলে তাতে রান্নার গুঁড়ো মশলা এবং চিনি যোগ করতে হবে।
২ মিনিট মতো ভাল করে ভেজে নিয়ে ম্যারিনেট করা পাঁঠার মাংসটা দিয়ে দিতে হবে।
এ-বার ভাল করে নাড়াচাড়া করে মাংসটা ৩০ মিনিট মতো রান্না করতে হবে। মাঝে মাঝে নেড়ে দিতে হবে। স্বাদ অনুযায়ী নুন যোগ করতে হবে।
এর পাশাপাশি ৫ কাপ জল গরম করে ফুটিয়ে নিতে হবে। মাংসটা ৩০ রান্না করার পর ওই গরম জলটা যোগ করতে হবে।
লক্ষ্য রাখতে হবে যে, গ্রেভিটা যেন পাতলা না-হয়, আবার যেন ঘনও না-হয়।
মাংস সেদ্ধ হয়ে এলে ঘি আর বাকি থাকা গরম মশলা যোগ করে আঁচ নিভিয়ে দিতে হবে।
এ-বার যজ্ঞি বাড়ির পাঁঠার মাংস গরম ভাত অথবা পোলাওয়ের সঙ্গে পরিবেশন করার জন্য একদম রেডি!