এই সময়ে আর্দ্রতা, অ্যালার্জেন এবং শ্বাসজনিত সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে অ্যাজমার উপসর্গ প্রকট হয়ে উঠতে থাকে। যদিও সঠিক জ্ঞান থাকলে এবং সময়ে ব্যবস্থা নিলে বর্ষার মরশুমে শিশুরা সুস্থ থাকতে পারে। এই প্রসঙ্গে আলোচনা করবেন কলকাতার বিশিষ্ট পেডিয়াট্রিশিয়ান ডা. শুভাশিস রায়।
advertisement
বর্ষাকালীন অ্যাজমার ট্রিগার বোঝার উপায়:
এই ট্রিগার সময়ে সময়ে আলাদা হতে পারে। তবে কিছু সাধারণ ট্রিগারও রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হল অতিরিক্ত আর্দ্রতা, ছত্রাক, ডাস্ট মাইট, শ্বাসজনিত সংক্রমণ এবং বায়ু দূষণ। ভেজা স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে বর্ষার মরশুমে ছত্রাকের মাত্রা বেড়ে যায়, যেগুলিকে অত্যন্ত শক্তিশালী অ্যালার্জেন হিসেবে গণ্য করা হয়। আবার উষ্ণ এবং আর্দ্র আবহাওয়ায় বৃদ্ধি পায় ডাস্ট মাইট। এর ফলে অ্যালার্জি বৃদ্ধি পায়। ঠান্ডা লাগা, সর্দি, জ্বরের মতো শ্বাসজনিত সংক্রমণও বর্ষাকালে খুবই সাধারণ বিষয়। এর পাশাপাশি বায়ু দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে অ্যাজমার উপসর্গও প্রকট হয়। তাই এই ট্রিগারগুলিকে চেনা জরুরি। যাতে এই মরশুমে সন্তানকে নিরাপদে রাখা যায়।
অ্যাজমার সমস্যা প্রতিরোধ করার উপায়:
ঘরের ভিতরের পরিবেশ:
ঘরদোর সাফসুতরো রাখতে হবে। এর পাশাপাশি যতটা সম্ভব শুষ্কও রাখতে হবে। আর ঘরে ভাল বায়ু চলাচল হচ্ছে কি না, সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। একে ছত্রাকের বাড়বৃদ্ধি কমবে। এর পাশাপাশি ঘরে ধুলো জমতে দেওয়া চলবে না, বিছানার চাদর-বালিশের কভার উষ্ণ গরম জলে কাচতে হবে এবং বালিশ ও গদিতে অ্যালার্জেন-প্রুফ কভার ব্যবহার করতে হবে। ঘরে বাতাসের মান ভাল রাখার জন্য ডিহিউমিডিফায়ার এবং এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করতে হবে।
আরও পড়ুন– টিজার পোস্টারের পরে এবার মুখ্য চরিত্রের পোস্টার; আসছে রুদ্ধশ্বাস ওয়েব সিরিজ NH6
হাইজিন বজায় রাখা জরুরি:
সংক্রমণ ঠেকানোর প্রধান দাওয়াই হল হাইজিন বজায় রাখা। মাঝেমধ্যেই হাত ধুতে হবে। আর হাত ধোওয়ার সঠিক কৌশল সন্তানকে ভাল ভাবে বোঝাতে হবে। শ্বাসজনিত সংক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
ঘরের বাতাসের মানের উপর নজরদারি:
বায়ু দূষণের মাত্রার উপরে নজর রাখতে হবে। বিশেষ করে বর্ষার মরশুমে এটা করা আবশ্যক। উচ্চ মাত্রার বায়ু দূষণের সময়ে সন্তানকে বাইরে যেতে দেওয়া চলবে না।
অ্যাজমা অ্যাকশন প্ল্যান মেনে চলা:
বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সঙ্গে আলোচনা করে একটি অ্যাজমা অ্যাকশান প্ল্যান তৈরি করতে হবে। এর মধ্যে থাকবে রোগ প্রতিরোধের কৌশল, ওষুধের ব্যবহার, উপসর্গের উপর নজরদারি, অ্যাজমার আক্রমণ হলে কী করণীয় ইত্যাদি। নিয়মিত পর্যালোচনা করাও জরুরি।
শারীরিক কসরতের সঙ্গে সতর্কতা:
এই মরশুমে নিরাপদ থাকার জন্য সন্তানকে নিয়মিত এক্সারসাইজ করার কথা বলা উচিত। নাচ, যোগাসন অথবা কিছু খেলার মাধ্যমে ইন্ডোর এক্সারসাইজ করা উচিত।
স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন:
সন্তানের ডায়েটে পুষ্টিকর খাবার বেশি করে রাখতে হবে। এর মধ্যে অন্যতম হল ফল, শাক-সবজি এবং ইমিউনিটি বাড়াতে সহায়ক খাবারদাবার। আর তার সঙ্গে শরীরকে হাইড্রেটেড রাখাও জরুরি। তাই সন্তানকে বেশি করে জল খাওয়াতে হবে। এছাড়া ব্রিদিং এক্সারসাইজ করলেও অ্যাজমার আশঙ্কা দূর করা যাবে।
বার্ষিক ফ্লু ভ্যাকসিন:
মরশুমি ফ্লু শিশুদের জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। তাই তাঁদের সুরক্ষার জন্য বার্ষিক ফ্লু ভ্যাকসিন দেওয়াতে হবে। এতে তারা সুস্থ থাকবে।