বাংলার পরাধীনতার ইতিহাস যেমন লেখা হয়ে গিয়েছে, তেমনই লেখা হয়ে গিয়েছে মীর জাফরের ইতিহাস। মুর্শিদাবাদের পদে-পদে, পথে-পথে লেখা আছে বাংলার স্বাধীনতা ও পরাধীনতার ইতিহাস, দেশপ্রেম আর বিশ্বাসঘাতকতার ইতিহাস। সেই ইতিহাসে মীর জাফর এক বিশ্বাসঘাতকের নাম। মীর জাফরের পুরনো সেই প্রাসাদ বাড়িটি এখন আর নেই। সেখানে রয়েছে ছোট দু’টি ভবন। ওই ভবন দু’টি আসলে বর্তমানে ইমামবড়া, যা প্রায় সবসময়ই বন্ধ থাকে।
advertisement
মীর জাফরের বাড়ির প্রধান ফটক বা ‘নিমক হারাম দেউড়ি’র বর্তমান অবস্থা ভগ্নপ্রায়। এর ভেতর দিয়ে ঢুকলে আরেকটি গেট আছে। এই দ্বিতীয় গেটটির ভেতরেই বর্তমান বাড়িটি রয়েছে। মীর জাফর সপরিবারে এখানেই বসবাস করতেন। তাঁর প্রাসাদের প্রধান ফটকই পরে স্বাধীনতচেতাদের কাছে ‘নিমক হারাম দেউড়ি’ নামে বেশি পরিচিতি লাভ করে। মীর জাফর বিলাসবহুল ও আড়ম্বরপূর্ণ জীবন যাপন করতেন। তার প্রাসাদেও ছিল সেই জৌলুস ও বিলাসিতা।
কথিত, পলাশির যুদ্ধের আগের দিন মীর জাফরের এই বাড়িতে ষড়যন্ত্রকারীরা বৈঠক করেছিল। ইংরেজদের কাশিমবাজার কুঠি ও ঘসেটি বেগমের মতিঝিলে ইতিপূর্বে ষড়যন্ত্রকারীদের মধ্যে যে বোঝাপড়া হয়েছিল, তারই চূড়ান্তরূপ দিতে ষড়যন্ত্রকারীরা সেদিন এখানে এক হয়েছিল। বাংলা ও সিরাজের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের চূড়ান্ত বাস্তবায়ন করতেই মীর জাফরের প্রাসাদে বৈঠক হয়েছিল। তবে বর্তমানে এই দেউড়ি আজ ধ্বংসের মুখে। কিছু ইটের নিদর্শন আছে। পর্যটকরা দেখে ঘুরে যান। বাড়ির ভিতরে প্রবেশ নিষিদ্ধ। একমাত্র বৃহস্পতিবার প্রবেশের অনুমতি মেলে। তবে সেটাও নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের। তবে পর্যটকদের কাছে আজও আকর্ষণীয় এই ‘নিমক হারাম দেউড়ি’।