আসলে ‘মিলেনিয়াল রাগা’ হল একটি মাল্টি-সিটি কনসার্ট সিরিজ। মূলত কমবয়সী ভারতীয় ক্লাসিক্যাল সঙ্গীতশিল্পীদের সুযোগ দেওয়ার জন্য এবং নতুন করে শ্রোতা তৈরি করার জন্যই এই কনসার্ট সিরিজটিকে তৈরি করা হয়েছে। সারা ভারতের নতুন উদীয়মান প্রতিভাশালী শিল্পীদের প্রতিভাকে তুলে ধরার প্রায় তিন বছরের যাত্রাপথ সম্পূর্ণ করেছে এই সিরিজটি। দিল্লি এবং মুম্বইয়ের মতো শহরে হয়েছে এই কনসার্ট। এবার তা শেষ হয়েছে কলকাতা এডিশনে এসে। প্রবেশাধিকার রাখা হয়েছিল বিনামূল্যে।
advertisement
কনসার্ট সিরিজের আয়োজকরা বলেছেন যে, সারা ভারতের একাধিক তরুণ শিল্পীদের সুযোগ দেওয়া হয়েছে এই কনসার্টে। ভোকাল এবং ইনস্ট্রুমেন্টাল উভয় প্রতিভাই তুলে ধরা হয়েছে। মঞ্চে যাঁরা নিজেদের প্রতিভা প্রদর্শন করেছেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন:
১. সোহিনী চক্রবর্তী (ভোকাল – কলকাতা)
২. অনিরুদ্ধ আইথাল (ভোকাল – বেঙ্গালুরু)
৩. সমন্বয় সরকার (সেতার – কলকাতা)
৪. কোয়েল দাশগুপ্ত নাহা (ভোকাল – কলকাতা)
৫. জ্যোতির্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় (হারমোনিয়াম – কলকাতা)
৬. ইমন সরকার (তবলা – কলকাতা)
৭. চিরঞ্জিত মুখোপাধ্যায় (তবলা – কলকাতা)
এই উদ্যোগের প্রতি দর্শকদের যে উৎসাহব্যঞ্জক সাড়া মিলেছে, সেই সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে মিত্র মঞ্চের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা বুলবুল মিত্র বলেন যে, “কলকাতার দর্শকদের কাছ থেকে এহেন উষ্ণতায় আমরা যারপরনাই অভিভূত। কেন মিলেনিয়াল রাগা-র মতো প্ল্যাটফর্মগুলি তরুণ শিল্পী এবং সম্প্রদায়ের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করতে আর ভারত জুড়ে হৃদয় ও ঘরে ঘরে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতকে জীবন্ত রাখতে অপরিহার্য, সেটাই আরও একবার তাঁদের কাছ থেকে আসা প্রশংসা আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছে।”
এই কনসার্টে অংশগ্রহণ করেছিলেন অটিজম আক্রান্ত তরুণ শিল্পী সাগ্নিকও। যা এই অনুষ্ঠানে এক অনন্য শৈল্পিক মাত্রা যোগ করেছে। রঙের ছোঁয়া এবং ভিজ্যুয়াল আর্টের মাধ্যমে নিজের প্রতিভা প্রকাশ করে ওই সন্ধ্যাটিকে আরও অতুলনীয় করে তুলেছেন সাগ্নিক। ভারতীয় শিল্পকলাকে সকল শাখায় ছড়িয়ে দেওয়ার বিষয়ে মিত্র মঞ্চের যে লক্ষ্য, সেটাকেই যেন আলাদা মাত্রা দিয়েছেন তিনি।
মিত্র মঞ্চের প্যাট্রন এবং উপদেষ্টা নবারুণ ভট্টাচার্য বলেন যে, “মিলেনিয়াল রাগা শুধুমাত্র একটা কনসার্ট সিরিজই নয়, এটি ভারতের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ভবিষ্যতের জন্য একটা লগ্নিও বটে! তরুণ সঙ্গীতশিল্পীদের উৎসাহ দিয়ে এবং তাঁদের পাশে থেকে আমরা এটা নিশ্চিত করছি যে, নতুন কণ্ঠে এবং নতুন রূপে বিকশিত হতে থাকবে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত। আমি আরও বেশি করে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান এবং শিল্পকলার পৃষ্ঠপোষকদের এই ধরনের উদ্যোগকে সমর্থন করতে এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি, যাতে একসঙ্গে মিলে আমরা এই কালজয়ী ঐতিহ্যকে আগামী প্রজন্মের জন্য বাঁচিয়ে রাখতে পারি।”
আয়োজকরা আরও ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন যে, একাধিক শহরের সঙ্গীতশিল্পীদের তুলে ধরার মাধ্যমে এই কনসার্ট সিরিজটির লক্ষ্য ছিল – শিল্পীদের সর্বাধিক অভিজ্ঞতা প্রদান করা, আঞ্চলিক সীমানা ছাড়িয়ে সঙ্গীতপ্রেমীদের দিগন্তকে আরও প্রসারিত করা এবং এই ভাবে ধ্রুপদী শিল্পের বিবর্তন ও বৃহত্তর উপলব্ধিকে সমর্থন করা।