আজকাল বাঙালির বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে বর-কনের সাজ— সবেতেই লেগেছে পশ্চিম ভারতীয় সংস্কৃতির ছোঁয়া। তবে গত দু’দশক ধরেই বাঙালি কনের মনোহরণ করেছে মেহেন্দি। পায়ে আলতা পরার পরিবর্তে হাতে ও পায়ে মেহেন্দি করাই পছন্দ করেন বেশিরভাগ কনে। সেখানে শিল্প সুষমা ফুটিয়ে তোলা সত্যিই চিত্তাকর্ষক বিষয়।
এই সময় যাঁরা বিয়ে করবেন, বা চাইছেন কনের হাতে একটা সুন্দর নকশার মেহেন্দি আঁকতে তাঁরা আগে থেকেই ভেবে রাখুন বিশেষ দিনে কেমন নকশা আঁকা যায়। এই সময় মেহেন্দির নকশায় খুব জনপ্রিয় রাজা মহারাজার ছবি। কনের জন্য এই বিশেষ নকশা তৈরি করা হয়। ভারী জমকালো এই নকশা কনের হাতে খুব সুন্দর দেখায়। গোটা হাত রঙিন হয়ে ওঠে।
advertisement
ঝাড়খণ্ডের রাজধানী রাঁচিতে মেহেন্দি আঁকেন শিল্পী মনোজ। তিনিও জানালেন এই রাজা মহারাজার রাজকীয় নকশার কথা। নববধূর নরম হাতের পাতায় দারুন নৈপুণ্যের সঙ্গে এঁকে দেওয়া হয় রাজা এবং তাঁর মহারানির অববয়। বিবাহ মণ্ডপে এমন একটা নকশা দারুন মানানসই। রঙিন হাতের উপর সোনার বালা, শাঁখা-পলায় দারুন লাগবে কনেকে।
মহারাজার মেহেন্দি ডিজাইন সম্পর্কে জানাতে গিয়ে মনোজ বলেন, এই ডিজাইনের সবচেয়ে বড় বিশেষত্ব হল এতে রাজা ও রানির অবয়ব তৈরি করা হয় মেহেন্দি দিয়ে। তবে শুধু এটুকুই নয়। গোটা পরিকল্পনায় চিরাচরিত কলকা, ফুল, লতার বদলে থাকতে পারে মহারাজার সুউচ্চ প্রাসাদ, পালকি, বরযাত্রীর দৃশ্যও।
রানি পতিগৃহে যাত্রা করছেন, এমন দৃশ্যও আঁকা হয় কবজি বা হাতের অন্যত্র। রাজা-রানির বিবাহের নানা কাল্পনিক সুন্দর মুহূর্ত ফুটিয়ে তোলা হয় মেহেন্দির নকশায়।
হাইটেক যুগেও প্রাচীন মেহেন্দিতেই মজে আছেন কনেরা, জানালেন মনোজ। তবে প্রযুক্তির ছোঁয়া লেগেছে তাঁর ব্যবসায়। মনোজ জানালেন, এখন হবু কনেরা হোয়াটসঅ্যাপে আগে থেকেই ছবি দেখে নেন, কেমন হবে বিশেষ দিনের হাত। তারপর মনোজ এঁকে দিয়ে আসেন নকশা। বিবাহ দিনে কনের হাতে মেহেন্দি আঁকতে মনোজ নেন মাত্র ৫০০ টাকা। রাঁচির পঞ্চবটি প্লাজার ঠিক সামনে বসেই চলে আঁকা-আঁকি।