যার সাহায্যে নানা ধরনের হিন্দু আচারের পূজা তিনি সম্পন্ন করেন যেমন বাচ্চাদের নামকরণ, গৃহপ্রবেশ, ব্যবসার শুরুর আগের পূজা; একই সঙ্গে বিষমকামী ও সমকামী বিবাহে পৌরোহিত্যও করেন। এখনও পর্যন্ত সুষমা দ্বিবেদী মোট ৩৩ জন দম্পতির বিবাহ দিয়েছেন। যার মধ্যে অর্ধেক ছিল সমকামী দম্পতি। সুষমা দাবি করেছেন তাঁর যজমানরা প্রত্যেকেই একজন মহিলা পুরোহিত দিয়ে কাজ করাতে আগ্রহী।
advertisement
এখন সুষমার বয়স ৪০ বছর। শুধু পৌরোহিত্যই তাঁর একমাত্র জীবিকা নয়। তিনি একটি নামি অর্গানিক ফুড কোম্পানির ভাইস প্রেসিডেন্ট। কানাডায় বড় হয়েছেন। বিয়ের পর তাঁর স্বামী বিবেক জিন্দালের (Vivek Jindal) সঙ্গে নিউ ইয়র্কে থাকেন। সুষমার দু'টি সন্তানও রয়েছে। নাম অশ্বিন (Ashwin) ও নয়ন (Nayan)।
সুষমা পৌরোহিত্য কেন বেছে নেন?
এই প্রশ্ন সুষমাকে করা হলে, তিনি খুব সাবলীল ভাবে উত্তরটা দেন। “খুব জাঁকজমক করে আমার বিয়ে হয়েছিল। দুটি আলাদা আলাদা অনুষ্ঠান হয়েছিল। বিয়ের সময় আমার একটি খারাপ অভিজ্ঞতা হয়। আমার স্বামীর ভাই-বোন রুপান্তরকামী। ওঁদের অবস্থা নিয়ে আমি চিন্তিত হয়ে পড়ি। কারণ, ওঁরা বিয়ে করতে চাইলে কী করে করবে সেটা আমাকে ভাবায়। আমি সব সময় জানতাম আমি কিছু একটা অন্য রকম করব জীবনে। এর পরই বিয়ের দুই মাস পরে আমি ইউনিভার্সাল লাইফ চার্চ-র অনলাইন নিয়োগ পাই”।
সুষমার এই পার্পল পণ্ডিত প্রোজেক্টটি কী?
সুষমা জবাবে বলেন, “২০১৬ সাল, নির্বাচনের বছরে এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। সেই সময় আমার প্রথম সন্তান জন্ম নেয়। আমার ভেতর থেকে মাতৃত্ব সাড়া দেয়। আমি সকলের সাম্য চাইতাম। তাই GoDaddy বলে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করি এবং এমন একটি রঙ চেয়েছিলাম যা সকলের জন্য হয়। তাই পার্পল রঙ বেছে নিই। এই পার্পল পণ্ডিত প্রোজেক্ট-এর সাহায্যে আমি নানা ধরনের পৌরোহিত্য শুরু করি”।
সুযমা পৌরোহিত্য কী ভাবে করেন?
সুষমা উত্তরে বলে, “আমার পৌরোহিত্যের নিয়মটা একটু আলাদা। আমার করা বিবাহ বিধিতে কন্যাদান হয় না। পিতৃতান্ত্রিক সমাজকে আমি অগ্রাধিকার দিই না। সংস্কৃত মন্ত্রের উচ্চারণে গণেশের প্রার্থনা, পঞ্চতন্ত্রের আরাধনা, নৈবেদ্য ও আগুনকে সাক্ষী রেখে তিন ঘণ্টায় বিবাহ সম্পন্ন করি”।
বিবাহের অনুষ্ঠানে সুষমার প্রিয় মুহূর্তটি কোনটি?
সুষমা একটু হেসে বলেন, “যখন কোনও দম্পতি এসে বলেন, এই অনুষ্ঠান আমরা স্বপ্নে দেখতাম, কিন্ত কখনও ভাবিনি এটা বাস্তবে হবে”।
