বাতাসে উপস্থিত দূষণ সৃষ্টিকারী কণা মহিলাদের ওভারিয়ান রিজার্ভ কমিয়ে দিতে পারে। অ্যান্টি-ম্যুলেরিয়ান হরমোন (Anti-Müllerian Hormone) বা এএমএইচ (AMH) হল ওভারিয়ান রিজার্ভের সূচক। আসলে এই হরমোনের মাত্র বয়স বৃদ্ধি এবং পরিবেশ দূষণের জেরে কমতে শুরু করে। এ-ছাড়াও বয়স, অ্যালকোহল সেবন এবং ধূমপান এএমএইচের মাত্রার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। যার জেরে ডিম্বাশয়ে নানা অস্বাভাবিকতা দেখা যেতে থাকে। যার মধ্যে অন্যতম হল ফ্র্যাজাইল এক্স সিন্ড্রোম (fragile X syndrome)। এটাও ওভারিয়ান রিজার্ভ কমিয়ে দিতে পারে।
advertisement
আরও পড়ুন: অভিষেক যখন ইডি-র কাছে, দারুণ কৌশল নিয়ে বিজেপিকে আক্রমণে তৃণমূল
লো ওভারিয়ান রিজার্ভ (Low Ovarian Reserve)-এর উপসর্গ:
এই সমস্যার ক্ষেত্রে মহিলাদের মধ্যে তেমন কোনও লক্ষণ প্রকাশ পায় না। বেবিসুন ফার্টিলিটি এবং আইভিএফ সেন্টার (BabySoon Fertility and IVF Center)-এর ডিরেক্টর ডা. জ্যোতি বালি (Dr Jyoti Bali) বলেন, “কিছু কিছু মহিলার মেনস্ট্রুয়াল সাইকেল বা মাসিক চক্র কম অর্থাৎ ২৮ থেকে ২৫ দিনের হতে পারে। তবে বেশির ভাগ মহিলারই রোগ নির্ণয় এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর ডিমিনিশড ওভারিয়ান রিজার্ভ (Diminished Ovarian Reserve) ধরা পড়ে।”
আরও পড়ুন: ছবিতে ঐক্য কিন্তু বাস্তবে কই, বঙ্গ বিজেপির কোন্দল নিয়ে জোর চর্চা অন্দরেই
চল্লিশ বছরের কম বয়সী মহিলাদের মধ্যেও লো ওভারিয়ান রিজার্ভ দেখা দিতে পারে। আর এটা হয় ক্রোমোজোম সংক্রান্ত অস্বাভাবিকতা অথবা কোনও রেডিয়েশন, কেমো, শক থেরাপি প্রভৃতির কারণে। অমর শক্তি ক্লিনিকস (Amar Shakti Clinics)-এর স্ত্রী-রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. প্রিয়াঙ্কা শর্মা (Dr. Priyanka Sharma)-র বক্তব্য, “উপসর্গ এবং তার জটিলতা এক-এক জনের শরীরে এক-এক রকম হয়ে থাকে। সাধারণত যাঁরা টাইপ-এ (Type A), তাঁদের উত্তেজনা, অনিদ্রা, ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশন ইত্যাদির মতো উপসর্গই (Symptoms) সবথেকে বেশি দেখা যায়। তাই আমার পরামর্শ, চল্লিশের কোঠা পেরোলেই বছরে অন্তত এক বার করে গাইনি চেক-আপ করানো উচিত। তার পাশাপাশি যোগাসন এবং মেডিটেশনও মাস্ট।”
ডা. শর্মা আরও বলেন যে, কখনও কখনও পঁয়তাল্লিশের আশপাশে মহিলাদের হট ফ্ল্যাশেস, দফায় দফায় উত্তেজনা, বুধ ধড়ফড়ানি, হাত-পা জ্বালা, কান গরম হয়ে যাওয়ার মতো উপসর্গ তো দেখা যায়ই। সেই সঙ্গে মাসিক চক্র দেরিতে হয়, অথবা বন্ধ হয়ে যায় এবং ফ্লো-ও কমে আসে। আর এই উপসর্গ দেখা দেওয়ার অর্থ হচ্ছে, ধীরে ধীরে মেনোপজের পর্যায় চলে আসছে। যেটা খুবই স্বাভাবিক। আর এটাই লো-ওভারিয়ান রিজার্ভ, যার উপর সব সময় নজর রাখা উচিত।
আবার ডা. জ্যোতি বালি-র বক্তব্য, যে-সব মহিলার ওভারিয়ান রিজার্ভ কমে আসছে, তাঁদের ক্ষেত্রে ইন-ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন বা আইভিএফ (IVF) এবং ডিএইচইএএস (DHEAS)-সহ হরমোন সাপ্লিমেন্টেশন দারুন ইতিবাচক ফল প্রদান করবে। আর এই রোগে আক্রান্ত মহিলা পরবর্তী কালে গর্ভধারণের জন্য অন্যকে ডিম্বাণু দান কিংবা নিজে মা হতে চাইলে ডিম্বাণু সংরক্ষণও করে রাখতে পারেন।