রামেশ্বরম ক্যাফে, বেঙ্গালুরু
২০২১ সালে রাঘবেন্দ্র রাও এবং তাঁর স্ত্রী দিব্যা রাও মাত্র ৫ লাখ টাকা দিয়ে এই ক্যাফেটি শুরু করেছিলেন। প্রাথমিকভাবে, তাঁরা নিজেরাই ধোসা তৈরি করতেন এবং কফি পরিবেশন করতেন। তাঁদের ক্রিস্পি দোসা এবং ফিল্টার কফির স্বাদ এতটাই আশ্চর্যজনক ছিল যে ক্যাফেটি সোশ্যাল মিডিয়ায় খুব দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়। তাঁদের প্রথম মাসের আয় ছিল ৩০-৪০ হাজার টাকা, কিন্তু আজ এর টার্নওভার ৫০ কোটি টাকারও বেশি। এখানে প্রতিদিন ৬-৭ হাজার ধোসা বিক্রি হয় এবং সকাল ৬টা থেকে গ্রাহকদের লাইন লেগে যায়। আজ তাঁদের ব্র্যান্ডের মূল্য প্রায় ১৮,৮০০ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।
advertisement
প্রেম গণপতি, ধোসা প্লাজা
তামিলনাড়ু থেকে মুম্বইতে আসা প্রেম গণপতি আগে বাসন ধোয়ার কাজ করতেন। তাঁর পকেটে মাত্র ১০০০ টাকা ছিল, কিন্তু সাহসের সঙ্গে তিনি রাস্তার ধারে একটি গাড়ি নিয়ে ধোসার দোকান দিয়েছিলেন। প্রথম দিকে তিনি প্রতিদিন ৫০-১০০টি ধোসা বিক্রি করতেন। কিন্তু প্রচলিত স্বাদে থেমে না থেকে তিনি চকোলেট ধোসা, চাইনিজ ধোসা এবং স্প্রিং রোল ধোসার মতো নতুন ধরনের ধোসা তৈরি করেছিলেন। শীঘ্রই তা গ্রাহকদের ভিড় জমাতে শুরু করে। আজ ধোসা প্লাজার ৭২টিরও বেশি আউটলেট রয়েছে এবং এখানে প্রতিদিন ২০,০০০ ধোসা বিক্রি হয়। আজ তাঁর বার্ষিক আয় ৩০-৪০ কোটি টাকা।
জয়রাম বনান, সাগর রত্ন
দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করতে করতে বড় হয়ে ওঠা জয়রাম বনান মুম্বইতে বাসন ধোয়া এবং ওয়েটারের কাজ করতেন। কিন্তু, তাঁর স্বপ্ন ছিল নিজের দক্ষিণ ভারতীয় হোটেল খোলা। পরে তিনি দিল্লিতে সাগর রত্নের ব্যবসা শুরু করেন। এখানকার ইডলি-সম্বর এবং মশলা ধোসা সবারই খুব পছন্দ হয়ে যায়। তাঁর প্রথম মাসের আয় ছিল মাত্র ৫০০-৬০০ টাকা, কিন্তু আজ তাঁর বার্ষিক টার্নওভার ৩০০ কোটি টাকা। আজ সারা দেশে তাঁর অনেক দোকান রয়েছে এবং প্রতিদিন ২৫-৩০ হাজার ধোসা বিক্রি হয়।
পিসি মুস্তাফা – আইডি ফ্রেশ ফুডস
পিসি মুস্তাফা স্কুলের পড়াশোনায় ফেল করেছিলেন, যার কারণে তাঁকে এক সময়ে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে হয়েছিল। তবে, পরে তিনি ইঞ্জিনিয়ার হয়েছিলেন। এক সময়ে তাঁর মনে হয় যে কেন লোকেরা বাড়িতে ধোসার ব্যাটার তৈরি করে সময় নষ্ট করবে! তাই, তিনি ৫০,০০০ টাকা দিয়ে আইডি ফ্রেশ ফুডস শুরু করেন। প্রথম দিনে মাত্র ১৫ প্যাকেট বিক্রি হয়েছিল এবং আয় ছিল ৫০০ টাকা। কিন্তু, আজ এই কোম্পানিটি প্রতিদিন ১.৩ লাখ কেজি ব্যাটার বিক্রি করে, যা থেকে ১৩-১৫ লাখ ধোসা তৈরি হয়। আজ এই কোম্পানির বার্ষিক টার্নওভার ৩৫০-৪০০ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।
৫) পি রাজগোপাল – সরবন ভবন
পি রাজগোপাল চেন্নাইতে একটি ছোট হোটেল খুলে খাদ্যরসিকদের ইডলি-ধোসা পরিবেশন শুরু করেছিলেন। তাঁর খাবারের মান এতটাই অসাধারণ ছিল যে সেই ব্র্যান্ড বিদেশেও ছড়িয়ে পড়ে। প্রথমে তিনি ৫-১০ টাকায় একটি প্লেট বিক্রি করতেন, আজ সরবন ভবনের ২৮টি দেশে ১০০টিরও বেশি আউটলেট রয়েছে। এখানে প্রতিদিন ৫০-৬০ হাজার ধোসা বিক্রি হয়। এনআরআইরা বলেন, খাঁটি ভারতীয় ধোসা খেতে চাইলে সরবন ভবনে যেতে হবে!
৬) মাওয়ালি টিফিন রুম, বেঙ্গালুরু
১৯২৪ সালে শুরু হওয়া এই হোটেলটি তার বাটার ধোসার জন্য বিখ্যাত। এখানকার ধোসা একাধারে এতটাই মুচমুচে এবং পুরু যে লোকেরা এটিকে সাক্ষাত এক শিল্পকর্ম বলে। প্রথমে প্রতিদিন ৫০-৬০টি ধোসা বিক্রি হত, কিন্তু আজ এই সংখ্যাটি প্রতিদিন ২০০০-৩০০০ ধোসায় পৌঁছেছে। এখন এটি একটি রেডি টু ইট ব্র্যান্ডও, যার বার্ষিক টার্নওভার হাজার হাজার কোটি টাকা।