আসলে সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে মনের মধ্যে ইতিবাচক চিন্তা রাখলে সারাদিনই ইতিবাচক হতে পারে। অনেকেই এসময় ইষ্টদেবতার কথা চিন্তা করেন। আসলে তা থেকে একটা ইতিবাচকতা তৈরি হয়। যেকোনও ধর্মের মানুষই এই আচরণে অভ্যস্ত। সকলে নিজের নিজের মতো করে ইষ্টের কথা চিন্তা করেন, তাতেই মানসিক জোর লাভ করা যায়।
আরও পড়ুনঃ কৌটো ঠিকমতো আটকাননি? মুড়ি মিইয়ে গেছে? ফের মুচমুচে করুন সহজ ৪ টিপসে
advertisement
অনেকে সকালবেলা গান শোনেন, তার সুর, ছন্দ মনকে প্রশান্তি দেয়। তেমনই চাইলে তিনটি সংস্কৃত শ্লোক সকালে আবৃত্তি করা যেতে পারে। এই শ্লোকের ছন্দোময় আবৃত্তি এবং অভ্যন্তরীণ দর্শন মনের মধ্যে ইতিবাচকতা জাগিয়ে তুলবে।
১. ব্রহ্মা মুরারি ত্রিপুরান্তকারী
বামন পুরাণের চতুর্দশ অধ্যায় থেকে নেওয়া, এই শ্লোক ত্রিদেবকে শ্রদ্ধা জানায় – ব্রহ্মা সৃষ্টিকর্তা, বিষ্ণু রক্ষাকর্তা এবং শিব ধ্বংসকারী। বিশ্বাস করা হয় যে এই দেবতাদের স্মরণ করলে মানুষের জীবনে ভারসাম্য আসে। দৈনন্দিন কাজ এবং দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য মসৃণ ভাবে পূরণ হয়। দুঃস্বপ্নকে ধ্বংস করে দিনটি শুভ করে তুলতে পারে।
২. সমুদ্রাবাসনে দেবী পার্বতাস্তনমাণ্ডলে| বিষ্ণুপত্নী নমঃ-তুভ্যম্ পাদস্পর্শম্ ক্ষমাস্বমী||
এই শ্লোকের অর্থই হল ধরিত্রী মাতার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন। তাঁকে এখানে ভগবান বিষ্ণুর স্ত্রী হিসাবে সম্বোধন করা হয়েছে। পৃথিবীর বুকে পা রেখে আমরা চলেছি, এজন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা হয়েছে এই শ্লোকে। প্রতিদিন সকালে মাটি পা রাখার আগে এই ক্ষমা প্রার্থনা করা প্রয়োজন। এতে প্রকৃতি এবং সমস্ত জীবজগতের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ জেগে উঠবে।
৩. করাগ্রে বসতে লক্ষ্মী, কর মধ্যে সরস্বতী
হিন্দু ধর্ম অনুসারে বিশ্বাস করা হয় আঙুলের ডগায় দেবী লক্ষ্মীর আসন। তিনিই সম্পদ প্রদান করেন। অন্যদিকে হাতের মধ্যাংশটি জ্ঞানের প্রতীক দেবী সরস্বতীকে উৎসর্গ করা হয়। এই শ্লোক পাঠ করে, একজন ব্যক্তি সারা দিন তাদের কর্মে সমৃদ্ধি এবং বুদ্ধিমত্তাকে আমন্ত্রণ জানান। এই শ্লোকের অবশ্য আরেকটি ব্যাখ্যা রয়েছে। এটি মানুষকে তার কর্মের কথা জানায়। কীভাবে তার হাত কী করে সে সম্পর্কে তার সচেতন করা হয়।
আসলে, এই সব শ্লোকের উৎপত্তি, মানুষকে তাঁর জীবন সম্পর্কে সচেতন করার জন্য। মানসিক প্রশান্তি, গভীর আধ্যাত্মিক সংযোগ বৃদ্ধি এবং একাগ্রতা বৃদ্ধির কাজে খুবই শক্তিশালী এগুলি।
শারীরবৃত্তীয় ভাবে, এটি মানসিক চাপ কমাতে পারে। ধ্যানের রূপ হিসাবে কাজ করে মননশীলতা এবং মানসিক সুস্থতা তৈরি করে।