এর ফলে প্রেগন্যান্সির ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। আসলে গর্ভপাত বা মিসক্যারেজ অথবা ভ্রূণের জিনগত অস্বাভাবিকতার ঝুঁকি বাড়তে থাকে। আর এটা একটা বায়োলজিক্যাল বিষয় যে, মহিলা এবং পুরুষদের বয়সবৃদ্ধি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সন্তান উৎপাদনের ক্ষমতা কমতে থাকে। তবে এটা কার জীবনে কখন ঘটবে, সেটা সবার ক্ষেত্রে এক হয় না। চল্লিশোর্ধ্ব মানুষদের তুলনায় পঁয়ত্রিশের কমবয়সী মহিলা এবং চল্লিশের কমবয়সী পুরুষদের সন্তান উৎপাদন ক্ষমতা খুবই ভাল থাকে।
advertisement
আরও পড়ুন: ফ্লপ ছবির নায়িকা, ওজন নিয়ে হতাশ! আর্থিক চাপে অবসাদে ডুবেছিলেন পরিণীতি, কেঁদেছিলেন হাউ হাউ করে
পঞ্চাশের কোঠায় থাকা মহিলাদের প্রেগন্যান্সির সম্ভাবনা অত্যন্ত কম। তবে তা একেবারেই অসম্ভব, এমনটা নয়। বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছনোমাত্র মেয়েদের শরীরে ডিম্বাণুর পরিমাণ ৩ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষে নেমে আসে। প্রতি মাসিক চক্রে যখন কার্যকর ফার্টিলাইজেশনের জন্য একটি পরিণত ডিম্বাণু নির্গত হওয়ার ফলে শত শত ডিম্বাণু নষ্ট হতে থাকে। এআরটি-অ্যাসিস্টেড মেডিকেল প্রযুক্তি ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন (আইভিএফ) অথবা ইন্ট্রাইউটেরাইন ইনসেমিনেশন (আইইউআই) বয়স্ক মহিলা কিংবা দম্পতির মধ্যে প্রেগনেন্সির সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে। আসলে ওই বয়সে স্বাভাবিক ভাবে সন্তানধারণে অক্ষমতা জন্মায়, তাই সেক্ষেত্রে মুশকিল আসান করে এই প্রযুক্তি।,
আরও পড়ুন: ‘আমি ভীষণ লজ্জা পাই, কিন্তু করিনা বললে না করা যায় না’, জানে জান-এর সেটে বিজয়ের প্রথম…!
নিজের ফার্টিলিটি ধরে রাখতে ভবিষ্যতে ব্যবহারের জন্য মহিলারা এগ ফ্রিজিং করিয়ে রাখতে পারেন। কিন্তু কেমন এই প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মহিলাদের ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু সংগ্রহ করা হয়। সেই ডিম্বাণু ভবিষ্যতের জন্য ফ্রিজ করে রাখা হয়। এর পাশাপাশি আরও একটি উপায় অবশ্য রয়েছে। অনেক সময় ৩৫ বছরেরও বেশি বয়সী দম্পতিদের মধ্যে প্রেগনেন্সির সম্ভাবনা বৃদ্ধি করতে কমবয়সী ডোনারদের থেকে ডিম্বাণু অথবা শুক্রাণুও ব্যবহার করা হয়। আবার ভাল জীবনযাপনের উপরেও নির্ভর করে ফার্টিলিটির উন্নতি। এর জন্য নিয়মিত শারীরিক কসরত, পুষ্টিকর ব্যালেন্সড ডায়েট, অ্যালকোহল সেবনে রাশ এবং ধূমপান ত্যাগ ইত্যাদি করা আবশ্যক।
কলকাতার বিড়লা ফার্টিলিটি অ্যান্ড আইভিএফ সেন্টারের কনসালট্যান্ট এবং সেন্টার হেড ডা. সৌরেন ভট্টাচার্য বলেন, “পরিবার পরিকল্পনার সময় বিবেচ্য প্রধান বিষয়টা হল ফার্টিলিটির উপর বয়সের প্রভাব। তিরিশের কমবয়সী মহিলাদের মধ্যে প্রেগনেন্সির সম্ভাবনা সবথেকে বেশি। কিন্তু বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সন্তানধারণের প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হয়। এমনকী গর্ভপাতের ঝুঁকিও বৃদ্ধি পায়। স্বাভাবিক প্রক্রিয়া এবং বিকল্পের জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা বুঝতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে খোলাখুলি আলোচনা করা জরুরি।
তিনি আরও বলেন যে, বায়োলজিক্যাল ক্লক যত এগোতে থাকে, গর্ভধারণের জন্য এর প্রভাব আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। আর সেই সময়েই ডাক্তারদের দায়িত্বও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। বয়স, মেডিক্যাল ইতিহাস এবং প্রজনন সংক্রান্ত লক্ষ্যের উপর ভিত্তি করেই ডাক্তাররা উপযুক্ত পরামর্শ দিয়ে থাকেন।”