শরীরে হিমোগ্লোবিন তৈরির জন্য আয়রনের প্রয়োজন। এটা লোহিত রক্তকণিকার একটা প্রোটিন যা ফুসফুস থেকে শরীরের প্রতিটি অংশে অক্সিজেন বহন করে নিয়ে যায়। আরেকটা প্রোটিন হল মায়োগ্লোবিন। এটা পেশিগুলোতে অক্সিজেন সরবরাহ করে। আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের মাধ্যমে শরীরে আয়রনের ঘাটতি পুষিয়ে দেওয়া যায়। কিন্তু সেটা না হলে নানা রোগের ঝুঁকি থাকে।
আরও পড়ুন: শহিদ দিবসে বিপুল জনসমাগমের অপেক্ষা, এখন থেকেই প্রস্তুতি তুঙ্গে তৃণমূলের
advertisement
তবে এটা শুনতে সহজ লাগলেও আয়রনের ঘাটতি একটা জটিল অবস্থা। শরীরে মাঝে মধ্যেই আয়রনের ঘাটতি দেখা দিলে বুঝতে হবে খাওয়াদাওয়ায় কিছু ভুল হচ্ছে। এর ফলে শরীর পর্যাপ্ত খনিজ পাচ্ছে না। শরীরের প্রতিটা কোষে অক্সিজেন পৌঁছতে পারছে না। এমনটা চলতে থাকলে দীর্ঘস্থায়ী সংক্রমণ তো বটেই ক্যানসারের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে।
আরও পড়ুন: পঞ্জিকা ১৫ জুলাই: দেখুন নক্ষত্রযোগ, আজকের শুভ মুহূর্ত, রাহুকাল ও দিনের অন্য লগ্ন
কোভিড এবং আয়রনের ঘাটতির মধ্যে কোনও যোগসূত্র আছে কি: বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, করোনা আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে প্রদাহজনিত সমস্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। হেপসিডিন নামের একটি রাসয়নিক লিভার থেকে নিঃসৃত হয়, এটা কোষে আয়রন শোষণে সাহায্য করে। কোনও ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন হলে এই নিঃসরণের মাত্রায় হেরফের হয়। পাশাপাশি সিরামের মাত্রাও হ্রাস পায়। যার ফলে আয়রনের ঘাটতি দেখা দেয়। করোনায় আক্রান্ত রোগীদের ফেরিটিন মাত্রা কমতে থাকে, এটা রক্তের প্রোটিন যাতে আয়রন থাকে। আয়রনের ঘাটতি সামগ্রিক সুস্থতার উপর প্রভাব ফেলে। কোনও রোগ হলে সারতে সময় লাগে। বিশেষ করে মহিলাদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়।
আয়রনের ঘাটতির লক্ষণ এবং এর চিকিৎসায় খাওয়াদাওয়া: ক্লান্তি হল আয়রনের ঘাটতির সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ। অন্যান্য লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে দুর্বলতা, ফ্যাকাশে ত্বক, বুকে ব্যথা, দ্রুত হৃদস্পন্দন বা শ্বাসকষ্ট, মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা বা হালকা মাথা ব্যথা।
চিকিৎসকরা বলেন, মাংস, মুরগির মাংস, সবুজ শাকসবজি যেমন পালং শাক, কালে, বিট, ব্রকলি, লেগুম, তোফু, বাদাম, শুকনো ফল হল আয়রনের সেরা উৎস। প্রাণীজ উৎস থেকে পাওয়া আয়রন হিম আয়রন নামে পরিচিত। এগুলো মাংস ও মাছে পাওয়া যায়। উদ্ভিদ থেকে প্রাপ্ত আয়রন ননহেম আয়রন নামে পরিচিত, এগুলো সবুজ শাকসবজি থেকে মেলে। তবে প্রাণীজ উৎস থেকে পাওয়া আয়রন শরীর দ্রুত শোষণ করতে পারে। আয়রনের ঘাটতি মেটাতে সাপ্লিমেন্টও নেওয়া যায়। তবে এ জন্য চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা জরুরি।