আপেল লিভারকে সুস্থ রাখে ৷ লিভার আমাদের শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির মধ্যে একটি। লিভারে সামান্য সমস্যা হলে পুরো শরীরের সিস্টেম বিগড়ে যায়। এখনকার যুগে মানুষের জীবনযাপন এবং খাদ্যাভ্যাস বিগড়ে গিয়েছে। এর ফলে লিভারের সঙ্গে সম্পর্কিত রোগগুলি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনেক যুবক ফ্যাটি লিভারের সমস্যায় ভুগছেন। দেশের বিখ্যাত লিভার স্পেশালিস্ট ডাক্তার শিবকুমার সারিন একটি ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে লিভারকে বার্ধক্য পর্যন্ত সুস্থ রাখার একটি সহজ উপায় বলেছেন। তিনি আরও বলেছেন যে লিভারে ফ্যাট জমা হলে কীভাবে আপনি ওষুধ ছাড়াই বাড়িতে থেকেই তা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
advertisement
আরও পড়ুন– ম্যাচ শেষ হতেই রিঙ্কু সিং-কে সপাটে চড় মারলেন কুলদীপ যাদব ! তাও একটা নয়, ভিডিও এখন ভাইরাল
ডা. এস কে সারিনের মতে সবাইকে প্রতিদিন সকালে উঠে ২টি করে আপেল খাওয়া উচিত। এতে লিভার-সহ সমস্ত রোগের ঝুঁকি কমে যাবে। আপেলকে লিভারের জন্য অত্যন্ত উপকারী মনে করা হয়। আপেলে থাকা ফাইবার, ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লিভারকে ডিটক্স করতে সাহায্য করে। আপেল লিভার থেকে টক্সিক উপাদান বের করতে সাহায্য করে এবং ফ্যাটি লিভার থেকে রক্ষা করে। সকালে খালি পেটে ২টি আপেল খেলে আপনি দীর্ঘদিন পর্যন্ত লিভারকে সুস্থ রাখতে পারেন।
এছাড়া ফ্যাটি লিভারের সমস্যা এড়াতে অতিরিক্ত মদ্যপান, তেল-মশলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা উচিৎ ঠিকই, তবে লো ফ্যাট ফুড হইতে সাবধান। সুপারমার্কেটে গিয়ে লো ফ্যাট বা ৯৯ শতাংশ লোয়ার ইন ফ্যাট লেখা ফুড কেনা অবিলম্বে ত্যাগ করুন। এই সব খাবার থেকে ফ্যাট বাদ দেওয়া হয় ঠিকই, কিন্তু স্বাদ ধরে রাখতে যোগ করা হয় প্রচুর পরিমাণ চিনি। এতে লিভারের সমস্যা আরও বেড়ে যায়। স্ট্রেস থাকলে খাবেন না- বোর হলে, এনার্জি কম লাগলে কী করি আমরা? অনেকেই এই সময় খাবার খেয়ে মুড ঠিক করতে চান। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন লিভার সুস্থ রাখতে স্ট্রেসের সময় খাবার ছোঁবেন না। এই সময় হজম ঠিক মতো হয় না। হার্বাল কেয়ার- শুনতে অদ্ভুত লাগলেও বেশ কিছু গাছের মূল রয়েছে যা লিভার সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। ড্যানডেলিওন, মিল্ক থিসল বা হলুদের মূল লিভারের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া প্রোটিন বা ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার সময় সতর্ক থাকুন। এমন সাপ্লিমেন্ট বাছুন যা লিভার ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে। ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন সি লিভার পরিষ্কার রাখে। প্রোটিনের মধ্যে থাকা অ্যামাইনো অ্যাসিডও লিভার পরিষ্কার রাখার জন্য ভাল। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড লিভার সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
লিভারকে সুস্থ রাখার টিপস: আপনার পরিবারের কারও লিভারের সঙ্গে সম্পর্কিত রোগ বা অন্য কোনও রোগের ইতিহাস থাকে, তাহলে এমন ব্যক্তিদের লিভার নিয়ে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
ডা. সারিনের মতে লিভারে ফ্যাট জমলে মানুষের ত্বকে এবং গলায় কালো দাগ দেখা দিতে পারে। যদি আপনি এই ধরনের লক্ষণগুলি দেখতে পান, তাহলে বুঝতে হবে আপনার লিভারে ফ্যাট জমছে। প্রায় ২০ শতাংশ মানুষের ওজন কম থাকে, কিন্তু তবুও ফ্যাটি লিভারের সমস্যা হয়। এতে ওষুধ নেওয়ার পরিবর্তে মানুষকে তাদের জীবনযাপন এবং খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন করা উচিত। কফিকে লিভারের জন্য অত্যন্ত উপকারী মনে করা হয়। কফি পান করলে লিভারে জমা ফ্যাট কমতে পারে এবং লিভারের রোগের ঝুঁকি কমতে পারে।
ডা. সারিন বলেন যে বেশি তেলেভাজা, প্রক্রিয়াজাত এবং জাঙ্ক ফুড লিভারের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকারক। এছাড়াও মদ্যপান এবং ধূমপান লিভারের কার্যক্ষমতা ধীরে ধীরে কমিয়ে দেয়। যদি আপনি চান যে আপনার লিভার দীর্ঘ সময় ধরে ভালভাবে কাজ করুক, তাহলে খারাপ অভ্যাস থেকে দূরে থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। লিভারকে সুস্থ রাখতে প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট শারীরিক কার্যকলাপ করা উচিত। যদি কোনও সমস্যা হয়, তাহলে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে পরীক্ষা করানো উচিত।
