এই অবস্থা ঘুমোনোর সময় অন্তত ১০ সেকেন্ড স্থায়ী হয়। কিছু কিছু সময় এই অবস্থা ১০-৩০ সেকেন্ড পর্যন্ত স্থায়ী হয়। আবার কিছু ক্ষেত্রে তা ১ মিনিট অথবা তার বেশি সময় ধরে স্থায়ী হয়। এর ফলে রক্তে অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমে যেতে থাকে। জটিল কিছু ক্ষেত্রে তা ৪০ শতাংশের নিচেও চলে যেতে পারে। আর অক্সিজেন কমে যাওয়ার ফলে মস্তিষ্ক শরীরকে সজাগ করে। এর ফলে ঘুম ভেঙে যায় এবং শ্বাসপ্রশ্বাস ফের স্বাভাবিক হয়ে আসে।
advertisement
আর এক রাতের মধ্যে এই বিষয়টা প্রায় কয়েকশো বার ঘটতে পারে। আর বারবার ঘুম ভেঙে যাওয়ার কারণে দিনভর ঘুম পেতে থাকে। এই প্রসঙ্গে আলোচনা করবেন বেঙ্গালুরু ইলেকট্রনিক সিটির কাবেরী হাসপাতালের কনসালট্যান্ট পালমোনোলজিস্ট ডা. রূপা রেচেল প্রেমানন্দ।
সবথেকে সাধারণ উপসর্গগুলির মধ্যে অন্যতম হল:
জোরে জোরে নাক ডাকা- যদিও সব নাসিকা গর্জন কিন্তু ওএসএ নয়। তবে সমস্ত ওএসএ রোগীর নাসিকা গর্জন হয়
শ্বাস বন্ধ হয়ে গিয়ে জেগে ওঠা
শ্বাস থমকে যাওয়া
ঘুমের মধ্যে অস্থিরতা
সকালে গলায় ব্যথা / মুখের ভিতরের অংশ শুকিয়ে আসা
ঘন ঘন বাথরুমে যাওয়া
ভোরের দিকে মাথা ব্যথা
সকালের দিকে ক্লান্তি এবং ঘুম-ঘুম ভাব
মানসিক অবসাদ/ বিরক্তি
মনোযোগে সমস্যা
ওএসএ-র রিস্ক ফ্যাক্টর:
অতিরিক্ত ওজন বা ওবেসিটি
বার্ধক্য
শ্বাসনালী সংকীর্ণ হয়ে আসা
হাইপারটেনশন/ উচ্চ রক্তচাপ
ক্রনিক নেজাল কনজেশন
ধূমপান
ডায়াবেটিস
পুরুষ
আরও পড়ুন: গাঁটের ব্যথায় কাবু? অস্টিওআর্থ্রাইটিসের প্রসঙ্গে আলোচনা করছেন বিশেষজ্ঞ
জটিলতা:
দিনের বেলায় ক্লান্তি এবং ঘুম পাওয়ার কারণে কাজের সমস্যা
কাজ সংক্রান্ত দুর্ঘটনা কিংবা পথ দুর্ঘটনার ঝুঁকি বৃদ্ধি
কার্ডিওভাস্কুলার সমস্যা
করোনারি হার্ট ডিজিজ, হার্ট অ্যাটাক, আর্টারি ফেলিওর এবং স্ট্রোকের ঝুঁকিও বৃদ্ধি পায়
অ্যারিদিমিয়া হয়ে আকস্মিক মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে
ঘুম না হওয়ার কারণে সম্পর্কের উপর প্রভাব পড়ে
রোগ নির্ণয়:
ওএসএ রোগ নির্ণয় করার জন্য একটি স্লিপ স্টাডি (পলিসোমনোগ্রাফি) করা হয়।
চিকিৎসা:
কন্টিনিউয়াস পজিটিভ এয়ারওয়ে প্রেশার (সিপিএপি) ডিভাইস এই রোগের চিকিৎসায় সবথেকে বেশি কার্যকর। অতিরিক্ত ওজন হ্রাসের মাধ্যমেও চিকিৎসা করা হয়। সার্জিক্যাল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পুরোপুরি ভাবে ওএসএ দূর করা সম্ভব নয়।
স্লিপ স্পেশালিস্টের সঙ্গে কখন যোগাযোগ করা উচিত?
জোরে জোরে নাক ডাকার ফলে পাশের জনের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটলে বিষয়টা বিশেষজ্ঞের নজরে আনা উচিত।শ্বাসকষ্ট হয়ে ঘুম ভেঙে গেলে যোগাযোগ করতে হবে স্পেশালিস্টের সঙ্গে। ঘুমোনোর সময় শ্বাসপ্রশ্বাস বন্ধ হলেও স্লিপ স্পেশালিস্টের কাছে যাওয়া উচিত। সারা দিন ধরে ঘুম পেলে কিংবা অবসন্ন বোধ হলেও চিকিৎসকের কাছে যাওয়া আবশ্যক।