স্ট্রোকের ধরন:
ইস্কেমিক স্ট্রোক:
যে রক্তবাহী নালী মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ করে, সেই রক্তনালী অবরুদ্ধ হয়ে পড়লে মস্তিষ্কের একটা অংশের মৃ্ত্যু ঘটে। এটাই ইস্কেমিক স্ট্রোক।
হেমোরেজিক স্ট্রোক:
রক্তবাহী নালী ফেটে গেলে মস্তিষ্কের টিস্যুতে রক্তক্ষরণ শুরু হয় এবং সেই টিস্যু নষ্ট হয়ে যায়। এই অবস্থাকেই হেমোরেজিক স্ট্রোক বলে।
advertisement
আরও এক অবস্থা রয়েছে। যাকে ট্রান্সিয়েন্ট ইস্কেমিক অ্যাটাক (টিআইএ) বলা হয়। এক্ষেত্রে উপসর্গ শুরু হওয়ার পর তা নিজে থেকেই কমতে শুরু করে। প্রধান স্ট্রোক হওয়ার কয়েক দিন এমনকী কয়েক সপ্তাহ আগে এটা হতে পারে। ফলে এটা ভবিষ্যতের স্ট্রোকের লক্ষণ হতে পারে। এটা প্রতিরোধ করলে বড়সড় স্ট্রোকের ঝুঁকি কমিয়ে ফেলা সম্ভব।
আরও পড়ুন- আর দিন কয়েক পরেই রাশি পরিবর্তন করতে চলেছেন বুধ! এই তিন রাশির জীবনে আসতে চলেছে শুভ সময়
স্ট্রোকের সময় কী হয়?
মস্তিষ্কে অবিরাম অক্সিজেন এবং নিউট্রিয়েন্ট সরবরাহের প্রয়োজন হয়। ব্লকড অথবা ফেটে যাওয়া রক্তনালীর কারণে রক্ত সরবরাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়। ফলে কয়েক মিনিটের মধ্যে নিউরোনের মৃত্যু ঘটে। মস্তিষ্কের প্রতিটি অর্ধাংশ দেহের বিপরীত অর্ধাংশকে নিয়ন্ত্রণ করে। ডান পাশের মস্তিষ্কে স্ট্রোক হলে দেহের বাম পাশে সমস্যা দেখা দেয়। আবার বাম পাশের মস্তিষ্কে স্ট্রোক হলে দেহের ডান পাশে সমস্যা দেখা দেবে।
ঝুঁকির বিষয়গুলি কী কী?
ঝুঁকির বিষয়গুলি সাধারণত দুই রকম- পরিবর্তনযোগ্য এবং অপরিবর্তনযোগ্য।
পরিবর্তনযোগ্য রিস্ক ফ্যাক্টর: উচ্চ রক্তচাপ (> ১৪০/৯০), ডায়াবেটিস মেলিটাস, ঘুমে ঘাটতি, স্ট্রেস, ওবেসিটি, ধূমপানের অভ্যেস, হাই-প্লাজমা লিপিড, এক্সারসাইজের অভাব, ওরাল কন্ট্রাসেপ্টিভ পিলস, হৃদরোগ, অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দন।
অপরিবর্তনযোগ্য রিস্ক ফ্যাক্টর: বয়স বৃদ্ধি, পুরুষ, এথনিসিটি - আফ্রিকান আমেরিকান, স্ট্রোকের ইতিহাস, স্ট্রোকের ক্ষেত্রে জেনেটিক ঝুঁকি।
আরও পড়ুন- স্নায়বিক রোগের উপসর্গের উপর নজর না রাখলেই মুশকিল! কী বলছেন বিশেষজ্ঞ?
স্ট্রোকের উপসর্গ:
মুখ, হাত অথবা পা এমনকী দেহের এক পাশে দুর্বলতা বা অসাড় ভাব।
কথা বলতে কিংবা বুঝতে সমস্যা।
দৃষ্টিশক্তির সমস্যা, যেমন - একটি কিংবা দুটি চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া অথবা দৃষ্টিহীনতা।
নড়াচড়ায় সমস্যা কিংবা হাঁটাচলায় অসুবিধা।
অচৈতন্য হয়ে পড়া কিংবা খিঁচুনি।
অজানা কারণে মারাত্মক মাথা যন্ত্রণা, বিশেষ করে আচমকা সেটা শুরু হওয়া।
স্ট্রোকের চিকিৎসা:
স্ট্রোক সন্দেহ করলে মস্তিষ্কের সিটি স্ক্যান কিংবা এমআরআই আবশ্যক। এর পর স্ট্রোকের ধরন নির্ণয় করতে হবে।
মেডিক্যাল:
উপসর্গ প্রকাশ্যে আসার সাড়ে চার ঘণ্টার মধ্যে যদি রোগীকে হাসপাতালে আনা হয়, তাহলে জমাট বাঁধা রক্ত তরল করে রক্ত সরবরাহ ফের সচল করার জন্য টিস্যু প্লাজমিনোজেন অ্যাক্টিভেটর ইঞ্জেকশন দিতে হবে। শুধুমাত্র ইস্কেমিক স্ট্রোকের ক্ষেত্রেই এটা ব্যবহার করা হয়।
সার্জিক্যাল অথবা ইন্টারভেনশনাল:
বড় রক্তনালী অবরুদ্ধ হয়ে গেলে মেকানিক্যাল থ্রম্বেক্টোমি করাতে হবে। এভাবে রক্তনালীকে সচল করতে ব্লাড ক্লট সরিয়ে ফেলা যায়। উপসর্গ প্রকাশের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই এটা করাতে হয়।
রিহ্যাবিলিটেশন:
যে রোগীদের স্নায়বিক ঘাটতি রয়ে যায়, তাঁদের রিহ্যাবিলিটেশনের প্রয়োজন। যার মধ্যে অন্যতম হল ফিজিওথেরাপি, ব্যালেন্স থেরাপি, স্পিচ থেরাপি।