নিউমোনিয়া হল ফুসফুসের সংক্রমণ। স্ট্রেপ্টোকক্কাস নিউমোনিয়া নামক ব্যাকটেরিয়া থেকে এই রোগ ছড়াতে পারে। যদিও খুব সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জা বা ফ্লু থেকেই নিউমোনিয়া সবচেয়ে বেশি ছড়ায়। সারা বিশ্বে প্রতিবছর ১.৫ থেকে ১৪ শতাংশ মানুষ আক্রান্ত হন। আর শুধু ভারতেই আক্রান্তের সংখ্যাটা গোটা বিশ্বের ২৩ শতাংশ। এদেশে নিউমোনিয়ায় মৃত্যুর হার ১৪-৩০ শতাংশ।
লক্ষণ:
advertisement
প্রাপ্তবয়স্কদের জ্বর, ঠান্ডা লাগা, শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, হৃদস্পন্দনে দ্রুততা, বমি বমি ভাব, বমি, ডায়রিয়া হতে পারে। কাশির সঙ্গে সবুজ বা হলুদ কফ উঠতে পারে।
শিশুদের ক্ষেত্রে ডিহাইড্রেশন, শ্বাসকষ্ট, কাশি, জ্বর, বমি হতে পারে। খাওয়ায় অরুচি, খিটখিটে মেজাজও দেখা দেয়।
সঠিক চিকিৎসা না হলে নিউমোনিয়া সংক্রমণ মারাত্মক হতে পারে। সেক্ষেত্রে যদি
১. জ্বর এবং কাশি কিছুদিনের মধ্যে সেরে না যায়
২. দৈনন্দিন কাজ করার সময় বা বিশ্রামের সময়ও শ্বাসকষ্ট
৩. শ্বাস নেওয়ার সময় বুকে ব্যথা
৪. সর্দি বা ফ্লু থেকে সেরে ওঠার পর হঠাৎ শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত
এছাড়া,
৫. দুর্বল রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা, অঙ্গ বা অস্থি মজ্জা প্রতিস্থাপন হয়েছে এমন ব্যক্তি বা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে দমন করে এমন ওষুধ খান যাঁরা,
৬. যাঁরা হৃদরোগ, ডায়াবেটিস বা দীর্ঘস্থায়ী ফুসফুসের রোগের ভুগছেন, চিকিৎসা করাচ্ছেন
৭. বয়স পাঁচের কম বা ৬৫-র বেশি হলে কোনও ভাবেই দেরি করা ঠিক নয়।
রোগ নির্ণয়:
বুকের এক্স-রে, রক্ত পরীক্ষা, কফ পরীক্ষা করে রোগ নির্ণয় হয়। কখনও সিটি স্ক্যান এবং ব্রঙ্কোস্কোপি প্রয়োজনও হতে পারে।
আরও পড়ুন : অ্যাডিনোভাইরাস কি আতঙ্কের আর এক নাম? জেনে নিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ
চিকিৎসা:
প্রাথমিক ভাবে আক্রান্ত ব্যক্তিদের বাড়িতেই ওরাল অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। গুরুতর অসুস্থতা বা ঝুঁকিতে থাকলে হৃদস্পন্দন, শ্বাস-প্রশ্বাসের হার, তাপমাত্রা এবং অক্সিজেনের মাত্রা পর্যবেক্ষণের জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসা শুরুর ৩-৫ দিনে অবস্থার উন্নতি হতে শুরু করে। তবে তিন সপ্তাহ বা তারও বেশি সময় লাগতে পারে একেবারে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে।
আরও পড়ুন : কিছুতেই বাড়বে না মহিলাদের ওজন, শুধু মানুন বিশেষজ্ঞের বলে দেওয়া এই সহজ পরিবর্তন
প্রতিরোধ:
১. টিকা একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়। নিউমোকোকাল ভ্যাকসিনের পাশাপাশি ইনফ্লুয়েঞ্জা বা ফ্লু ভ্যাকসিন পাওয়া যায়।
২. ধূমপান ত্যাগ করা উচিত।
৩. সাবান এবং জল দিয়ে ঘন ঘন হাত ধোয়া বা অ্যালকোহল ভিত্তিক ‘হ্যান্ড রাব’ ব্যবহার করা যায়।
৪. কাশি বা হাঁচির সময় মুখ এবং নাক ঢেকে রাখা উচিত।