এই রোগের পরবর্তী পর্যায়ে রেটিনার রক্তবাহী নালীগুলিতে রক্ত ক্ষরণ শুরু হয়। যা চোখের ভিতরের ভিট্রিয়াস-ফ্লুয়িডের মধ্যে পড়ে। যার ফলে আংশিক কিংবা সম্পূর্ণ রূপে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে যেতে পারে। এমনটাই বলছেন গুন্টুরের শঙ্কর চক্ষু হাসপাতালের ভিট্রিওরেটিনাল সার্ভিসেস-এর সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মধুকুমার আর। এই ক্ষেত্রে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। আর এই হাসপাতালের সঙ্গেও তিনি এতগুলো বছর যুক্ত। এমনকী ডা. মধুকুমারের কেরিয়ার শুরু হয়েছে এই হাসপাতালেই। এখনও পর্যন্ত তিনি কুড়ি হাজারেরও বেশি ভিট্রিওরেটিনাল সার্জারি করেছেন।
advertisement
আরও পড়ুন- বিহারের শার্প শুটাররা কার্যত কাঁপাচ্ছে বাংলা! জনবহুল এলাকাতেও সারছে তাদের নিখুঁত অপারেশন
কাদের ঝুঁকি বেশি?
টাইপ ১ অথবা টাইপ ২ ডায়াবেটিসের রোগীদের মধ্যে ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি রোগ দেখা দিতে পারে। শুধু তা-ই নয়, যেসব গর্ভবতী মহিলা জেস্টেশনাল ডায়াবেটিসে ভুগছেন, তাঁদেরও এই রোগের ঝুঁকি রয়েছে। জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস ধরা পড়লেই নিয়মিত চোখের পরীক্ষা করাতে হবে।
উপসর্গ:
ঝাপসা দৃষ্টি
চোখের সামনে তরঙ্গায়িত কিছু দেখা
ভাসমান কিছু দেখা এবং তার রঙ পরিবর্তন
রাতে দৃষ্টিশক্তিতে সমস্যা
ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির কারণে হওয়া নানা সমস্যা:
ডায়াবেটিক ম্যাকুলার ইডিমা: চোখের ম্যাকুলার মধ্যে অতিরিক্ত ফ্লুয়িড জমতে শুরু করে, এতে দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে যায়।
নিওভাস্কুলার গ্লকোমা: এটা সেকেন্ডারি গ্লকোমা হিসেবেও পরিচিত। আইরিসের উপর নতুন নালি তৈরি হয়।
রেটিনাল ডিটাচমেন্ট: ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির কারণে চোখের কালো অংশের উপর দাগ কিংবা ক্ষত দেখা দেয়।
চিকিৎসা:
রোগ কতটা গুরুতর, তার উপর ভিত্তি করেই চিকিৎসা হয়। জটিলতা দেখে তবেই চক্ষু বিশেষজ্ঞরা লেজার এবং সার্জিক্যাল প্রক্রিয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। আবার কিছু অবস্থার ক্ষেত্রে ইন্ট্রাভিট্রিয়াল ইঞ্জেকশনও দিয়ে থাকেন ডাক্তাররা। গ্লুকোজের মাত্রা ঠিকঠাক রাখলেই দৃষ্টিশক্তি ঠিকঠাক হয়ে যায়। স্বাভাবিক রেটিনোপ্যাথির কাছাকাছি গ্লুকোজের মাত্রা আসার পরেও যদি ঝাপসা ভাব দূর না-হয়, তাহলে সেটা দৃষ্টিহীনতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। চক্ষু পরীক্ষা করার পরেই সেটা বুঝতে পারবেন চিকিৎসকেরা। আর ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি প্রতিরোধ করার সব থেকে ভাল উপায় হল ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা। ফলে ব্লাড সুগারের মাত্রা সঠিক রাখতে হবে। এর জন্য নিয়মিত এক্সারসাইজ করা, স্বাস্থ্য়কর খাবার খাওয়ার মতো অভ্যাস বজায় রাখতে হবে। আর নিয়মিত ভাবে চোখের চেক-আপ করানো উচিত।