আর সব থেকে বড় কথা হল, এই বায়ু দূষণ এড়ানো কিছুতেই আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। বাতাসে উপস্থিত দূষণকারী পদার্থ আমাদের ফুসফুস, হার্ট এবং মস্তিষ্কের ক্ষতি করে। কারণ এই সব পদার্থ আমাদের স্বাস্থ্যের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ভেদ করে শ্বাসতন্ত্র এবং রক্ত সংবহনতন্ত্রে প্রবেশ করতে পারে। এই প্রসঙ্গে কথা বলছেন বিএমবি সিকে বিড়লা হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. সব্যসাচী পাল। (Dr. Sabyasachi Pal, Senior Consultant - Cardiology Department – CK Birla Hospitals - BMB )
advertisement
আরও পড়ুনঃ মহিলাদের মধ্যে বাড়ছে মৃগীরোগের ঝুঁকি! কী কী ক্ষতি হতে পারে? কী বলছেন বিশেষজ্ঞ
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বের ৯১ শতাংশ মানুষ এমন জায়গায় বসবসা করে, যেখানে বায়ু দূষণের মাত্রা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উল্লিখিত মাত্রার তুলনায় অনেকটাই বেশি। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষার উপর ভিত্তি করে ন্যাশনাল মর্টালিটি অ্যান্ড মর্বিডিটি এয়ার পলিউশন স্টাডির তরফে জানানো হয়েছে যে, খুব অল্প সময়ের মধ্যে দৈনিক মৃত্যু এবং কার্ডিওপালমোনারি সমস্যার কারণে মৃত্যুর হার বেড়েছে যথাক্রমে ০.২১ শতাংশ এবং ০.৩১ শতাংশ। মূল দূষণকারী পদার্থের মধ্যে পড়ে ধুলোকণা। যার মধ্যে থাকে কঠিন এবং তরল ড্রপলেট। আর এগুলি গাড়ির জ্বালানি, পোড়া ক্ষতিকর পদার্থ, ওজন স্তর থেকে নির্গত হয়।
আসলে মানুষের কার্যকলাপের জন্যই আজ বায়ু, জল এমনকী মাটি দূষিত হচ্ছে। যার গুরুতর প্রভাব পরিবেশের উপর পড়ছে। শিল্প বিপ্লবের ফলে প্রযুক্তি, সামাজিক মান এবং পরিষেবায় সাফল্য এসেছে। তবে এটাও বলতে হবে যে, আজ শিল্প বিল্পবের প্রভাবেই বায়ু দূষণের হার বেড়েছে। যা মানবদেহের জন্য খুবই বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে।
বৈজ্ঞানিক গবেষণা থেকে জানা যাচ্ছে যে, সপ্তাহের পর সপ্তাহ ধরে মাত্র কয়েক ঘণ্টা পিএম২.৫-এরও বেশি ঘনত্বের সংস্পর্শে এলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেকাংশে বেড়ে যায়। এমনকী কার্ডিওভাস্কুলার রোগর কারণে মৃত্যুর হারও বৃদ্ধি পায়। এছাড়া দীর্ঘমেয়াদে এর সংস্পর্শে থাকলে আয়ু ধীরে ধীরে কমে যায়। আবার এটাও দেখা গিয়েছে যে, দীর্ঘ এবং স্বল্পমেয়াদে সংস্পর্শে থাকলে আবার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার মতো পরিস্থিতিও বেড়ে যায়। এর মধ্যে পড়ছে করোনারি সিন্ড্রোম, অ্যারিদমিয়া, হার্ট বিকল, স্ট্রোক, আচমকা কার্ডিয়াক কারণে মৃত্যু প্রভৃতি। বর্তমানে মেডিকেল বিশেষজ্ঞরা নতুন এবং উন্নত মানের প্রযুক্তির সন্ধান করছেন। যাতে মানবদেহ থেকে অপ্রয়োজনীয় ক্ষতিকর কণাগুলিকে বার করে দেওয়া যায়। বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্যের পক্ষে বিপজ্জনক হয়ে উঠছে পরিবেশ দূষণ।