ফ্রন্টোটেম্পোরাল ডিমেনশিয়ার উপসর্গ:
এফটিডি-র আচরণগত ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রে রোগীর আচরণগত সমস্যা দেখা দিতে পারে। কারণ মস্তিষ্কের ফ্রন্টাল লোব আমাদের ব্যবহার এবং ব্যক্তিত্ব নিয়ন্ত্রণ করে। এই ধরনের রোগীদের বিচারবুদ্ধির ক্ষমতা লোপ পায়। কিছু না-ভেবেই আর্থিক সিদ্ধান্ত নেয় এঁরা। এমনকী পার্সোনাল হাইজিনের বিষয়টাকেও গুরুত্ব দেয় না। কোনও কিছুতে মনোনিবেশ করতেও সমস্যা হতে পারে। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, এই ধরনের রোগীদের খাদ্যাভ্যাসের ক্ষেত্রেও পরিবর্তন এসেছে। মিষ্টির প্রতি আসক্তি বাড়ে। একই ফিল্ম বারবার দেখার প্রবণতা বেড়ে যায়।
advertisement
আরও পড়ুনঃ এক বিশেষ কারণে টিপ সব সময় কপালে দুই ভুরুর মাঝেই পরা হয়, জেনে নিন বিশদে
বাকি দুই ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রে মূলত ভাষাজনিত সমস্যা দেখা দেয়। একে আবার প্রাইমারি প্রোগ্রেসিভ আফেজিয়াও বলা হয়। যার মধ্যে পড়ে সেম্যান্টিক ডিমেনশিয়া এবং প্রাইমারি নন-ফ্লুয়েন্ট আফেজিয়া। এক্ষেত্রে কথা বলতে এবং সঠিক শব্দচয়নে সমস্যা দেখা দেবে। এমনকী রোগীরা কোনও ব্যক্তি কিংবা বস্তুর নাম ভুলে যান। লেখা এবং পড়ার ক্ষেত্রেও সমস্যা দেখা দেয়। অ্যাডভান্সড স্টেজে কথাবার্তা বুঝতে পারেন না রোগী। কথার উত্তরও দিতে অপারগ হয়ে যান। ফলে একটা সময়ের পর কথা বলাই বন্ধ হয়ে যায়। এর সঙ্গে হাঁটা-চলাতেও সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, এফটিডি রোগীদের জীবনকাল সাধারণত ৭-১৩ বছর। তাঁদের মৃত্যুর সব থেকে সাধারণ কারণ হল শ্বাসজনিত সমস্যা (নিউমোনিয়া), কার্ডিওভাস্কুলার রোগ এবং কাকেক্সিয়া।
এফটিডি-র কারণ:
মস্তিষ্কে অস্বাভাবিক ভাবে প্রোটিন জমা হয়। এর জেরে নিউরোন অস্বাভাবিক কাজ করতে থাকে। আবার কিছু ক্ষেত্রে জিনগত কারণেও এফটিডি হতে পারে।
রোগ নির্ণয়:
নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও রোগীর ইতিহাস জানার পরেই এফটিডি নির্ণয় করা সম্ভব। মস্তিষ্কের এমআরআই-তে ধরা পড়বে ফ্রন্টাল এবং টেম্পোরাল অ্যাট্রফি। এফডিজি পিইটি স্ক্যানের মাধ্যমে জানা যাবে ফ্রন্টাল ও টেম্পোরাল লোবের হাইপো মেটাবলিজম।
চিকিৎসা:
এফটিডি-র তেমন কোনও চিকিৎসা নেই। এক্ষেত্রে আচরণগত উপসর্গ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য রোগীদের অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট দেওয়া হয়। যাঁদের কথাবার্তা বলতে সমস্যা রয়েছে, তাঁদের স্পিচ থেরাপি করাতে হয়।