আসলে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীর বা ত্বকের মতো চুলও অনেক রকম উত্থান-পতনের মধ্যে দিয়ে যায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশ দূষণ, জীবনচর্যার পরিবর্তন, খর জল প্রভৃতি নানা বিষয়ের প্রভাব পড়ে চুলের উপর। আর তারই মূল্য চোকাতে হয় চুল পড়ার মতো সমস্যা দিয়ে।
আরও পড়ুন: থলথলে হাত নিয়ে হীনমন্যতায় ভোগেন? ১৫ মিনিটে সুডৌল বাহু পেতে পারেন বাড়িতেই! জানুন
advertisement
সাধারণত প্রতিদিন ১০০টি করে চুল পড়ে যাওয়া স্বাভাবিক বলে ধরে নেওয়া হয়। কিন্তু বেশিরভাগ সময়ই দেখা যায় চুলে আঙুল চালালেই চুল উঠতে থাকে। এমন সমস্যা সমাধানে খুবই কাজে দিতে পারে পাঁচটি তেলের একটি বিশেষ মিশ্রণ।
এই পাঁচটি তেল সমপরিমাণে মিশিয়ে একটি পরিষ্কার বোতলে রেখে সপ্তাহে দু’দিন করে লাগাতে হবে। অনেকটা উপকার পাওয়া যেতে পারে—
নারকেল তেল—
শরীরের মতো চুলেও অনেক সময় প্রোটিনের ঘাটতি দেখা দেয়। আর প্রোটিনের অভাবেই চুল দুর্বল হয়ে পড়ে। তার ফলে নানা ধরনের সমস্যা দেখা যেতে পারে। নারকেল তেল প্রোটিনের ভাল উৎস। ভারতে এই কারণেই নারকেল তেলের ব্যবহার হয়ে আসছে প্রাচীন কাল থেকে। নিয়মিত নারকেল তেল লাগালে চুল পড়া কম হতে পারে। শুধু তাই নয়, নিয়মিত নারকেল তেলের মালিশ চুল ভেঙে পড়া, রুক্ষ্মতার মতো সমস্যাও দূর করতে পারে। এই তেলে উপস্থিত স্নেহ পদার্থ কিউটিকল অংশকে নরম করে, চুলের গোড়ায় আর্দ্রতা জোগায়।
আরও পড়ুন: মলের সঙ্গে রক্ত বেরোচ্ছে! বছর শুরুতেই সাবধান, উচ্চ কোলেস্টেরলের লক্ষণ হতে পারে!
ক্যাস্টর অয়েল—
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, প্রোটিন, ভিটামিন. ফ্যাটি অ্যাসিডে পরিপূর্ণ ক্যাস্টর অয়েল। তাই ক্যাস্টর অয়েলের নিয়মিত মালিশের ফলে চুলের গোড়ায় প্রয়োজনীয় পুষ্টি পৌঁছে যায়। যা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। মজবুত চুলের জন্য ক্যাস্টর অয়েল খুবই প্রয়োজনীয় একটি তেল। তার ফলে চুল পড়ার সমস্যা অনেকটা কম হতে পারে। যা স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুলের জন্য খুবই জরুরি।
স্যুইট আমন্ড অয়েল
শুধু চুল পড়া নয়। রুক্ষ্ম চুলের সমস্যাও আমাদের মাথা ব্যথার কারণ। বিশেষত, আগা ফেটে যাওয়ার সমস্যায় নাজেহাল। আর বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই সমস্যা দেখা দেয় পরিবেশ দূষণ থেকে। দৌড় ঝাঁপ করা জীবনে চুল বাঁধার সমস্যাও এই আগা ফেটে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটতে পারে।
আমন্ড অয়েল এক্ষেত্রে এক দারুন সমাধান। চুল ফেটে যাওয়ার সমস্যায় এই তেল লাগানো যেতে পারে। এই তেলে রয়েছে ভিটামিন ই, যা প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে, চুলের ক্ষত সারিয়ে তোলে। আগা ফাটার সমস্যা না থাকলে চুলের বৃদ্ধি দ্বিগুণ হওয়া সম্ভব। সেই সঙ্গে চুলের ঘনত্বও বাড়বে।
অলিভ অয়েল—
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরন বা ডিএইটি হরমোন মাথার ত্বকে বা স্ক্যাল্পে জমাট বেঁধে গেলে চুল পড়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। কিন্তু এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল এই ডিএইচটি-কে জমাট বাঁধতে বাধা দেয়। ফলে অলিভ অয়েল যে চুল পড়া বন্ধে উপকার করে থাকে, এই কথা বলাই যায়। এতে চুলের বৃদ্ধিও ত্বরাণ্বিত হয়। শুধু তাই নয়, চুলের স্বাস্থ্যের আর এক শত্রু খুশকিও দূর হতে পারে অলিভ অয়েলে। এই তেলে উপস্থিত অ্যান্টিফাঙ্গাল পদার্থ স্ক্যাল্প পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। পাশাপাশি অলিভ অয়েলের ময়েশ্চরাইজিং ক্ষমতা রয়েছে। এতে এক দিকে যেমন চুল দেখতে সুন্দর লাগে, তেমনই নতুন চুল গজানোর ক্ষেত্রেও সাহায্য করে।
রোজমেরি অয়েল—
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, রোজমেরি অয়েল অনেকটা মাইনক্সিডিলের মতো কাজ করতে পারে। মাইনক্সিডিল এমন এক পদার্থ যা রক্তনালীগুলিকে শিথিল করে রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি করে। উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে এই মাইনক্সিডিল প্রয়োগ করা হয়ে থাকে।
রোজমেরি অয়েলও অনেকটা সেই ভাবেই রক্ত সঞ্চালন উন্নত করতে পারে বলে মনে করা হয়। পুরুষের চুল পড়ার সমস্যা বা টাকের ক্ষেত্রেও এই তেল উপকার করতে পারে। তবে এসেনসিয়াল অয়েল খুব বেশি পরিমাণে নিতে নেই। উপরের চারটি তেল সমপরিমাণে মিশিয়ে নিয়ে, সেই মিশ্রণে ১০ ফোঁটা রোজমেরি অয়েল মিশিয়ে নিতে হবে। লম্বা, ঝকঝকে একঢাল চুল পেতে এর থেকে ভাল আর কী বা হতে পারে!
(Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি কেবলমাত্র সাধারণ তথ্যের জন্য, তাই বিস্তারিত জানতে হলে সর্বদা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।)
