ঘটনাটি সেপ্টেম্বরের। কানাডার এক ব্যবসায়ী ই ডব্লিউ গেজ তাঁর ফেসবুক পেজে বিক্রির জন্য রসালো ও ঝকঝকে সুন্দর কয়েকটি পেঁয়াজের ছবি দেন। কিছুক্ষণ পরই ফেসবুকের তরফে ছবিটি সরিয়ে দেওয়া হয়। কারণ হিসেবে বলা হয়, এই ছবিটি ফেসবুকের নিয়ম-নীতিকে লঙ্ঘণ করে এবং এটি কামোত্তেজক। ফেসবুকের তরফে এইরকম উত্তর পেয়ে প্রথমে খানিকটা ঘাবড়ে গেছিলেন গেজ। পরে ফেসবুকের এই নোটিফিকেশনের একটি স্ক্রিনশট তুলে পুরো বিষয়টি নানা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেন তিনি। বলেন, পেঁয়াজের যে ছবিটি ব্যবহার করা হয়েছিল সেটিকে 'ওভার্টলি সেক্সুয়াল' হিসেবে ব্যাখ্যা করেছে ফেসবুক। পাশাপাশি বিজ্ঞাপনেও অনুমোদন মেলেনি।
advertisement
এর পরই ছবিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক মাত্রায় ভাইরাল হয়। অনেকে ফেসবুকের এই অদ্ভুত কাণ্ডকে ব্যঙ্গ করতে শুরু করেন। কেউ কেউ এই রকমই পুরনো কোনও ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে ফেসবুক অ্যালগরিদম নিয়ে মজা করেন। এখানেই শেষ নয়। কমেডি শো-তেও এই প্রসঙ্গ তুলে মজা করা হয়েছে। আর এর জেরেই শেষমেশ ছবির উপর থেকে সাসপেনশন তুলে নিয়েছে ফেসবুক। পাশাপাশি অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য ক্ষমাও চেয়ে নেওয়া হয়েছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের তরফে।
এই ঘটনার পর বিবিসি-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওই ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের স্টোর ম্যানেজার জ্যাকসন ম্যাকক্লিন অবশ্য অন্য কথা বলেছেন। তাঁর মতে, পেঁয়াজের আকারের জন্য বোধহয় ফেসবুকের তরফে এই রকম পদক্ষেপ করা হয়েছে। পর্নোগ্রাফি ও ন্যুডিটি নিয়ে ফেসবুকের অ্যালগরিদম খুব কড়া। হয়তো গোলাকৃতির ও হালকা রঙের পেঁয়াজ খানিকটা শরীরের কোনও অংশের মতো দেখতে লেগেছে। আর তাই সরিয়ে দিয়েছে ফেসবুক।
তবে এটি প্রথমবার নয়। এর আগেও বহুবার অনৈতিক ভাবে ব্লক হওয়ার জেরে ফেসবুক অ্যাড প্ল্যাটফর্মের অ্যালগরিদমকে নিয়ে বিস্তর সমলোচনা হয়েছে। ২০১৬ সালে একবার এক নরওয়ের সাংবাদিক ফেসবুকে পুলিৎজার পুরস্কার প্রাপ্ত একটি ছবি শেয়ার করেছিলেন। এই ছবিটিতে ভিয়েতনাম যুদ্ধ চলাকালীন একটি ছোট মেয়ের আতঙ্কিত চেহারা ফুটে উঠেছিল। কিন্তু ফেসবুক অ্যাড প্ল্যাটফর্মের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ডের নিয়ম অনুযায়ী এই ছবিটিকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ফেসবুকের তরফে ব্যাখ্যা ছিল এটি নগ্নতাসংক্রান্ত নিয়মকে লঙ্ঘণ করে। পরে অবশ্য জনগণের সমালোচনার মুখে পড়ে ফেসবুকের তরফে ভুল স্বীকার করা হয়।