অম্বিকানগরের রাজবাড়ি এক সময় ছিল বিপ্লবীদের আস্থানা। রাজ প্রাসাদের ভিতরেই তৈরি হত অগ্নিযুগের বিপ্লবীদের অস্ত্র। রাতের অন্ধকারে কখনও রাজা আবার কখনও বিশ্বস্ত রাজ কর্মচারী সেই অস্ত্র ও রসদ নিয়ে পৌঁছে যেত বিপ্লবীদের গোপন ডেরায়। বাঁকুড়ার কুমারী নদীর তীরে অম্বিকানগরের সেই রাজপ্রসাদ আজ পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে ,আগাছায় ঢেকে গিয়েছে রাজবাড়ি। শুধু অগ্নিযুগের মহান বিপ্লবীদের ঐতিহ্যবাহী স্মৃতি নিয়ে অম্বিকানগরের বুকে টিকে রয়েছে প্রায় ৪৫০ বছরের প্রাচীন দুর্গাপুজো।
advertisement
১৯০৭/০৮ সালে অম্বিকানগরের ষষ্ঠ রাজা রাইচরণ ধবল দেব প্রত্যক্ষভাবে বিপ্লবী কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সেই সময় তাঁর নেতৃত্বে বিপ্লবী বাহিনী গড়ে উঠেছিল ছেঁন্দাপাথরে। প্রফুল্ল চাকি, বারীন ঘোষ, নরেন গোস্বামী, ভূপেশ দত্ত-সহ ক্ষুদিরাম বসুও এসেছিলেন ছেঁদাপাথরে। এখানকার পুজোতেও অনেক বিপ্লবী এসেছেন, পুজো দিয়ে মায়ের নামে শপথ নিয়ে তাঁদের আন্দোলন এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। এই পুজো বিপ্লবীদের পুজো হিসেবে পরিচিত। রাজা রায়চরণ ধবল দেব বিপ্লবী রাজা হিসাবে পরিচিত।
আগে ছিল জমিদারি। আড়ম্বের সঙ্গে দুর্গাপুজো হত। কিন্তু বর্তমানে জমিদারি নিলাম হয়ে গিয়েছে। তবুও সেই পুরোনো প্রথা মেনেই পুজো হয়ে আসছে। সেই অর্থে এখন আর জৌলুস নেই, কিন্তু কোনও খামতি নেই নিষ্ঠায়। যজ্ঞের অঙ্গারের কাজল ব্যবহার করে চক্ষু দান করা হয় মায়ের এবং অন্যান্য প্রতিমার।
নীলাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়