আসলে ওবেসিটির সমস্যাও ক্রমবর্ধমান। নানা কারণে অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যাওয়ার সমস্যায় ভুগছেন মহিলারা। তার মধ্যে রয়েছে প্রসেসড খাবারদাবার খাওয়া, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন প্রভৃতি। আর এই সব করাণেই অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধির ফলে কমবয়সী মহিলাদের মধ্যে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের সমস্যা দেখা যায়। দেখে নেওয়া যাক, মহিলাদের দেহে প্রকাশ পাওয়া ডায়াবেটিসের নানা উপসর্গ। বলে দেওয়া ভাল যে, এর মধ্যে অবশ্য থাকবে টাইপ ১, টাইপ ২ ডায়াবেটিস, জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস এবং প্রি-ডায়াবেটিসের উপসর্গের কথাও।
advertisement
আরও পড়ুন - Viral Reels: লাল শাড়ি পরে ডান্স ফ্লোরে উদ্দাম নাচ ‘আন্টির’, শাড়ি উঠে গিয়ে দেখা গেল...
মূত্রনালীর সংক্রমণ বা ইউটিআই:
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মহিলাদের ভ্যাজাইনাল ইস্ট ইনফেকশনের ঝুঁকি থাকে, বিশেষ করে যদি তাঁদের রক্তে শর্করার মাত্র অত্যন্ত বেশি থাকে। কারণ রক্তে উচ্চমাত্রায় শর্করা থাকলে তা কোনও সংক্রমণের বিরুদ্ধে শরীরের লড়াই করার ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। ডায়াবেটিসের কারণে বহু মহিলার মূত্রথলি পুরোপুরি ভাবে খালি হয় না। যার ফলে ব্যাকটেরিয়া বেড়ে যেতে পারে।
অনিয়মিত ঋতুস্রাব:
যাঁরা অনিয়মিত ঋতুস্রাবের সমস্যায় ভুগছেন, তাঁরা সাবধান। কারণ এটা কিন্তু ডায়াবেটিসের উপসর্গ হতে পারে। আসলে অনেকেই হয়তো জানেন না যে, ডায়াবেটিস কিন্তু মাসিক চক্রের উপর প্রভাব ফেলে। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে শোনা যায়, টাইপ ১ ডায়াবেটিসের কারণে অনেকের প্রথম ঋতুস্রাব হতে দেরি হয়। যদিও ডায়াবেটিস থাকলেই যে অনিয়মিত পিরিয়ডস হবে, তার কোনও মানে নেই। এমন অনেক ডায়াবেটিস আক্রান্ত মহিলা আছেন, যাঁদের নিয়মিত পিরিয়ডস হয়।
পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম বা পিসিওএস:
মহিলারা সাধারণত আরও একটা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জটিলতার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। আর সেটা হল পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম বা পিসিওএস। বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে, পিসিওএস-এ আক্রান্ত মহিলাদের টাইপ ২ ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা অন্যান্যদের তুলনায় প্রায় চার গুণ বেশি। আর যাঁদের জেস্টেশনাল ডায়াবেটিসের ইতিহাস রয়েছে, তাঁদেরও পিসিওস হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যায়।
আরও পড়ুন - Hurricane Nicole: ১২৫ কিমি গতিতে ঝড় আছড়ে পড়ল, তোলপাড় আবহাওয়া, রইল লেটেস্ট আপডেট
স্বাভাবিকের তুলনায় বাচ্চার আকার বড়:
আমেরিকান সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন-এর মতে, সমস্ত অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের মধ্যে প্রায় ১০ শতাংশেরই জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আসলে গর্ভাবস্থায় মহিলাদের দেহে নানা রকম হরমোনজনিত পরিবর্তন হতে থাকে। যা ইনসুলিন রেজিস্টেন্স বাড়িয়ে দেয়। এটাই জেস্টেশনাল ডায়াবেটিসের সমস্যা সৃষ্টি করে। এই রোগে সাধারণত কোনও উপসর্গই দেখা যায় না। ফলে সচেতনতার অভাবে জটিলতার ঝুঁকি বাড়ে। এই বিষয়টা এড়ানোর জন্য অর্থাৎ জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস পরীক্ষা করানোর জন্য গর্ভবতী মহিলাদের যে কোনও নির্দিষ্ট পর্যায়ে গ্লুকোজ টলারেন্স টেস্ট করাতে হবে। আর বাচ্চা যদি সাধারণের তুলনায় আকারে বড় হয়, সেটাও কিন্তু জেস্টেশনাল ডায়াবেটিসের অন্যতম বড় লক্ষণ। মার্কিন সিডিসি-র দাবি, ৫০ শতাংশ জেস্টেশনাল ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মায়েদের পরে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মহিলাদের দেহে ডায়াবেটিসের জটিলতা:
কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের মধ্যে হৃদরোগ, কিডনির রোগ এবং ডিপ্রেশনের মতো রোগের ঝুঁকি বেশি থাকে। এমনকী এই সব রোগ মহিলাদের জন্য প্রাণঘাতী পর্যন্ত হয়ে উঠতে পারে। শুধু তা-ই নয়, মেনোপজের সময় মহিলাদের শরীরের নানা ধরনের পরিবর্তন আসতে থাকে। যার জেরে ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও বাড়তে থাকে। আসলে এর ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ তো বাড়েই, সেই সঙ্গে দেহের ওজনও বাড়তে থাকে। এমনকী ঘুমের ক্ষেত্রেও সমস্যা দেখা যায়। আর এটাই বড়সড় শারীরিক জটিলতা বা বিপদ ডেকে আনতে পারে।
(Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি কেবলমাত্র সাধারণ তথ্যের জন্য, তাই বিস্তারিত জানতে হলে সর্বদা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।)