ছোট থেকেই পড়াশোনা ও খেলাধূলায় মেধাবী ছিল অঙ্কিত। কিন্তু ২০১৫ সালে এক মর্মান্তিক পথদুর্ঘটনা যেন সবকিছু ওলটপালট করে দেয়। গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। শিরদাঁড়া পুরোপুরি ভেঙে যায়, চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন—বাকি জীবন হুইলচেয়ারের ওপরেই কাটাতে হবে। এই সংবাদে ভেঙে পড়েন অঙ্কিত ও তাঁর পরিবার।
তবে হার মেনে নেওয়ার মানুষ নন তিনি। পরিবারের অদম্য সাহস, পাশে থাকা মা–বাবার স্নেহ এবং নিজের দৃঢ় মানসিকতা তাকে নতুন পথ দেখায়। ২০১৯ সালে, দুর্ঘটনার চার বছর পর, হুইলচেয়ার নিয়েই আবার ফিরে আসেন মাঠে—যে মাঠ একদিন ছিল তার সবচেয়ে প্রিয় জায়গা।
advertisement
তারপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি। একের পর এক লড়াই জিতে অঙ্কিত পৌঁছে যান জাতীয় স্তরের মঞ্চে। সম্প্রতি জামশেদপুর টাটায় অনুষ্ঠিত সিক্স ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন প্যারা ব্যাডমিন্টনে সাফল্যের সঙ্গে বাড়ি ফিরেছেন তিনি। পাশাপাশি হুইলচেয়ার বাস্কেটবলেও পারদর্শী অঙ্কিত।
অঙ্কিতের কথায়, “খেলাধুলাই এখন আমার পরিচয়। হুইলচেয়ার আমাকে আটকে রাখেনি। বরং লড়াই করার শক্তি দিয়েছে।” একইসঙ্গে তিনি আক্ষেপও জানালেন—সরকারি সহযোগিতা বা পরিকাঠামো পেলে আরও অনেক দূর এগোনো সম্ভব।
অঙ্কিতের মা বলেন, “দুর্ঘটনা যখন-তখন হতে পারে। কিন্তু সেটা কাটিয়ে ওঠার জন্য লাগে মানসিক শক্তি। অঙ্কিতের ইচ্ছাশক্তি আর আমাদের সহযোগিতার জোরেই আজ সে আবার উঠে দাঁড়িয়েছে—নিজের মতো করে।” অঙ্কিত প্রধানের এই যাত্রা প্রমাণ করে—ইচ্ছা, চেষ্টা আর সাহস থাকলে জীবনের সবচেয়ে বড় বিপর্যয়কেও জয় করা যায়।