ভারতীয় ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ শিশুই ডেন্টাল ক্যাভিটি বা দাঁতের ক্ষয়ের সমস্যায় ভুগছে। অন্যান্য সমস্যার মধ্যে রয়েছে মাড়ির রোগ, মিসঅ্যালাইন্ড টিথ এবং ক্ষয়জনিত কারণে আগাম দাঁত পড়ে যাওয়া।
প্রধান কারণ:
advertisement
স্বাস্থ্যবিধি – শিশুদের নিয়মিত ব্রাশ করার অভ্যাস গড়ে তোলা প্রয়োজন। বিশেষ করে রাতে।
চিনিযুক্ত খাবার – অতিরিক্ত ক্যান্ডি, সফট ড্রিঙ্ক এবং প্রসেসড স্ন্যাক্স খাওয়ার কারণে দাঁত ক্ষয়ে যায়।
সচেতনতার অভাব – নিয়মিত ডেন্টাল চেকআপ এবং দাঁতের যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। কিন্তু অধিকাংশ অভিভাবকই এড়িয়ে যান।
এএম মেডিক্যাল সেন্টারের এমডিএস (পেডোডন্টিকস) ডাঃ পায়েল কর্মকার বলছেন, “দুঃখজনকভাবে দাঁতের ক্ষয় বর্তমানে শিশুদের মধ্যে খুব সাধারণ সমস্যা হয়ে উঠেছে। যে দাঁতের রোগগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে তার মধ্যে এটা একটা।”
আরও পড়ুন: সকালবেলা ভাতের সঙ্গে ঘি খেলে ওজন কমে জানেন? বিশ্বাস হচ্ছে না? জানুন ডাক্তারের মত
অভিভাবকরা মনে করেন, বেশি চকোলেট খেলে দাঁত ক্ষয়ে যায়। কিন্তু বাস্তবটা আলাদা। বর্তমানে শিশুদের খাদ্যাভ্যাস আমূল বদলে গিয়েছে। আগে খাবারে পরিশোধিত চিনির পরিমাণ কম থাকত। শাকসবজি এবং বাড়িতে তৈরি খাবারই খাওয়ানো হত। এখন বাইরের খাবার এবং প্রসেসড ফুডের চল হয়েছে। ফলে ওরাল হাইজিনের বারোটা বাজছে।
স্টিকি প্রসেসড ফুড, তথাকথিত স্বাস্থ্যকর খাবার এবং পানীয়তে প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে। শিশুর দাঁতের জন্য যা অত্যন্ত ক্ষতিকর। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যেও এই সব সমস্যা দেখা যাচ্ছে।
ডাঃ পায়েল কর্মকার
বোতলে দুধ খাওয়ার অভ্যাস থেকেও দাঁতের ক্ষয় হতে পারে। তাই প্রথম দাঁত ওঠার পর থেকে প্রতি ৬ মাস অন্তর ডেন্টাল চেকআপ করা জরুরি। সমস্যা থাকলে প্রথমেই তার সমাধান করতে হবে। অভিভাবকদেরও ওরাল হাইজিন সম্পর্কে শিক্ষা দিতে হবে শিশুকে।
দুধের দাঁত পড়ে যায়, আবার নতুন গজায়। তাই শুরুতে এই বিষয়টাকে অবহেলা করেন অভিভাবকরা। মনে করেন, দাঁত যখন পড়েই যাবে তখন আর ডাক্তারের কাছে গিয়ে কী লাভ। কিন্তু যখন ফের নতুন দাঁত উঠবে তখন সমস্যা হতে পারে।
আরও পড়ুন: NJP-তে নেমেই দার্জিলিংয়ের বাস-ট্যাক্সির এলাহি বন্দোবস্ত! একদম সস্তায়, বুক করে ফেলুন এখনই
খেলাধুলা করতে গিয়েও দাঁতে আঘাত লাগতে পারে। এক্ষেত্রেও শিশুকে সময়মতো পেডিয়াট্রিক ডেন্টিস্ট বা ডেন্টাল ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া উচিত। তবেই পরবর্তীকালে জটিল এবং বেদনাদায়ক প্রক্রিয়া এড়ানো সম্ভব হবে।
বাঁকা দাঁত বা দাঁতের আকার যদি ঠিক না থাকে তাহলেও ডেন্টিস্টের পরামর্শ নিতে হবে। প্রাথমিক অবস্থায় এগুলো শনাক্ত করা গেলে, দ্রুত এবং সঠিকভাবে সমস্যার সমাধান করা যায়। এ থেকে বাঁচার কিছু কার্যকরী উপায় রয়েছে। সেগুলো মেনে চলা উচিত।
নিয়মিত ব্রাশিং এবং ফ্লসিং: শিশুদের প্রতিদিন দু’বার ফ্লুরাইড টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করাতে হবে। ফ্লস ব্যবহার করারও পরামর্শ দেওয়া হয়।
সুষম খাদ্য: ফল, শাকসবজি এবং ডেয়ারি পণ্যই আদর্শ। চিনি যুক্ত স্ন্যাকস এবং পানীয় এড়িয়ে যাওয়াই ভাল।
ডেন্টাল চেক-আপ: প্রতি ছয় মাসে অন্তর একবার ডেন্টিস্টের কাছে যাওয়া প্রাথমিক সমস্যা শনাক্ত এবং চিকিৎসার ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে।
ফ্লুরাইড ট্রিটমেন্ট এবং সিল্যান্ট: ফ্লুরাইড দাঁত শক্তিশালী করে এবং ক্ষয় প্রতিরোধে সাহায্য করে। ডেন্টাল সিল্যান্ট দাঁতের পৃষ্ঠে সুরক্ষার আবরণ দেয়।
বিদ্যালয়ে সচেতনতা ক্যাম্পেইন: বিদ্যালয়গুলো শিশুদের ওরাল হেলথ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতে ডেন্টাল হেলথ ক্যাম্প এবং কর্মশালার আয়োজন করতে পারে।