এই রোগে পুরুষদের স্তনের আকার বৃদ্ধি পায়। আসলে স্তনের আশপাশে অতিরিক্ত কলাকোষ বৃদ্ধি পেলে স্তন ঝুলে যায় এবং প্রভাব পড়ে অ্যারিওলার (স্তনবৃন্ত সংলগ্ন কালচে ত্বক) উপর। কখনও কখনও একটি স্তনে এই সমস্যা দেখা যায়, আবার কখনও দুই স্তনেই গাইনিকোম্যাস্টিয়া হতে পারে। সাধারণত এই রোগ হয় হরমোনজনিত পরিবর্তন, ওজন বৃদ্ধি, জিনগত কারণ, কোনও ওষুধের ব্যবহার অথবা মাত্রাতিরিক্ত মাদকাসক্তির কারণে। যে কোনও বয়সের পুরুষ এই সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারেন। আর এই রোগের প্রভাব পড়তে পারে ব্যক্তিগত জীবনেও। কারণ দেখা গিয়েছে, গাইনিকোম্যাস্টিয়ায় আক্রান্ত পুরুষরা অনেক সময় আত্মবিশ্বাসের অভাববোধ করেন। এমনকী সেই রোগীরা নিজেদের গুটিয়ে নেন চারপাশ থেকে।
advertisement
আরও পড়ুন-টুথপেস্ট কিনতে যাচ্ছেন? কেনার আগে এই বিষয়গুলো একবার ভেবে দেখবেন
আর পুরুষদের স্তনের আকার বৃদ্ধি পেলে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তা ছোট করা হয়। সেই বিষয়েই বিশদে জেনে নেওয়া যাক।
ব্রেস্ট রিডাকশন সার্জারির আগে যেসব বিষয় মাথায় রাখতে হবে:
গাইনিকোম্যাস্টিয়া ঠেকাতে যে অস্ত্রোপচার হবে, তার কাটা-ছেঁড়ার চিহ্ন থাকবে। হয় তো কাটাছেঁড়ার চিহ্ন বাইরে থেকে অনেক সময় না-ও বোঝা যেতে পারে। আবার অনেক সময় তা বাইরে থেকে দেখাও যেতে পারে। এর পাশাপাশি অস্ত্রোপচারের ব্য়য়ের দিকটাও মাথায় রাখা জরুরি। এমনিতে এই ধরনের অস্ত্রোপচারের আংশিক ব্য়য় কভার করবে মেডিক্যাল ইনস্যুরেন্স। তার বাইরে কতটা খরচ হতে পারে, সেই বিষয়েও জেনে নিতে হবে। এখানেই শেষ নয়, যাঁরা ধূমপায়ী, তাঁদের কিন্তু অস্ত্রোপচারের পরে ধূমপান ছেড়ে দিতে হবে।
আরও পড়ুন-সোনা কি আদৌ সৌভাগ্য নিয়ে আসে জীবনে? জানুন সোনা পরলে কী লাভ
ব্রেস্ট রিডাকশন সার্জারি:
এই ধরনের অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগ করা হয়। তার মধ্যে অন্যতম লাইপোসাকশন, একসিশন বা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কলা-কোষ বাদ দেওয়া। এই দুই পদ্ধতি একসঙ্গে প্রয়োগ করেও অনেক সময় স্তনের আকার ছোট করা হয়।
অস্ত্রোপচারের একদম পরেই যেসব সমস্যা দেখা দিতে পারে:
জায়গাটা ফুলে যাওয়া
অবশ হয়ে যাওয়ার অনুভূতি
ব্যথা ও অস্বস্তি
ড্রেসিং অথবা ব্যান্ডেজ
কাটা-ছেঁড়ার দাগ দেখা যাওয়া
অস্ত্রোপচারের পরে কী কী জটিলতা দেখা দিতে পারে?
অ্যানাস্থেশিয়া থেকে অ্যালার্জি
রক্তক্ষরণ অথবা সংক্রমণের মতো অস্ত্রোপচারজনিত ঝুঁকি
রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়া
কিছু কিছু অংশে অবশ-ভাব
হার্ট অ্যাটাকের মতো মারণ কার্ডিও ভাসকুলার রোগ
কাটা-ছেঁড়ার স্থানে প্রদাহ অথবা চুলকানি
অসমান বা ছোট-বড় স্তনযুগল
স্তনবৃন্তের কলাকোষ নষ্ট
এই সব জটিলতা এড়াতে ফের অস্ত্রোপচার করতে হতে পারে।
অস্ত্রোপচারের পরে নিজের যত্ন:
ক্ষতর গভীরতা অনুযায়ী সমস্ত ডাক্তারি নির্দেশ মানতে হবে।
লাইপোসাকশন হলে কয়েক দিনেই রোগী সুস্থ হয়ে ওঠেন। তবে একসিশন হলে সেরে উঠতে এক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।
অন্তত এক মাস শারীরিক কসরত, ভারী জিনিস তোলার অভ্যেস থেকে বিরত থাকতে হবে।
এক থেকে চার সপ্তাহ ইলাস্টিক দেওয়া পোশাক পরা আবশ্যক।
রক্তক্ষরণ অথবা মারাত্মক ব্যথা হলে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।
অস্ত্রোপচার ছাড়াও স্তনের আকার কমানোর উপায়:
অনেকেই অস্ত্রোপচারের জটিলতা এড়াতে সেই পথে হাঁটতে চান না, তাঁদের জন্য রয়েছে অন্য উপায়ও-
যে ওষুধ খাওয়ার কারণে গাইনিকোম্যাস্টিয়া হয়েছে, সেই ওষুধ ডাক্তারের পরামর্শ মেনে বন্ধ করতে হবে।
অনেক সময় ভুলভাল খাওয়ার কারণে অথবা মাদক সেবনের কারণে স্তনের আকার বৃদ্ধি পায়। তাই স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে এবং নিয়মিত এক্সারসাইজ করতে হবে।
নিজেকে ভালবাসতে হবে। আত্মবিশ্বাসের অভাব হলে মনোবিদের কাছে যেতে হবে অথবা কাউন্সেলিং করাতে হবে।