বিএলকে-ম্যাক্স সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের চেস্ট অ্যান্ড রেসপিরেটরি ডিজিজের প্রধান পরিচালক এবং বিভাগীয় প্রধান ডা. সন্দীপ নায়ার এই বিষয়ে আলোকপাত করছেন।
বায়ু দূষণ
বায়ু দূষণ আমাদের ফুসফুসের ক্ষতি করতে পারে। দূষিত পরিবেশে থাকা এবং বিভিন্ন ক্ষতিকারক গ্যাস শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে গ্রহণ করলে দীর্ঘস্থায়ী অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (COPD), হাঁপানি, এমনকি ক্যানসারের মতো রোগ হতে পারে।
advertisement
বিশেষ করে খনি, নির্মাণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে কর্মরত ব্যক্তিরা ক্ষতিকারক ধোঁয়া এবং বিষাক্ত পদার্থের সংস্পর্শে আসেন, তা ফুসফুসের উপরে প্রভাব ফেলে। খনির দুর্বল বায়ুচলাচল ক্ষতিকারক ধুলোর সংস্পর্শে আসার সম্ভাবনা বাড়ায়। অনেক শ্রমিক কয়লা এবং সিলিকা কণার সংস্পর্শে আসেন, এর থেকে নিউমোকোনিওসিসের মতো রোগ হয়, যার ফলে ফুসফুসে দাগ পড়ে এবং শ্বাসকষ্ট হয়। এছাড়াও, এর ফলে শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ এবং COPD বৃদ্ধি পেতে পারে।
বসে থাকা
সারা দিন বসে থাকা আমাদের শ্বাসযন্ত্রের কার্যপদ্ধতি খারাপ করে তোলে, এর ফলে শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে জড়িত পেশীগুলিও দুর্বল হয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে ফুসফুসের ক্ষমতা কমে যায়, শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায় এবং মানুষ সহজেই ক্লান্ত হয়ে পড়ে। শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়, সেই সঙ্গে COPD-এর প্রকোপও বৃদ্ধি পায়।
অ্যালকোহল সেবন
অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন শরীরের প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে দুর্বল করে দিতে পারে। এটি ফুসফুস সহ সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কার্যকারিতা হ্রাস, মিউকোসিলিয়ারি ক্লিয়ারেন্স ব্যাহত হওয়া এবং অ্যালভিওলার এপিথেলিয়াল বাধা ফুসফুসের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়।
ডায়েট
আমাদের ফুসফুস সুস্থ রাখতে খাদ্যাভ্যাসও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফলমূল এবং শাকসবজি, গোটা শস্য, স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং চর্বিহীন প্রোটিন ফুসফুসের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য করে। প্রসেসড এবং ভাজা খাবার, অতিরিক্ত লবণ এবং উচ্চ চিনিযুক্ত খাবার ফুসফুসের ক্ষতি করতে পারে।
জল খাওয়া দরকার
এছাড়াও ফুসফুসের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য নিজেকে ভালভাবে হাইড্রেটেড রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শ্বাসনালী পরিষ্কার রাখতে প্রতিদিন কমপক্ষে ৬ থেকে ৮ গ্লাস জল খেতেই হবে।
বসার ভঙ্গি
ফুসফুস সুস্থ রাখার জন্য শরীরের ভঙ্গি সঠিক রাখাও অপরিহার্য। শরীর সামনের দিকে ঝুঁকে থাকা বা সামনের দিকে মাথা ঝুঁকিয়ে রেখে কাজ করা চলা ফুসফুসের সুস্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে। ফুসফুসকে আরও বেশি জায়গা দেওয়ার একটি সহজ কৌশল হল চেয়ারে সামান্য পিছনে ঝুঁকে বসা, বুক উঁচু রাখা এবং গভীর শ্বাস নেওয়া- এভাবে বসে কাজ করলে শরীরের সামনের অংশ প্রসারিত হয়।