অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের সমস্যায় রোগীদের মধ্যে দুটি স্বতন্ত্র বিভাগ রয়েছে। প্রথম গ্রুপে রয়েছেন এমন বয়স্ক ব্যক্তিরা যাঁরা ফ্র্যাকচার, বয়স-সম্পর্কিত সমস্যা বা অঙ্গবিন্যাসজনিত সমস্যার কারণে ব্যথায় ভুগছেন। দ্বিতীয় গ্রুপে রয়েছেন তরুণরা যাদের বয়স ২০ থেকে ৪০ বছর।
আরও পড়ুন: পুজোয় বৃষ্টির আশঙ্কার মেঘ কি কাটল? আবহাওয়া নিয়ে বড় খবর জানুন
advertisement
বর্তমানে ডেস্ক জবে দীর্ঘ সময় কাটানো এবং ব্যায়ামের অভাব, দুর্বল ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস এই ব্যথা বাড়িয়ে তুলছে। এই উদ্বেগজনক বৃদ্ধি রোধ করার জন্য, বিশেষজ্ঞরা মোবাইল ফোনের সীমাবদ্ধ ব্যবহার, বিশেষ করে শিশুদের জন্য সঠিক বসার ভঙ্গি ইত্যাদিকে অধিক গুরুত্ব দিচ্ছেন।
নয়াদিল্লিতে অবস্থিত ইন্ডিয়ান স্পাইনাল ইনজুরিস সেন্টারের প্রধান ডায় বিকাশ ট্যান্ডন জানিয়েছেন যে, “ভারতে মেরুদণ্ডের সমস্যাগুলি উদ্বেগজনক গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এটি মূলত আমাদের জীবনধারার ফলাফল।”
আরও পড়ুন: বাজারে হয়তো তাকিয়েও দেখেন না লাউ শাক, উপকার জানলে এখনই কিনতে ছুটবেন!
গত দুই থেকে তিন বছরে, ডা. ট্যান্ডন মেরুদন্ড-সম্পর্কিত সমস্যায় জর্জরিত রোগীদের প্রায় ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি লক্ষ্য করেছেন। অস্বাস্থ্যকর জীবনধারা, দীর্ঘসময় বসে থাকা, নিরলস মানসিক চাপ এবং পরিবেশের অবনতির ইত্যাদি এর অন্যতম কারণ।
শ্রী বালাজি অ্যাকশন মেডিক্যাল ইনস্টিটিউটের স্পাইনাল সার্জারি এবং রিহ্যাবিলিটেশনের প্রধান ডা. এইচএস চাব্রা জানিয়েছেন যে তিনি মেরুদন্ড-সম্পর্কিত সমস্যায় ভুক্তভোগী রোগীদের উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি লক্ষ্য করেছেন।
একই ভাবে, জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট এবং ওখলার ফোর্টিস এসকর্টসের অর্থোপেডিকসের ডিরেক্টর, ডা. আমান দুয়া জানিয়েছেন যে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ রোগীরা প্রায়ই পিঠে এবং ঘাড়ের নিচের অংশে ব্যথার অভিযোগ নিয়ে আসছেন।
তিনি জানিয়েছেন যে, মোবাইল ফোনের অত্যধিক ব্যবহারের কারণেও এই সমস্যা বাড়ছে যা “টেক নেক” নামে পরিচিত।
বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন যে, পিঠের ব্যথার চিকিৎসা প্রতিরোধের মধ্যে রয়েছে কারণজনিত সমস্যাগুলির সমাধান করা।
ডাক্তাররা বিশ্বাস করেন যে, স্বাস্থ্যকর এবং সক্রিয় জীবনধারা বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
ইন্ডিয়ান স্পাইনাল ইনজুরি সেন্টারের প্রধান জানিয়েছেন যে, যাঁরা ডেস্ক-বাউন্ড পেশায় রয়েছেন, তাঁদের ঝুঁকি অনেকটাই বেশি।
তিনি রোগীদের নিয়মিত ব্যায়াম এবং বসার সঠিক ভঙ্গি বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। যাঁরা ইতিমধ্যেই এই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন তাঁদের জন্য প্রাথমিক রোগ নির্ণয়, ফিজিওথেরাপি, জীবনধারা পরিবর্তন, এবং প্রয়োজনে ন্যূনতম অস্ত্রোপচার ইত্যাদি জরুরি।
চাব্রা আরও বলেন যে, নিয়মিত ব্যায়াম যেমন হাঁটা, ট্রেডমিল ব্যবহার, খেলাধুলা, সাঁতার, অ্যারোবিক্স, জগিং এবং দৌড়ানো ইত্যাদি মেরুদণ্ডের সমস্যা প্রতিরোধে সহায়তা করে।
এছাড়াও নিয়মিত ক্যালসিয়াম পরিপূরক গ্রহণ এবং স্বাস্থ্যকর ডায়েট চার্ট বজায় রাখতে হবে।
