TRENDING:

কলকাতার পুরনো আবেদন ফিরেছে তাঁর ক্যানভাসে, গুজরাতের ছেলে ফিরিয়ে আনছেন জলরঙে বাঙালির গৌরবের দিন-রাত

Last Updated:

Artist Avanish Trivedi Recreates Kolkata Street: ত্রিবেদীর পূর্বপুরুষরা প্রায় ১৫০ বছর আগে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় গৌরবময় শহর গুজরাত থেকে এসেছিলেন। তাঁর মত, কেবল কলকাতার কাছেই বলার মতো আবেগ এবং গল্প রয়েছে, ফলে সেগুলিই তিনি জলরঙে তুলে ধরার চেষ্টা করেন।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
কলকাতা: এক সময়ে ছিল দেশের রাজধানী। এখন অবশ্য কলকাতাকে অনেকেই একটি দূষণে পূর্ণ, কোলাহলে পূর্ণ এবং নিস্তেজ মহানগর হিসেবে দেখেন। কিন্তু এখানেই নিজের ২-বিএইচকে ফ্ল্যাট থেকে শিল্পী অবনীশ ত্রিবেদী এঁকে চলেন এটি প্রাণবন্ত, উজ্জ্বল মায়ানগরের ছবি, যা তারঁ মতে, একই সঙ্গে নতুন এবং পুরাতনও।
কলকাতার পুরনো আবেদন ফিরেছে তাঁর ক্যানভাসে
কলকাতার পুরনো আবেদন ফিরেছে তাঁর ক্যানভাসে
advertisement

ত্রিবেদীর পূর্বপুরুষরা প্রায় ১৫০ বছর আগে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় গৌরবময় শহর গুজরাত থেকে এসেছিলেন। তাঁর মত, কেবল কলকাতার কাছেই বলার মতো আবেগ এবং গল্প রয়েছে, ফলে সেগুলিই তিনি জলরঙে তুলে ধরার চেষ্টা করেন।

আরও পড়ুন– একই নামের ২ ছবি, বাবারটা তেমন চলেনি, ২২ বছর পর ইতিহাস গড়লেন ছেলে ! ৫৮ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে তুললেন ১৯৩ কোটি টাকা

advertisement

৩৭ বছর বয়সী এই শিল্পীর শিল্পকর্মে গলির রাজনৈতিক গ্রাফিতি আঁকা দেয়ালের পটভূমিতে অলস রিকশাচালককে যেমন দেখা যায়, তেমনই আবার মানুষ, কাক এবং ট্রামে ভরা ব্যস্ত রাস্তা এবং ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত কলকাতার দুর্গাপূজার বিষয়ও উঠে আসে।

advertisement

“দিল্লি, মুম্বই বা বারাণসীতে আমি এই ভাব পাইনি। আমি চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু কোনও ভাবেই সেই শহরগুলি আমাকে শিল্পী হিসেবে কখনও আকর্ষণ করেনি। কলকাতার যে আকর্ষণ, কলকাতার যে আবেদন… এটা যেন প্রতিটি ফ্রেম আঁকার জন্য প্রস্তুত,” তিনি পিটিআইকে বলেন।

ট্রাম, যা সম্ভবত এখন সমগ্র এশিয়ার মধ্যে কেবল কলকাতায় বিদ্যমান, পাশাপাশি হাতে টানা রিকশা ত্রিবেদীর ক্যানভাসে প্রিয় বিষয়, কারণ এগুলি তাঁকে তাঁর শৈশবে ফিরিয়ে নিয়ে যায়।

advertisement

আরও পড়ুন– আকাশ দিয়ে যাচ্ছিল একটি ভিভিআইপি বিমান, হঠাৎ সমুদ্র থেকে একটা ঢেউ ওঠায় বিমানের জিপিএস সিস্টেম জ্যাম হয়ে গেল ! ষড়যন্ত্র বুঝলে গায়ে কাঁটা দেবে

“ট্রাম আমাকে স্কুলে নিয়ে যেত এবং বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে আসত। আমি ট্রামে আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে যেতাম। আমি রিকশায় করে অল্প দূরত্ব ভ্রমণ করতাম। আমি অনেক গলিতে ঘুরে বেড়াতাম। আমি এখনও তাই করি,” বলছেন ত্রিবেদী।

advertisement

তিনি যে বাড়িগুলির ছবি এঁকেছেন, তার অনেকগুলোরই দেয়ালে সিপিআই(এম)-এর কাস্তে, হাতুড়ি এবং তারার প্রতীক চোখে পড়ে, যা অতীতের পশ্চিমবঙ্গের একটি সর্বব্যাপী গ্রাফিতি ছিল। ২০১১ সালে দলটি রাজ্যে ক্ষমতা হারায়। ত্রিবেদী বলেন যে তিনি কোনও রাজনৈতিক সচেতনতা থেকে এই ছবি আঁকেন না, কেবল এই প্রতীকগুলি তাঁকে তাঁর শৈশবের দিনগুলিতে ফিরিয়ে নিয়ে যায়।

ট্রাম, হাতে টানা রিকশা এবং সিপিআই(এম)-এর লোগো হয়তো দুই দশক আগেও শহরের প্রতীক ছিল। তাহলে এই শিল্পী কি অতীতে বাস করেন? ‘‘পুরনো ধারা সবসময় আমার কাছে আবেদন করে। মূল্যবোধ এবং দৃশ্য দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। একশো বছর বা তারও বেশি সময় পরে একটি ছবি হারিয়ে যায়। কিন্তু মোনালিসা শত শত বছর পরেও সেখানেই থেকে যায়,’’ তিনি বলেন।

আরও পড়ুন– এত ভাল ব্রেকফাস্ট আপনি অনেকদিন খাননি, দুর্বল শরীরে প্রাণ সঞ্চার করবে ! জেনে নিন কী করে বানাবেন দুবরি

লিওনার্দো দা ভিঞ্চির সৃষ্ট নারীর আসল পরিচয় ৬০০ বছর পরেও রহস্যের আড়ালে থাকার মতোই ত্রিবেদীর কলকাতার অনেক দৃশ্যে এক রহস্যময় নারীর আবির্ভাব ঘটে। শিল্পী যাঁকে তাঁর ভক্ত হিসেবে বর্ণনা করেছেন, তাঁর বয়স ২০-র কোঠায় এবং তাঁর পিঠে ট্যাটু আঁকা। তার লাল রঙের ব্লাউজ এবং লাল পাড়াযুক্ত সাদা শাড়ি, তাঁর কালো পুরু হাই হিল ছবিতে স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। সাধারণ বাঙালি পোশাক পরা আধুনিক এই নারীর মুখ সবসময় তাঁর ঢেউ খেলানো চুলে ঢাকা থাকে।

“কলকাতার মেয়েরা সাহসী এবং স্বাধীন। যাঁরা আমার কাজ দেখেন, তাঁরা দ্রুত এর সঙ্গে পরিচিত হন,” বলছেন ত্রিবেদী।

ত্রিবেদী আগামী বছর নিউ ইয়র্কে তাঁর দ্বিতীয় প্রদর্শনীর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন, মজার ব্যাপার এই যে পরিণত বয়সে এসেই তিনি রঙ এবং ব্রাশের কাজটি গুরুত্ব সহকারে শুরু করেছেন। তিনি গত কয়েক বছর ধরে কলকাতার রাস্তার তাঁর ছবির ডেস্ক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করেন, যার বেশিরভাগই উপহার হিসেবে দেওয়া হয় এবং কিছু বিক্রিও হয়।

কিশোর বয়সে ত্রিবেদীর সঙ্গে কলকাতার একটি আর্ট গ্যালারিতে মকবুল ফিদা হুসেনের দেখা হয়েছিল। কিন্তু এখন অন্যদের কাজের দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার ভয়ে তিনি আর্ট গ্যালারিতে যেতে পছন্দ করেন না।

অন্যান্য অনেক শিশুর মতো তিনিও এক সময়ে জনপ্রিয় অ্যানিমেশন সিরিজের চরিত্রগুলি আঁকতেন। অনেক পরে তিনি শিল্পের জগতে গভীরভাবে আগ্রহী হয়ে ওঠেন এবং এখানকার একটি অ্যাকাডেমিতে ভর্তি হন।

যদিও জলরঙ তাঁর প্রিয় মাধ্যম, তাঁর কিছু কাজ অ্যাক্রিলিক দিয়েও তৈরি। একটি শীর্ষ স্তরের আইটি সংস্থার কর্মচারী ত্রিবেদী তাঁর নিয়োগকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ কারণ তাঁরা তাঁকে নিজের আবেগ অনুসরণ করার স্বাধীনতা দিয়েছেন। তবে, তিনি অদূর ভবিষ্যতে চাকরি ছেড়ে দিয়ে একজন পূর্ণকালীন শিল্পী হওয়ার কথা ভাবছেন।

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
লালগোলাতে রাজরাজেশ্বরী রূপে পূজিতা হন মা কালী! দেওয়া হয় ইলিশের ভোগ
আরও দেখুন

‘‘ঈশ্বরের কৃপায় আমি মাসে গড়ে ১০/১২টি ছবি বিদেশে পাঠাই। যখন আমার কাছে আরও সময় থাকবে, তখন আশা করি এই সংখ্যা আরও বাড়বে,’’ তিনি বলেন।

বাংলা খবর/ খবর/লাইফস্টাইল/
কলকাতার পুরনো আবেদন ফিরেছে তাঁর ক্যানভাসে, গুজরাতের ছেলে ফিরিয়ে আনছেন জলরঙে বাঙালির গৌরবের দিন-রাত
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল