২০১১ সালে তৈরি হয় দুনিয়ার অন্যতম বৃহৎ এই জাহাজ। যে জাহাজ পরিচালনার সাথে যুক্ত থাকেন ২০ জন বিশেষ ক্রু। এম ভি লেক ডি কেপ ভেসেল যাত্রা শুরু করেছে চলতি বছরের ১০ মে অষ্ট্রেলিয়া থেকে। জ্বালানি সংগ্রহের জন্যে জাহাজটি গিয়েছিল সিঙ্গাপুরে। এরপর এই পণ্যবাহী জাহাজ যায় বিশাখাপত্তনম বন্দরে৷ সেখানে প্রায় ৯৫ হাজার ৮১০ মেট্রিক টন পণ্য খালাস করে। তারপর শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় নদী বন্দরে নিয়ে আসা হয় এই পণ্যবাহী জাহাজটিকে। বিশ্বের বৃহত্তম এই পণ্যবাহী জাহাজ নোঙর করার জন্যে প্রয়োজন প্রায় ৯.২ মিটার নাব্যতা৷ আর শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বন্দরের মতো নেভিগেশন চ্যানেল যা ক্রমশ পরিবর্তনীয় থাকে। সেখানে এই বৃহৎ পণ্যবাহী জাহাজকে নিয়ে আসা ও পণ্য খালাস করা ছিল একটি মস্ত বড় চ্যালেঞ্জ।
advertisement
বন্দরের চেয়ারম্যান বিনীত কুমার জানিয়েছেন, "চ্যালেঞ্জিং এই কাজ অসাধারণ দক্ষতার সঙ্গে সামলেছেন বন্দরের ইঞ্জিনিয়র, নেভিগেটর, নাবিক ও কর্মীরা।" দুটি ফ্লোটিং ক্রেনের সাহায্যে জাহাজ থেকে পণ্য নামানো হচ্ছে। তারপর সেখান থেকে বার্জে পাঠানো হচ্ছে পণ্য। সেটি চলে আসছে হলদিয়া ফ্লোটিং টার্মিনালে৷ এ বার সেখান থেকে রেকে পাঠানো হচ্ছে। সেই রেক রওনা দেবে নেপালের উদ্দেশ্যে। বন্দর চেয়ারম্যান বিনীত কুমার জানিয়েছেন, "কেপ ভেসেলের মতো বড় জাহাজ যাতে বন্দরে আসতে আগ্রহ প্রকাশ করে তা নিয়ে আমরা আমাদের পরিকাঠামো ঢেলে সাজিয়েছি। প্রায় ১৭০ কোটি টাকা ব্যয় করে ফ্লোটিং ক্রেন, ফ্লোটিং জেটি বানানো হয়েছে। এর ফলে ব্যবসায়ীদের কাছে হলদিয়া ডক থেকে বাণিজ্য করার অনেক সুবিধা হয়েছে।" পাশাপাশি এই সমস্ত বৃহৎ পণ্যবাহী জাহাজ বন্দরে আসায় লাভবান হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। কারণ একেবারে পণ্য নিয়ে এই জাহাজ বিশাখাপত্তনমে পণ্য খালাস করেছে। তারপর সাগরে এসেছে যা কলকাতা ও হলদিয়া ডকের সাথে সংযুক্ত।
বন্দর চেয়ারম্যান বিনীত কুমার জানিয়েছেন, "ধরে নেওয়া যাক এই জাহাজ বিশাখাপত্তনমে সব পণ্য খালাস করল। তারপর ব্যবসায়ীদের বিশাখাপত্তনম থেকে রেলে করে আবার পণ্য আনতে হত কলকাতায়। সেখান থেকে যেত নেপাল বা নদী তীরবর্তী জায়গায়। তার জেরে খরচ অনেক বেড়ে যেত।" সঠিক নাব্যতা আর পরিকাঠামোগত উন্নতি দুইয়ের মিশেলে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় নদী বন্দরে বৃহত্তম পণ্যবাহী জাহাজ আসা তাই বন্দরের ব্যবসার পক্ষেও শুভ।
ABIR GHOSHAL