বিচারককে সরকারি আইনজীবী বলেন, "মাকে আমরা ভগবান মনে করি। মা কতকিছু ত্যাগ করে সন্তানের জন্য। কিন্তু যে মা নিজের দু'মাসের সন্তানের মুখে প্লাস্টিক জড়িয়ে গলা টিপে খুন করতে পারে সেই মা মাতৃত্বের নামে কলঙ্ক। মানবজাতির কাছে এটা লজ্জার দিন। আমার মতে আজ কালাদিন।"
রবিবার বেলেঘাটা সিআইটি রোডে সন্ধ্যার ফ্ল্যাট থেকে তাকে মারধর করে কন্যা সন্তানকে অপহরণ করা হয়েছে বলে প্রথমে দাবি করা হয়। সেই মতো পুলিশ সিসিটিভির ফুটেজ ঘেঁটে অভিযুক্তের সন্ধান পাওয়ার চেষ্টা করতে থাকে। কিন্তু তদন্ত এগোতেই আদৌ অপহরণ হয়েছে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ বাড়তে থাকে পুলিশের। সন্ধ্যা পুলিশকে যা বয়ান দিয়েছে তার সাথে বাস্তবের মিল পাচ্ছিল না তদন্তকারীরা। সন্দেহ তার দিকেই এগোচ্ছিল কারণ পুলিশকে জানিয়েছিল অপহরণকারী দেওয়ালে তার মাথা ঠুকে দিয়েছিল। চশমা পরা অবস্থায় দেওয়ালে মাথা ঠুকলে সেটি ভেঙে যাওয়ার কথা কিন্তু সন্ধ্যার চশমায় কোনও দাগ পর্যন্ত ছিল না। এরপর তাকে চেপে ধরতেই সন্তানকে খুনের কথা স্বীকার করে সন্ধ্যা। জানায়, তদন্তের মোড় ঘোরাতেই অপহরণের মিথ্যা নাটক করেছিল।
advertisement
এরপর সন্ধ্যাই পুলিশকে দেখিয়ে দেয় কীভাবে সন্তানকে খুন করে দেহ ফেলে দিয়েছে সে। তারপর আবাসনের ম্যানহোল থেকে উদ্ধার হয় দু'মাসের সন্তানের দেহ। মানসিক সমস্যার কারণে এই ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করে পুলিশ। যদিও এর পিছনে অন্য কোনও কারণ আছে কিনা তাও দেখা হচ্ছে।
এদিন শিয়ালদহ আদালতে সরকারি আইনজীবী বিচারককে গোটা ঘটনা জানানোর পর অভিযুক্ত মায়ের ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানান। অরূপ বলেন, "কী কারণে এই খুন, আর কেউ এই ঘটনায় জড়িত কিনা তা জানা জরুরি। তাই ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখা প্রয়োজন।" বিচারক অভিযুক্তকে ৪ ফেব্রুয়ারি অবধি পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
মঙ্গলবার ঘটনাস্থলে যাবে ফরেনসিক তদন্তকারীরা। ঘটনাস্থল থেকে তারা নমুুুনা সংগ্রহ করবে পাশাপাশি সংগ্রহ করা হবে ঘটনাস্থলের ফিঙ্গারপ্রিন্ট। তার মাধ্যমে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা জানার চেষ্টা করবেন এই ঘটনার পেছনে অন্য কারও হাত আছে কিনা।
SUJOY PAL