গত ১৩ বছরে রাজ্য সরকার স্কুল, কলেজ, আইসিডিএস সেন্টার, রাস্তা, হাসপাতাল, ছোট সেতু , বাঁধ নির্মাণ-সহ নীচুতলার সামগ্রিক পরিকাঠামো বিকাশে মুলধনী বিনিয়োগ করেছে। এজন্য ব্লক স্তরের প্রত্যেক কর্মীকে তাদের এক্তিয়ারে থাকা সরকারি পরিকাঠামো সপ্তাহে একদিন পরিদর্শন করতেই হবে। এই পরিদর্শনটা আগাম জানিয়ে নয়, বরং অতর্কিতভাবে গিয়ে সরজমিনে হাল হকিকৎ দেখতে হবে।
advertisement
আরও পড়ুন: কুকুর কোন ‘রং’ দেখলে ‘রেগে’ যায় বলুন তো…? চমকে দেবে গবেষণা, গ্যারান্টি!
তিন ধরনের রঙের সংকেত দিয়ে অ্যাপে জানিয়ে দিতে হবে পরিকাঠামোর বর্তমান অবস্থার কথা। পরিকাঠামোটির এখনই কোনও সংস্কার বা মানোন্নয়নের প্রয়োজন না থাকলে অ্যাপে সবুজ সংকেত দিতে হবে। যেগুলির সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে তা হলুদ সংকেত দিতে হবে। জরুরি ভিত্তিতে এখনই সংস্কারের প্রয়োজন হলে লাল সংকেত দিতে হবে। অ্যাপে পরিকাঠামোর বর্তমান ছবির জিও ট্যাগ ও রিয়েল টাইম উল্লেখ থাকবে। এজন্য অবশ্য সরকারি কর্মীকে কিছুই করতে হবে না। সবই অ্যাপের সিস্টেমের মধ্যেই স্বয়ংক্রিয় ভাবে থাকবে। অ্যাপের মাধ্যমে ছবি তোলা মাত্রই সব তথ্য নথিভুক্ত হয়ে যাবে।
এই অ্যাপের মাধ্যমে নীচুতলার সরকারি কর্মীদের বেশি করে দায়বদ্ধ করে তোলা সম্ভব হবে বলেই মনে করছে নবান্ন অর্থ দফতরের আধিকারিকরা। প্রতিটি পরিদর্শন রিপোর্ট নিয়ম করে বিডিও, এসডিও এবং জেলাস্তরে পর্যালোচনা করতে হবে। প্রয়োজনে পুনরায় পরিদর্শন ব্যবস্থা করাতে হবে। দফতরেও এজন্য নিযুক্ত নোডাল অফিসার এই রিপোর্টগুলি পর্যালোচন করে বিভাগীয় প্রধানের নজরে আনবে। প্রয়োজন মতো প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেবে।
পাশাপাশি সরকারি পরিকাঠামোর ছোট ছোট সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ দফতরের জেলা আধিকারিকদের হাতে থাকা টাকা দিয়ে দ্রুত রূপায়ণ করা সহজ হবে। কারণ বড় ধরনের সরকারি কাজে অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে অনেক ধরনের প্রশাসনিক জটিলতা থাকে। তাই মহকুমাস্তরে বিভিন্ন দপ্তর তাঁর কোনও পরিকাঠামোর সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার রিপোর্ট পাওয়া মাত্রই কতটা খরচ হবে তা বুঝে কমিটির সামনে ফেলতে পারে।
মহকুমা স্তরে সংশ্লিস্ট আধিকারকই তার এক্তিয়ারের মধ্যে থাকা অর্থের সাহায্যে টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংস্কারের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা যায়। ইতিমধ্যেই রাজ্যের অর্থসচিব প্রভাত মিশ্র এই অ্যাপ পরিচালন ব্যবস্থা নিয়ে স্ট্যার্ন্ডাড অপারেশন প্রসিডিওর(এসওপি) তৈরি করে জেলাগুলিতে পাঠিয়ে দিয়েছেন।
প্রতিটি দফতরে ব্লক, মহকুমা, জেলা ও রাজ্য স্তরে প্রতিটি দফতরের একজন করে নোডাল অফিসার নিয়োগ করার সিদ্ধন্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি সরকারি পরিকাঠামো রক্ষনাবেক্ষণে ব্লক,মহকুমা ও জেলাস্তরে নজরদারির পাশাপাশি সংস্কারে আগ্রহী। কাজ সঠিক পথে হচ্ছে কিনা সংস্কারে কোনও আর্থিক সমস্যা হচ্ছে কিনা কেন্দ্রীয়ভাবে মুখ্যসচিব, অর্থসচিব ও সংশ্লিস্ট দফতরের প্রধানরা কেন্দ্রীয়ভাবে নজরদারি চালাতে পারবে। প্রয়োজন মত উদ্ভুত সমস্যা সমাধান করবে।
সোমরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়