রাজভবনের তরফে জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "নিশীথ প্রামাণিকের উপরে আক্রমণের ঘটনা নিয়ে অভ্যন্তরীণ তদন্ত করতে হবে। এই ধরনের আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ আশাকরি 'নরম রাজ্য' হয়ে যাবে না। আমি রিপোর্ট চেয়েছি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যদি এমন হয়, রাজ্যপাল চুপ করে বসে থাকতে পারে না। আন্দোলন করার অধিকার আছে কিন্তু এইভাবে হিংসা ছড়ানোর অধিকার সমাজ কাউকে দেয়নি। এই ধরনের ঘটনা ঘটায় আমি আশঙ্কিত এবং অবাক।"
advertisement
আরও পড়ুন: প্রার্থীদের ফোন করে কি 'চাকরি বিক্রির টোপ' দিতেন গোপাল! ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে রহস্য
তবে শুধু এখানেই থেমে থাকেননি রাজ্যপাল। বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, "এই রকম সংস্কৃতি পূর্ণ রাজ্যে কী ভাবে এই ধরনের ঘটনা ঘটল, তা ভেবে আমি খুব আশ্চর্য হয়েছি। বিভিন্ন দিক থেকে আমার কাছে ৩৫৫ ধারা জারি করার দাবিও এসেছে। আর যাতে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি না হয়, পশ্চিমবঙ্গ সরকার নিশ্চই সেই বিষয়ে পদক্ষেপ করবে।"
রাজভবন সূত্রে খবর, এই বিষয় নিয়ে ইতিমধ্যেই নবান্নের শীর্ষ মহলের সঙ্গে কথা বলেছেন খোদ রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। রাজ্যের তরফে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কি পদক্ষেপ করা হবে, সেই বিষয়ে রাজ্যের কাছ থেকে রিপোর্ট চাওয়ার পাশাপাশি তিনি তাঁর মতো করে অভ্যন্তরীণ তদন্তও চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ভুল পকেটে ফোন রাখেন? হারাতে পারেন প্রজনন ক্ষমতা, জেনে নিন কোন পকেটে রাখা উচিত ফোন
সবমিলিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর নিশীথ প্রামাণিকের কনভয়ে হামলার ঘটনা যে, মোটেই রাজ্যপাল ভাল চোখে নিচ্ছেন না, তা রাজভবনের বিবৃতিতে একপ্রকার স্পষ্ট।
গত শনিবার বিকেল থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কোচবিহারের দিনহাটা মহকুমা। দিনহাটার বুড়িরহাটে নিজের সংসদীয় এলাকায় দলীয় কর্মসূচিতে বেরিয়ে আক্রান্ত হয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রমাণিকের কনভয়। হামলার পরেই এই ঘটনার জন্য তৃণমূলকে নিশানা করে বিজেপি। রাতে সাহেবগঞ্জ, বামনহাট-সহ বিভিন্ন এলাকায় বিজেপির পার্টি অফিস ও নেতা-কর্মীদের বাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন লাগানোর অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সকাল থেকে থমথমে সাহেবগঞ্জ। গতকালের ঘটনায় আতঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দারা।
অন্যদিকে, শনিবারই বিকেলে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে নিশীথ প্রামাণিকের কনভয়ে উপরে হামলার ঘটনা নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে বৈঠক করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। শুধু তাই নয়, এই ঘটনা নিয়ে বিজেপির তরফেও পাল্টা চাপ তৈরি করা হয় শাসকদলের উপরে। পাশাপাশি, রবিবার রাজ্যজুড়ে থানা ঘেরাও কর্মসূচিও নেওয়া হয় বিজেপির তরফে। এর মধ্যেই রবিবার সন্ধ্যার রাজভবনের এই বিবৃতি যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
সোমরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়